‘খালেদার সাজা হলে বিএনপি ভাগ হয়ে নির্বাচনে আসবে’

বিচারাধীন মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা হলেই তার দল দুই-তিন ভাগ হয়ে আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনিবাহী সদস্য ও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত। যে বিশ্বব্যাংক মিথ্যা অভিযোগ তুলে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করেছিল, সেই বিশ্বব্যাংকই এখন বিভিন্ন সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসছে।’

২০১৮ সালের শেষ দিকে বা ২০১৯ সালের প্রথমে জাতীয় নির্বাচন হবে, এ কথা জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপি যতই ধূম্রজাল সৃষ্টি করার চেষ্টা করুক না কেন, তারা আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে। আগামী নির্বাচনে সংবিধানসম্মতভাবে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রীই নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সেই সরকারে বিএনপির অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। কারণ, তারা সংসদে প্রতিনিধিত্ব করে না।’

সরকার অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে, এ আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তির পথে। এই মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হবে। মওদুদ সাহেব নিশ্চয়ই বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছেন। এজন্য তিনি বলছেন, খালেদা জিয়ার সাজা হলেও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। খালেদা জিয়ার ভাগ্যে কী আছে, আমরা জানি না। তা আদালত নির্ধারণ করবে। তবে এটা নিশ্চিত খালেদা জিয়ার সাজা হলেই বিএনপি দুই-তিন ভাগ হবে এবং সব ভাগই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা আজ বিশ্বসভায় জননন্দিত নেত্রী। কিন্তু আমাদের সমস্ত অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে এক শ্রেণির চাঁদাবাজ, ভূমিদস্যু, চর-নদী-খাল দখলকারী কুলাঙ্গার। এরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমাদের ছায়াতলে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করে। এরাই আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার কেউ সমালোচনা করে না। আমরাই সমালোচিত হই। মানুষ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যেই শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় দেখতে চায়। নেত্রীর প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস শতভাগ আছে। কিন্তু আমাদের অনেকের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের জন্য, আমাদের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের জন্য আমরা আমরা এই আস্থা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছি।’

অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে দোষ-ত্রুটি সংশোধন করার আহ্বান জানিয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আগামীতে আমাদেরকে জনগণের বন্ধু হিসেবে নিরলসভাবে কাজ করে যেতে হবে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার জন্যে আমাদেরকে আগামী নির্বাচনে জয়লাভ করতেই হবে। এছাড়া কোনো বিকল্প পথ নেই।’

সরকারের বিভিন্ন জনমুখী কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিকে ডাটাবেজের আওতায় নিয়ে এসেছি। এখন থেকে যে কেউ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সুবিধাভোগী এবং ডিলারদের তালিকা দেখতে পাবেন। আগামীকাল ১ মার্চ থেকে আবার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। আশা করছি, নতুন তালিকা অনুযায়ী প্রায় শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত এই কর্মসূচি চালু করতে পারব। এই কর্মসূচিকে আমরা বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে চাই। কারণ, এই কর্মসূচি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত এবং অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছে।’

পদ্মা সেতুর অর্থায়ন নিয়ে ষড়যন্ত্র করার জন্য ড. ইউনূসসহ সব ষড়যন্ত্রকারীর মুখোশ উন্মোচন এবং তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে সরকারের প্রতিও আহ্বান জানান খাদ্যমন্ত্রী।

আলোচনায় আরো অংশ নেন- রমেশ চন্দ্র সেন, মইন উদ্দীন খান বাদল, ইয়াসিন আলী, মীর শওকত আলী বাদশা, মনোয়ারা বেগম, আখতার জাহান, রহিমা আখতার, সাবিহা নাহার বেগম প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই