‘খালেদার সাক্ষাৎকার স্টান্টবাজি’

বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোট নেত্রী খালেদা জিয়ার বক্তব্য (ভারতের পত্রিকায় দেওয়ার সাক্ষাৎকার) রাজনৈতিক মুর্খতা ও অজ্ঞতার স্টান্টবাজি ছাড়া কিছু নয় বলে দাবি করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।

দুই বছর আগে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ঢাকা সফরের সময় তার সঙ্গে সাক্ষাৎ না করার কারণ প্রসঙ্গে ভারতের সানডে গার্ডিয়ান পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে খালেদা জিয়ার বক্তব্যের সমালোচনা করে এমন মন্তব্য করেছেন তারা।

ক্ষমতাসীন দলের এক নেতা বলেন, ‘একজন রাজনৈতিক নেতা যখন রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং সাংগঠনিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়েন, তখন এ ধরনের মন্তব্য করতে পারেন। একজন সুস্থ রাজনৈতিক নেতা এরকম মন্তব্য করতে পারেন না। সে সময় হরতাল ডেকেছিল তাদেরই জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলাম।আর তিনি কি না বলছেন, আমাকে হত্যা করে এর দায় জামায়াতের ওপর চাপানোর পরিকল্পনা হয়েছিল।’

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, এই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিকভাবে দেউয়ালিয়া হয়ে ভারতের তোষামোদির পাশাপাশি রাজনৈতিক স্টান্টবাজি করতে এ ধরনের কথা বলছেনে। এতে নিজ দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটু চাঙ্গা ভাব আসলেও দেশের মানুষ আর খালেদা জিয়ার কোনো কথায় বিশ্বাস করে না।’

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ কারওয়ান বাজারে টিসিবি কার্যালয়ে বলেন, ‘খালেদা জিয়া ভারতীয় পত্রিকায় যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, তা তার রাজনৈতিক অজ্ঞতা এবং মুর্খতার প্রমাণ। তিনি একজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তার এ ধরনের কথাবার্তা রাজনৈতিক স্টান্টবাজি ছাড়া আর কিছু নয়।’

‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকালে তার সঙ্গে খালেদা জিয়ার সৌজন্য সাক্ষাৎ ঠেকাতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা করা হয়েছিল, বিএনপি নেত্রীর এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে হানিফ আরো বলেন, ‘তিনি তো দাবি করেন, তিনি তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। একজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার জানা উচিত ছিল, নরেন্দ্র মোদি কার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন আর কার সঙ্গে করবেন না, তা আওয়ামী লীগ সরকার ঠিক করে দেবে না। সেটা তাদের ইচ্ছা।’

আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব উল আলম হানিফের বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

ভারতের দ্য সানডে গার্ডিয়ান পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক হলেন বিজেপি মুখপাত্র এম জে আকবর। পত্রিকাটির সাক্ষাৎকারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘প্রাণনাশের হুমকির কারণেই ২০১৩ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে সাক্ষাৎ বাতিল করেছিলাম। যদি আমার কিছু হতো (বৈঠকে যাওয়ার পথে), আমাদের বিরোধীরা এজন্য জামায়াতে ইসলামীকে দায়ী করার পরিকল্পনা করেছিল।

শনিবার ভারতের প্রভাবশালী ইংরেজী সানডে গার্ডিয়ান খালেদা জিয়ার এই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করে। সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে তার সঙ্গে হওয়া বৈঠকের বিষয়েও খোলামেলা কথা বলেন খালেদা জিয়া।গত ৭ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে খালেদা জিয়ার এই সাক্ষাৎ হয়।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, মোদির সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান সাক্ষাতে খালেদা জিয়া নিজের অভিযোগে নিজেই ধরা খেয়েছেন। মোদি যে তিনটি প্রশ্ন করেছিলেন, খালেদা জিয়া তার একটিরও জবাব দিতে পারেননি। তাই তিনি বিজেপির মুখপাত্রের পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিয়ে রাজনৈতিক স্টান্টবাজি শুরু করছেন।



মন্তব্য চালু নেই