খাদিজার ওপর হামলাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ

সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক (পাস) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী খাদিজা বেগমের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করেন।

আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে কয়েক শ ছাত্রী কলেজের সামনের জিন্দাবাজার-চৌহাট্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর ছাত্রীদের আন্দোলনে কলেজের প্রাক্তন ছাত্রীরাও এসে যোগ দেন। বেলা পৌনে ১১টার শিক্ষকদের অনুরোধে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার আবারও সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধনের ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা খাদিজার ওপর হামলাকারী বদরুলের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ‘ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই’ বলে স্লোগান দেন। বিক্ষোভ চলাকালে ছাত্রীদের হাতে ‘অন্যায় যত দিন, প্রতিবাদ তত দিন’, ‘শিক্ষাঙ্গনের ভেতর আক্রমণ, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘নারী নির্যাতন যেখানে, লড়াই হবে সেখানে’, ‘তনু খাদিজা আফসানা, নিরাপত্তার নমুনা’সহ নানা ধরনের স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড ছিল।

অবরোধ চলাকালে সড়কের দুই পাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে শিক্ষকদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রীরা অবরোধ তুলে নেন। বেলা পৌনে ১১টার দিকে ছাত্রীরা কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সেখানে কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ফজিলাতুন্নেসা চার দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হচ্ছে: বদরুলের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি নিশ্চিত করা, খাদিজার মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো, কোনো আইনজীবী যেন বদরুলের পক্ষে অবস্থান না নেন এবং পরীক্ষা চলাকালে সেন্টারগুলোতে সংশ্লিষ্ট কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধি পাঠানো।

সমাবেশ থেকে আগামীকাল সকাল ১০টায় আবারও সড়ক অবরোধ এবং কলেজের প্রধান ফটকের বিপরীতে নগরের চৌহাট্টা এলাকার সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রীদের মধ্যে অন্যতম ফজিলাতুন্নেসা বলেন, ‘ছাত্রীদের ডাকা এই কর্মসূচিতে সমাজের সব পর্যায়ের মানুষ, পেশাজীবী ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি আমরা কামনা করছি।’

সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. নূরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রীদের আন্দোলনটি পুরোপুরি যৌক্তিক। এ ধরনের ঘৃণ্য ও পৈশাচিক ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরাও বদরুলের সর্বোচ্চ শাস্তি চাইছি। আমরা দ্রুত এই বিচার কার্যকর দেখতে চাই।’

গত সোমবার বিকেলে সিলেট এমসি কলেজের পরীক্ষা হল থেকে বের হওয়ার পথে চাপাতি দিয়ে খাদিজাকে কুপিয়ে আহত করেন ছাত্রলীগ নেতা বদরুল। খাদিজার সহপাঠীসহ স্থানীয় জনতা ধাওয়া করে বদরুলকে ধরে পুলিশে দেন। তাঁর বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকে। বদরুল শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক। খদিজাকে প্রথমে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে এক দফা অস্ত্রোপচার শেষে ঢাকায় পাঠানো হয়। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে। তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন।



মন্তব্য চালু নেই