ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে মা ও মাটির টানে ঘরে ফেরা

বিধান মুখার্জী, গণ বিশববিদ্যালয়; ক্যাম্পাস মানেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভিড় করা একঝাক তারুন্য আর সম্ভাবনা।উচ্চশিক্ষা অর্জনের তাগিদে আর দেশের আদর্শ নাগরিক হয়ে ওঠার অভিপ্রায়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিজের পরিবার পরিজন ছেড়ে এসে মিশে গেছে নাগরিক কোলাহলে।তাই ক্যাম্পাসের ছুটিতে মা ও মাটির টানে ঘরে ফেরা শিক্ষার্থীদের কাছে এক অন্যরকম উৎসবের আগমন।

ঈদুল আযহা উপলক্ষে ছুটি হয়ে গেছে ক্যাম্পাস।শিক্ষার্থীরা যে যার মত তড়িঘড়ি করে ব্যাগ গুছিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে নিজ নিজ গন্তব্যের পথে।এমনই এক শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে ৩য় বর্ষে অধ্যয়নরত রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ ঈদ মানে শুধু ঈদের দিনটিই নয়।ঈদ প্রস্তুতি হিসাবে বাড়ি ফেরা, কোরবানির ঈদ তাই গ্রামে পশুর হাঁটে গরু কিনতে যাওয়া, গ্রামের বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়া আর মা-বাবার সাথে মিলে এই ছুটি উপভোগ করা এর সবটুকু মিলেই ঈদ।আর তাই আমার কাছে ঈদ শুরু হয়ে গেছে’।

শুধু রফিকুল ইসলাম নন, তার মত অন্যান্য শিক্ষার্থীদের কাছেও ঈদ শুরু হয়ে গেছে এবং তার সত্যতা বোঝা যায় তাদের ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকেই। গণ বিশববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান রূহানী তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন ‘মধ্যরাতে বাড়ির পথে’।টিকিট স্বল্পতার কারনে পেয়েছেন মধ্যরাতের টিকিট, কিন্তু এই কষ্টকে মলিন করে দিয়েছে বাড়ি ফেরার আনন্দ।

তানভীর মাহমুদ ফয়সাল পড়েন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে।ফেসবুকে লিখেছেন ‘ফিরছি।আপন ঠিকানায়’।ঈদ পূর্ববর্তী অনুভূতি সম্পর্কে জানতে চাইলে জানালেন একদম ভিন্ন কথা। একমুখ হেসে বললেন, ঈদ মানে আমার কাছে পকেট ভরা ঈদ সালামী আর সালামী চেয়ে দুষ্টুমি।ছোট থাকতে সালামী চেয়ে চেয়ে সবাইকে অস্থির করে দিয়েছি।আর এখন অপেক্ষায় আছি ক্যাম্পাসে ফিরে বড় ভাইয়া আর আপুদের থেকে সালামী আদায় করতে।আসলে ঈদ মানে খুশি, আর এই খুশি ছড়িয়ে পরুক সবার মাঝে।

ছুটি হয়ে গেছে ক্যাম্পাস তাই শিক্ষার্থীদের আড্ডাও কমে গেছে।কিন্তু গণবি ক্যাম্পাসের বকুলতলায় দেখা মিলল একঝাক তরুন তরুণীর ব্যতিক্রমী আড্ডা।সময়ের এই বিপরীত চিত্রের কারণ জানতে এগিয়ে গেলে জানা গেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বৃন্ত’ থেকে পথশিশুদের মাঝে ঈদের খুশি ছড়িয়ে দিতে চলছে আলোচনা।নিজেদের খুশি এই শিশুদের সাথে ভাগ করে নিতে তাঁরা বদ্ধপরিকর।সংগঠনটির সদস্য আয়েশা সিদ্দিকা মৌসুমি জানালেন পথশিশুদের জন্য এই কার্যক্রম শেষ করেই চড়ে বসবেন গাড়িতে।গ্রামের বাড়ি মিস করছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বললেন, ‘মা কে খুব মিস করছি।কিন্তু এই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য কিছু করেছি শুনলে মা ভীষণ খুশি হবেন’।তার চোখে ঝলমল করছে আনন্দ, যেন বলতে চাইছেন ‘মা, আমার ছুটি হয়েছে মা,এখন আমি বাড়ি আসছি’।



মন্তব্য চালু নেই