কোকোর বিয়েতে দেখা হয়েছিল, মৃত্যুতে হবে কি?

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ৯০ পরবর্তী দেশের কোনো সঙ্কটেই এই দুই নেত্রীকে এক টেবিলে বসতে দেখা যায়নি। তবে খালেদা জিয়ার সদ্য প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর বিয়ের অনুষ্ঠানে এই দুই নেত্রীর দেখা হয়েছিল। কোকোর মৃত্যুও তাদের দুজনের দেখা হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। কিন্তু সে সম্ভাবনা এখন অনেকটা ফিকে হয়ে আসছে। শেষ পর্যন্ত তাদের দেখা হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যা থেকেই খবর ছড়িয়ে পড়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমবেদনা জানাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে যাবেন। কিন্তু রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী সামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস গণমাধ্যমে বলেন, কোকোর শোকে খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই তাকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে। এতে তিনি ঘুমিয়ে পড়েছেন। তিনি ঘুম থেকে উঠে সুস্থবোধ করলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে সাক্ষাতের উদ্যোগ নিব।

এদিকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রধানমন্ত্রী গুলশান কার্যালয়ের সামনে যান। তিনি গাড়ি থেকে নেমে কার্যালয়ের সামনে কয়েক মিনিট অপেক্ষা করলেও দরজা খোলা হয়নি। এরপর তিনি ফিরে যান।

এরপর প্রধানমন্ত্রী এলেও দরজা না খোলা রাজনৈতিক শিষ্টাচার নয় বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। তিনি এ সময় বলেন, এখানে কোনো রাজনীতি ছিল না। বিষয়টি ছিল সম্পূর্ণ মানবিক।

প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে সামনে কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলেন। পাশাপাশি বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো নেতা অভ্যর্থনাও জানাননি বলে দাবি করেন ইকবাল সোবহান।

এর পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট সামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস রাত সাড়ে ৯টার দিকে গণমাধ্যমে বলেছেন, খালেদা জিয়ার এই শোককে নিয়ে যেন কোনো নোংরা রাজনীতি না হয়, সে জন্য আমরা সকলের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।

গুলশান কার্যালয়ের সামনে তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এপিএস সাইফুজ্জামান শিখর আমাকে ফোনে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে শোক প্রকাশ করতে চান। আমি তখন বলেছি, ম্যাডাম ঘুমিয়েছেন। ঘুম থেকে উঠলে তার সঙ্গে কথা বলে আজ রাতে হোক আর কাল হোক আমি জানাবো। কিন্তু তারপরও প্রধানমন্ত্রীর আসার খবর শুনে সঙ্গে সঙ্গে আমি দৌড়ে গিয়েছিলাম শোক বই নিয়ে। কিন্তু তার আগেই তিনি চলে যান। অথচ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে আমরা গেট খুলিনি। এটা ঠিক নয়।

এর আগে ১৯৯৭ সালে তৎকালীন বিরোধী দলের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছোটো ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর বিয়ের শুভ মুহূর্তে খালেদার বাসায় গিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার সেই কোকোর মৃত্যুতেই খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । কিন্তু ঘুমের ইনজেকশন নিয়ে খালেদা জিয়া ঘুমিয়ে থাকায় প্রধানমন্ত্রী ৫ মিনিট কার্যালয়র গেইটের দাঁড়িয়ে থেকে আবার ফিরে যান গণভবনে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে গুলশানে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে এসেছিলেন। এসময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা.দীপু মনি, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী ।

এরআগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়া ও সেনাকুঞ্জে এই দুই নেত্রীর দেখা হলেও কোন কথা হতো না। তবে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর তৎকালীন সেনা শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পতনের পর দুই নেত্রী এক সোফায় বসেছিলেন। দ্য রিপোর্ট



মন্তব্য চালু নেই