কেন হয় কুষ্ঠ রোগ ?

কুষ্ঠ একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ। মাইকোব্যাকটেরিয়াম লেপ্রি (Mycobacterium leprae ) নামক জীবাণুর সংক্রমণের কারণে কুষ্ঠ রোগ হয়। সাধারণত কুষ্ঠ রোগ মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডের বাইরের দিকের স্নায়ু, ত্বক, অণ্ডকোষ, চোখ এবং নাকের মিউকাস মেমব্রেনের ক্ষতি করে। প্রচলিত কুসংস্কারের জন্য কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি ও তার পরিবারকে সামাজিক-মানসিক নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। অথচ রোগটি খুব বেশি সংক্রমিত হয় না। কুষ্ঠ রোগের কারণে মৃত্যুর হার খুবই কম।

আক্রান্ত ব্যক্তির সর্দি কাশির মাধ্যমে কুষ্ঠ রোগ ছড়াতে পারে। জীবাণুর মাধ্যমে সংক্রমিত হলেও ব্যাপক পরিধিতে এর বিস্তার ঘটে না। সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও দীর্ঘস্থায়ী মেলামেশার ফলে কুষ্ঠ রোগ হতে পারে। ক্ষণস্থায়ী মেলামেশার কারণে ছড়ানোর আশঙ্কা কম। কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জীন অনেক সময় সংক্রমণের জন্য দায়ি থাকে। ফলে জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হলে তাদের কুষ্ঠ রোগ হবার সম্ভাবনা থাকে।

সংক্রমিত হওয়ার অন্তত এক বছর আগ পর্যন্ত কোন লক্ষণ দেখা যায় না। সাধারণত ৫ থেকে ৭ বছর পর কুষ্ঠ রোগের উপসর্গ দেখা যায়। উপসর্গগুলো ধীরে ধীরে বাড়ে। উপসর্গ হিসেবে ‘টিউবারকিউলয়েড’ কুষ্ঠ ত্বকে লালচে দাগের পাশাপাশি কিছু কিছু জায়গায় মসৃণ সাদাটে দাগ দেখা যায়। আক্রান্ত স্থান অসাড় হয়ে যায়। ‘লেপরোমেটাস’ কুষ্ঠ ত্বকে অনেক ক্ষুদ্র পিণ্ড অথবা অনেকখানি স্থান জুড়ে বিভিন্ন আকারের লালচে দাগ দেখা যায়। শরীরের বেশিরভাগ স্থান অসাড় হয়ে যায় এবং মাংসপেশী দূর্বল হয়ে পড়ে। ত্বকের বেশির এবং শরীরের বেশিরভাগ অঙ্গ যেমন- কিডনী, নাক, অণ্ডকোষ আক্রান্ত হতে পারে। ‘বর্ডারলাইন’ কুষ্ঠের ক্ষেত্রে ‘টিউবারকিউলয়েড’ কুষ্ঠ এবং ‘লেপ্রোমেটাস’ কুষ্ঠের বৈশিষ্ট্য গুলো বিদ্যমান থাকে।

স্পর্শ, ব্যথা ও তাপমাত্রার অনুভূতি হ্রাস পাওয়ায় পুড়ে গেলে বা কেটে গেলে কুষ্ঠ রোগীর অনুভূতি কাজ করে না। এছাড়া ত্বকের যেসব স্থান সংক্রমিত হয় সেসব জায়গায় পিণ্ড দেখা যায় বা ফুলে যায় ।

সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করানো হলে এটি অনেকটা ‘টিউবারকিউলয়েড’ কুষ্ঠের মত বৈশিষ্ট্য ধারণ করে। আরও খারাপ হিসেবে ‘লেপ্রোমেটাস’ কুষ্ঠের মতো হতে পারে।



মন্তব্য চালু নেই