কেন মুসলিমদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে অনলাইন ডেটিং?

বিগত এক দশকের মাঝে বিবাহযোগ্য নারীপুরুষের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অনলাইন ডেটিং। মূলত ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার মানুষেরা এতে বেশি আগ্রহী হলেও সম্প্রতি তরুন মুসলিমদের মাঝেও দেখা যাচ্ছে এর জনপ্রিয়তা।

মুসলিম সমাজে অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ ব্যাপারটা বেশ প্রচলিত। কিন্তু অনেকেই এমন পারিবারিক চাপের মুখে পড়তে বিব্রত বোধ করেন, নিজেই খুঁজে নিতে চান নিজের জীবনসঙ্গী। এ থেকেই জন্ম নেয় মুসলিম ম্যাচমেকিং ওয়েবসাইটগুলো। এসব ওয়েবসাইট ব্যবহার করে তারা খুঁজে নিতে পারেন জীবনসঙ্গী এমন দেশেও যে দেশে মুসলিম ধর্মাবলম্বী খুব বেশি নেই।

এমন একটি ওয়েবসাইট হলো SingleMuslim.com, এর আছে মিলিয়নেরও বেশি মেম্বার। তবে একে “মুসলিম অনলাইন ডেটিং” বলতে গেলে ভুল হবে। কারণ শুধু ক্ষণস্থায়ী প্রেম নয়, জীবনসঙ্গী হিসেবে গাঁটছড়া বাঁধার জন্য সঙ্গী খুঁজতেই সাহায্য করে এই ওয়েবসাইট। এর কারণ হিসেবে এই ওয়েবসাইটের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ইসলামে বলা হয় বিবাহ হলো ধর্মের অর্ধাংশ। এ কারণে একে হালকাভাবে নেওয়ার কোনো অবকাশ নেই।

এ ছাড়াও আরও অনেক ওয়েবসাইট আছে, যেমন Muslimmatrimony.com। তারা শুধু শিয়া-সুন্নি ভেদে সঙ্গী নির্বাচনই নয় বরং বিশেষ কিছু বিষয়ে বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করেও সঙ্গী নির্বাচনের সুযোগ করে দেয়। এছারা মাতৃভাষার ব্যাপারটা তো আছেই।

অনেক মুসলিমরাই নিজেদের জীবনসঙ্গী বেছে নেন এই উপায়ে। তাদের মতে, মুসলিমরা পাশ্চাত্যের আর সবার মত ক্লাবিং করতে যায় না সচরাচর। এ কারণে এই উপায়ে ম্যাচমেকিং করাটাও তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। মুহাম্মদ নামের এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্যক্তি এবং তার ব্রিটিশ স্ত্রী ক্যাথেরিন ২০১০ সালে প্রথম পরিচিত হন এমনই এক ওয়েবসাইটের কল্যাণে।

কয়েক মাসের মাঝেই তারা বিয়ে করে ফেলেন। এমন ভিন্ন ভিন্ন ধরণের মানুষের মাঝে মিল হওয়াটাকেই প্রচার করে থাকে এসব ওয়েবসাইট। কারণ ইসলাম কোনো নির্দিষ্ট এলাকার মানুষের মাঝে আবদ্ধ নয়, বরং তা সার্বজনীন।

তবে অনেকেই অনলাইন ডেটিংকে বিয়ের জন্য সুবিধাজনক হিসেবে দেখেন না। কারণ অনলাইনে যে কেউ নিজের ব্যাপারে যে কোনো মিথ্যা বলে যেতে পারে। কিছু কিছু দেশে এভাবে অনলাইন ডেটিং এর মাধ্যমে সঙ্গী খুঁজে নেবার ব্যাপারটিকে ভালো চোখে দেখা হয় না, বরং পরিবারের মাধ্যমে অ্যারেঞ্জড বিয়েকেই সমর্থন করা হয়।

মূল: Lydia Green, BBC Arabic



মন্তব্য চালু নেই