‘কুলাঙ্গারদের জন্য শুধু কিছু সময়ের অপেক্ষা’

চট্টগ্রামে সর্বত্রই জঙ্গি আস্তানা খুঁজে তাদের উত্থান ঠেকানোর নেপথ্যে নায়ক ছিলেন পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার। সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা আর সাহসিকতায় শুধু চট্টগ্রাম নয়, পুরো পুলিশ বাহিনীতেই এক অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব তিনি। সেই বাবুল আক্তারের স্ত্রীকে হত্যা করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন পুলিশ সদস্যরাও।

বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশের এএসপি জাহেদ পারভেজ চৌধুরী তাদেরই একজন। নিজের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “বাবুল আকতার স্যার!

বাংলাদেশ পুলিশের হাতেগোনা যে কয়জন অফিসার “লিভিং লিজেন্ড” হিসেবে গণ্য হন তাদের মধ্যে অন্যতম। তার জনসম্পৃক্ততা যেকোনো রাজনীতিবিদকেও হার মানাবে, অপরাধ উৎঘাঠনে তার কৌশল এবং দুঃসাহসিক ও চরম ঝুঁকিপূর্ণ সব অপারেশনের গল্প শুনলে মনে হবে দূর্দান্ত এক ক্লাসিক থ্রীলার!! যার সাথে কিছুক্ষণ গল্প করলে প্রায় সবারই মনে হবে “ইস্ যদি পুলিশ হতে পারতাম” !! যে এলাকাতে কাজ করতেন সেখানে তিনিই ছিলেন সবার আস্থার প্রতীক, এমন এক ব্যক্তি যার উপর নিজের নিরাপত্তার জন্য নির্ভর করা যায়।

অত্যন্ত সদালাপী, সৎ ও সকলের আস্থাভাজন এই স্যারের সহধর্মিণীকে আজ কিছু দুর্বৃত্ত নির্মমভাবে খুন করেছে, আল্লাহর রহমতে বেঁচে গেছে বাচ্চাটি। এই অফিসার তার বাচ্চার স্কুলে লিফট দেওয়ার জন্যও কখনো তার সরকারি গাড়ি দিতেন না, নিয়ম অনুযায়ী বাসায় রানার বরাদ্দ থাকলেও তাদের কখনোই পরিবারের ব্যাক্তিগত কাজে ব্যাবহার করতেন না !!

নিজে চরম ঝুকিপূর্ণ পেশায় থাকার পরেও স্ত্রী-পুত্রকে “অনিয়ম” হবে ভেবে নিজের জন্য বরাদ্দ করা সরকারি সুযোগ সুবিধা ব্যাবহার করতে দিতেন না, তার পেশাদারিত্ব ও মানসিকতা কতটা উচু মাপের এটা হয়তো এ সমাজের বেশিরভাগ মানুষ বুঝতেই পারবে না।

মন্ত্রণালয়ের যে সকল আমলা পুলিশের ঝুঁকি ভাতার ফাইলে আপত্তি করে বলেন পুলিশের চাকরিতে ঝুঁকি নেই, তাদের মুখে থুথু দেই। যে সকল আমলারা পুলিশের বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণের বাজেট বরাদ্দে অসহযোগিতা করে তাদের মুখে কষে থাপ্পড় লাগাই!! চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের আবাসন সংকট দীর্ঘদিনের। সরকারি বাসা বরাদ্দ না পেয়ে থাকতেন মেহেদীবাগ আবাসিক এলাকার ভাড়া বাসায়। আর এ সুযোগই নিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

আর ঐ সকল কুলাঙ্গারদের জন্য শুধু কিছু সময়ের অপেক্ষা, হোক সে জঙ্গি বা ভাড়াঠে খুনি, পরিবার হারানোর বেদনার চেয়েও বেশকিছু অপেক্ষা করছে তোদের জন্য।”

পুলিশের চাকরিতে ঝুঁকি এবং বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ বিষয়ে এএসপি জাহেদ পারভেজ চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, “এটা আসলে ভয়ঙ্কক বিষয়, তিনি (বাবুল আক্তার) এসপিতে যোগদানের আগে এডিসি ছিলেন। একজন এডিসির সরকারি কোয়াটার নেই।”

শুধু চট্টগ্রামে নয় ঢাকাতেও পুলিশের সরকারি কোয়াটারের অভাব বলে জানান তিনি।



মন্তব্য চালু নেই