‘কারাগারের ভেতর টাকা থাকলে সবই সম্ভব’

বাংলাদেশে কারাগারকে মূলত সংশোধনাগার ও পুনর্বাসন কেন্দ্র হিসেবেই বিবেচনা করা হলেও, কারাগারের ভেতর নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ শোনা যায় নিয়মিতভাবেই।

সেই সাথে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বহুগুণ বেশি কয়েদি থাকায় কারাগারগুলোতে মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে ।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে দেখা যায়, কারাবন্দী স্বজনদের সাথে দেখা করতে আসা মানুষদের ভীড়।

সেখানেই একজন বন্দীর বাবা-মা জানান, ”ছেলে যেন একটু ভালোভাবে ঘুমানোর জায়গা পায় সেজন্য পুরনো কয়েদিদের ৪০০০ টাকা দিতে হয়েছে। এখন আরও টাকা চাইছে।”

কাদের মাধ্যমে সেই টাকা ভেতরে পৌঁছানো হয়েছে জানতে চাইলে তারা পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে পারেননি।

এছাড়া স্বজনদের সাথে দেখা করতের বিভিন্ন অংকে টাকা দিতে হয় বলে জানাচ্ছিলেন জেলগেটের সামনে থাকা অনেক স্বজন।

সিরাজগঞ্জে সদ্য কারামুক্ত একজন নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছিলেন, ”কারাগারের ভেতর টাকা থাকলে সবই সম্ভব। আমাকে যখন প্রথম জেলখানার ভেতরে নেয়া হলো তখন জেলার সাহেবরাই প্রশ্ন করলেন, সাধারণ ওয়ার্ডে থাকার মত অবস্থা নেই।”
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারকে সরিয়ে নেয়া হবে কেরানিগঞ্জে।

”আমি মেডিকেল ওয়ার্ডে থাকবো কি-না জানতে চান। সেজন্য আমাকে ৪৫০০ টাকা দিতে হয়।”

”টাকা দিলে আপনি জেলখানায় ভিআইপি সুবিধা পাবেন।”

নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক এই ব্যক্তি জানান সেখানে ধারণ ক্ষমতার প্রায় তিনগুণ বেশি কয়েদি থাকে। দুশো জনের জন্য রয়েছে একটি মাত্র টয়লেট ।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে দু’বছর বন্দী ছিলেন মিরপুরের মোঃ ফারুক। তিনি বলেন, ”জেলখানায় খাওয়া, ঘুম, গোসল সবই কষ্ট।”

”একসঙ্গে ২০০-৩০০ লোক হাউজে গোসল করতে গেলে মারামারি লেগে যেত। আবার দোষ করে এক প্যাকেট সিগারেট দিলেই মাফ পাওয়া যেত।”

সাবেক এই কয়েদী আরও জানান, গাঁজা, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্যও কারাগারের ভেতরে যায় অভিনব কায়দায় এবং তারপর ভেতরেই চলে কেনাবেচা।

কয়েদিদের সাথে দেখা করতে আসা আত্মীয়-পরিজনদের মাধ্যমে এসব দ্রব্য চলে যায় ভেতরে।

মাত্র ৫০০ টাকা দিলেই কোর্ট পুলিশের সহায়তা পাওয়া যায়।



মন্তব্য চালু নেই