কাঁদছেন বাবুল, কাঁদছে বাংলাদেশ

পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগ। তার কান্নার সঙ্গে কাঁদছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সদস্যরা।

পুলিশ সুপার (এসপি) পদে রোববার সকালেই বাবুল আক্তারের ঢাকা পুলিশ সদর দপ্তরে যোগদান করার কথা ছিল। কিন্তু তার স্ত্রী দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হওয়ার পর রোববার সকালে ঢাকা থেকে পুলিশের হেলিকপ্টারে চট্টগ্রামে পাঠানো হয় বাবুল আক্তারকে। বেলা ১১টার দিকে বাবুল আক্তারকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি চট্টগ্রাম দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে অবতরণ করে। পরে সেখান থেকে গাড়িতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পৌঁছান তিনি। এর পর থেকেই তার কান্না আর আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণ।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জড়িয়ে ধরে তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলেও কোনো সান্ত্বনাই যেন বাঁধ মানছিল না।

বাবুল আক্তারকে সান্ত্বনা দিতে চমেক হাসপাতালে ছিলেন নগর পুলিশের কমিশনারসহ সবগুলো বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার, উপকমিশনার এবং বিভিন্ন থানার অফিসার ইনচার্জরা। বাবুল আক্তারের আহাজারিতে সব পুলিশ কর্মকর্তা এবং পুলিশ সদস্যদের চোখ বেয়ে পানি ঝরতে দেখা গেছে। বাবুল আক্তার চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের কাছেও অনেক প্রিয়ভাজন এবং তাদের ঘনিষ্ঠ একজন পুলিশ কর্মকর্তা।

সাংবাদিকদের জড়িয়ে ধরেও বাবুল আক্তার বিলাপ করে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন বারবার। আর মায়ের জন্য অবিরাম কেঁদেই চলেছে তার দুই শিশুসন্তান মাহির ও তাবাসসুম। দুই শিশু আর তাদের বাবার কান্না দেখে উপস্থিত কেউ কান্না থামিয়ে রাখতে পারেননি।

Babul1465117134

বাবুল আক্তারের প্রতিবেশী সহকর্মী পুলিশ কর্মকর্তা বায়েজিদ বোস্তামী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘আমরা স্যারকে সান্ত্বনা দেওয়ার কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই সহ্য করা যায় না। স্যার পুরোপুরি ভেঙে পড়েছেন। দুই সন্তানকে জড়িয়ে ধরে তিনি আহাজারি করে চলেছেন।’

যে পুলিশ কর্মকর্তার ভয়ে সমগ্র চট্টগ্রামের জঙ্গি সন্ত্রাসীরা আতঙ্কে থাকত প্রতি মুহূর্ত, সেই পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীকে এমন নৃশংসভাবে হত্যা পুরো পুলিশ বিভাগকেই ভাবিয়ে তুলেছে। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ ইতিমধ্যে অভিযান শুরু করেছে বলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।



মন্তব্য চালু নেই