কলেজ ছাত্রীরা যেভাবে জড়িয়ে পড়ছে দেহ ব্যবসায়, অবশেষে মুখ খুললেন রুপালি

নাম রুপালি (ছদ্মনাম)। ২০১৪ সাল। লেখাপড়া করেন রাজধানীর একটি কলেজে। অনেক আশা আর স্বপ্ন নিয়ে লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে বাবা-মা পরিবার পরিজন ছেড়ে গ্রাম থেকে চলে আসে ঢাকায়।রাজধানীর আজিমপুরে একটি বাসায় জায়গা হয় রুপালির। অজানা জায়গাতে বেশ মানিয়ে নিতে কষ্ট হয় তার। তারপরও পার হতে থাকে দিন।

নিজের কলেজ আর রুম ছাড়া কিছুই চিনে উঠতে পারেনি রুপালি। দিন আসে দিন যায় রুপালি আস্তে আস্তে পরিচিত হয় অনেকের সাথে। এই পরিচয় হওয়ায় হয়তো কাল হয় রুপালির জীবনে।

রুপালির পরিচয় হয় এক আন্টির সাথে (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক)। আন্টি রুপালির ঢাকার প্রতিবেশি। আন্টির স্বামী অনেক আগেই মারা গেছেন। আন্টির আপন বলতে একটা মেয়ে, বিয়ে হয়েছে কয়েক বছর আগে। এখন শুধু বাসায় আন্টি নিজেই থাকেন। কাজকর্ম বলতে তেমন কিছুই না শুধু এই মেয়েদের রুম ঠিক করে দেওয়া আর তাদের বাজার করে দেওয়া। এ থেকে যা পায় তা দিয়ে চলে যায় আন্টির সংসার।

কিন্তু আন্টির এই পেশার বাইরে আরেকটা পেশা রয়েছে, ‘কলেজ পড়ুয়া মেয়েদের টাকার লোভ দেখিয়ে খদ্দেরের কাছে পাঠানো’। ওখান থেকে বেশ মোটা কমিশন পান তিনি। এক ছাত্রী যদি রাতে খদ্দেরের সাথে থাকে তাহলে ছাত্রী পায় ১ হাজার টাকা আর আন্টি পায় ৫শ টাকা। এই ভাবেই চলে আসছে আন্টির পুঁজিবিহীণ ব্যবসা।

রুপালিও আন্টির সহজ সরল মন গলানো ফাঁদে পা দেয়। আর নিজের সর্বনাশ ডেকে আনে। পাঠক লেখাটা সম্পূর্ণ গোপনীয়তার সাথে প্রকাশ করা হচ্ছে। নাম ও পরিচয় সব কিছুই গোপন রাখা হচ্ছে। হাজারও মেয়ে এই সরলতার ফাঁদে পা দিয়ে নিজের জীবন নষ্ট করছে। তাদের সতর্ক করার উদ্দেশ্যে প্রকাশ করা হচ্ছে খবরটি।

রুপালি রিপোর্টারকে শর্তশাপেক্ষে এই নির্মম লালসার শিকার হওয়ার কথা জানাই।

রুপালির ভাষ্যমতে, ‘আমি যখন ২০১৪ সালে ঢাকা আসি আমি কিছুই চিনতাম না। আমাকে একটা রুম ঠিক করে দেয় আমার পরিচিত এক বড় আপা। আমি সেখানে উঠি। কয়েক মাস যাওয়ার পর আমার সাথে এক আন্টির পরিচয় হয়। আমি জানতাম না আন্টি মেয়েদের নিয়ে ব্যবসা করে। একদিন আমার কিছু টাকা দরকার হয়। বাড়ি থেকে পাঠাতে দেরি করে বাবা। আমি আন্টিকে বলি তখন আন্টি আমাকে বলে একজনের কাছে গেলে তোমাকে টাকা দিতে পারে। আমি জানতে চাইলে আমাকে বলে তুমি কি রাতে থাকতে পারবে। আমি জানতে চাইলে সে বলে রাতে একজনের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে হবে। আমি রাজি না হয়ে চলে আসি।

কিন্তু আমার টাকাটা কলেজের জন্য জরুরী হয়ে উঠে। আমি চিন্তায় পড়ে যায় কি করবো। কয়েকদিন যাওয়ার পর আন্টি আমাকে ডাক দেয় এবং বলে অনেক মেয়েরা এমন করে আর এই কথা কেউ জানবে না। বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে কেন বাবাকে কষ্ট দিবা তার থেকে যদি এখান থেকে লেখাপড়া খরচ হয়ে যায় সেটাই তো ভালো। আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই যেন আন্টির কথাতে সাই দিয়ে ফেলি।

প্রথম সেই রাতে আমার রুমে একজনকে আন্টি পাঠায় আমার অনেক ভয় করছিলো। তার পর আমি আর কিছু বলতে পারবো না। এরপর কিছুদিন যাওয়ার পর আমাকে আবার প্রস্তাব দেয় আন্টি। আমি আর এমন কাজ করবো না বলে জানাই। কিন্তু আন্টি আমাকে ব্লাক মেইল করে। বলে তার কথার বাইরে গেলে সে বলে দিবে। এমনকি আমার কলেজে বলে দিবে। আমি জিম্মি হয়ে যাই এবং তার কথায় বাধ্য হয়ে পড়ি।

এই ভাবে মাঝে মধ্যেই খদ্দের নিয়ে আসে আমার কাছে। আমার আর ভালো লাগে না এই জীবন। আমার পড়াশোনাও হয়না ঠিক মতো। এখন ভাবছি লেখাপড়া না করে কি বাড়ি ফিরে যাবো নাকি এই যন্ত্রনা নিয়ে বেঁচে থাকবো?



মন্তব্য চালু নেই