করাচি বিমানবন্দরে সন্ত্রাসী হামলা, নিহত ২৩

করাচি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রোববার রাতে ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত সন্ত্রারীরা হামলা চালায়। এ সময় পাক নিরাপত্তা বাহিনী এবং সন্ত্রাসীদের মধ্যকার সংঘর্ষে ১০ হামলাকারীসহ কমপক্ষে ২৩ জন নিহত হয়েছে। আহত হন আরো ১৬ জন।এই হামলায় তিনটি বিমানও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
তাৎক্ষণিকভাবে কোনো গোষ্ঠি এই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেনি।

পাক নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এবং ডন পত্রিকা এ খবর জানিয়েছে।

রোববার গভীর রাতে করাচি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পুরনো টার্মিনালে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এই বন্দরটি সাধারণতঃ মালবাহী বিমান বা সরকারি কর্মকর্তা বা ব্যবসায়ীদের ব্যক্তিগত বিমান উঠানামার কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসীরা বিমানবন্দরের রক্ষীদের পোশাক পড়ে ওই হামলা চালিয়েছিল। পরে গ্রানেড ও বন্দুক হামলা চালাতে চালাতে তারা রানওয়ের দিকে অগ্রসর হয়। এসময় তাদের বাধা দেয় পাক নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।

সবমিলিয়ে ১০ বন্দুকধারী ওই হামলায় অংশ নিয়েছিল বলে ডন জানিয়েছে। তারা দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বন্দরটি দখল করে রাখে এবং দফায় দফায় বোমা ও বন্দুক হামলা চালায়। তাদের হামলায় বিমানবন্দরের ১০ নিরাপত্ত রক্ষীসহ ১৩ জন প্রাণ হারান বলে সিন্ধু প্রদেশের গভর্ণর সৈয়দ কায়িম আলি শাহ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। এছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ১০ হামলাকারীও। সোমবার স্থানীয় সময় সকাল পাঁচটার দিকে শেষ হামলাকারীকে হত্যা করে বিমানবন্দরের দখল নেয় নিরাপত্তা বাহিনী।

বিমানবন্দরে হামলার দুই ঘণ্টা পর বিরাট বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। দ্বিতীয় বড় বিস্ফোরণটি হয় বিমানবন্দরের ওয়ার্কশপের কাছে। এর ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পর তৃতীয় বিসোফারণের শব্দ শোনা যায়। এছাড়া থেমে থেমে গুলির শব্দও শোনা যাচ্ছিল। এসময় বিমানবন্দরের আকাশ ঢেকে যায় কালো ধুঁয়ায়।

দু পক্ষের সংঘর্ষের সময় পিআইয়ের একটি এবং এয়ার ব্লু এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রীবাহী বিমানে আগুন ধরে যায়।এছাড়া হামলায় বিদেশি কোম্পানির একটি মালবাহী বিমানও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।হামলা শুরু হওয়ার পরপরই বন্দরের যাত্রী ও কর্মচারীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়। এ ঘটনার পর জিন্নাহ টার্মিনালের নির্ধারিত সকল ফ্লাইট বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে এবং বিমানগুলোকে অন্যান্য বিমানবন্দরে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

পাক সেনাবাহিনীর কমান্ডাররা জানিয়েছেন, বিমানবন্দরের ওপর পুরো নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করতে তাদেরকে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় সময় ধরে বন্দুক যুদ্ধ চালাতে হয়েছিল।

তাৎক্ষণিকভাবে কোনো গোষ্ঠি এই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেনি। তবে জঙ্গি সংগঠন তেহরিক ই তালিবান পাকিস্তান সংক্ষেপে টিটিপিকে সন্দেহ করা হচ্ছে। ২০১১ সালের মে মাসে তারা পাক বিমান বাহিনীর সদর দপ্তরে এ ধরণের একটি হামলা চালিয়েছিল। ওই হামলায় ১৩ জন নিহত এবং ১৬ জন আহত হয়েছিল।



মন্তব্য চালু নেই