কমেডিয়ানদের কান্না দেখলেও মানুষ হাসে…

‘সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা একজন অভিনয়শিল্পীর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। কারণ অভিনেয়ের মান থেকে শুরু করে আনুসাঙ্গিক বিভিন্ন বিষয় তার নখদর্পণে রাখতে হয়। দীর্ঘ এ অভিনয় জীবনে অনেক কাজ করেছি। কিন্তু শিল্পী হিসেবে যে এক ধরনের আত্মতৃপ্তি তা এখনও আসেনি। আর এখনওতো অভিনয় শিখছি। কিছুইতো করতে পারলাম না।’- এভাবেই দীর্ঘ অভিনয় জীবনের ক্যারিয়ার নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা আফজাল শরীফ।

শুরুতেই প্রসঙ্গক্রমে কথা হলো একজন দক্ষ কমেডিয়ান হয়ে উঠার গল্প নিয়ে। তিনিও মেলে ধরলেন তার সে জমানো ছোট্ট ছোট্ট অভিজ্ঞতার টুকরো অংশ। ‘আমি প্রথমে এসব কিছুই বুঝতাম না। বলা চলে আমার অভিনয়ের বেসিক ছিল ভয়াবহ দুর্বল। এরপর আমি থিয়েটার কাজ করা শুরু করি। আমি ১৪ বছর থিয়েটারে কাজ করেছি। সকাল-বিকেল শো করেছি। এখন সে কষ্টের ফল ভোগ করছি।’- শুরুতেই বললেন তিনি।

কমেডিয়ান হিসেবে মানুষকে হাসানো কিন্তু চারটিখানি কথা নয়। এ বিষয়টি বরাবরই বেশ কঠিন। আর এ কঠিন কাজটি তিনি অবলীলায় করে যান। বললেন, ‘আমি একজন কমেডিয়ান হিসেবে মানুষকে হাসাতে চেষ্টা করি। আবার ট্রাজিক দৃশ্য থাকলে কাঁদাতেও পারি। কিন্তু কমেডিয়ানদের কান্না দেখলেও মানুষ হাসে। তারপরও আমি সর্বোচ্চ চেষ্টাটা সবসময়ই করি।’

সহ-শিল্পীর সঙ্গে বোঝাপরাটা বেশ দারুণ রাখতে চান। এতে অভিনয় করতে সাবলীল যে ভঙ্গি তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ বিষয়ে আফজাল শরীফ জানান, ‘অভিনয়ের ক্ষেত্রে আরেকটি বড় বিষয় হল সহ-শিল্পীর সঙ্গে বোঝাপড়া। এ দু-জনের বোঝাপরা যত ভাল হবে অভিনয়ের মান তত ভাল হবে। এদিক থেকে বলতে গেলে শাকিব খানের সঙ্গে সহ-শিল্পী হিসেবে বোঝাপড়াটা বেশ ভাল। নায়ক-নায়িকাদের যেমন জুটি থাকে তেমনি আমাদের কাজের ক্ষেত্রে সেভাবে জুটি তৈরি করে নিতে হয়। আর না হলে কাজ করতে গিয়ে খুবই সমস্যার মধ্যে পরতে হয়’। আবার এও বললেন ‘অভিনয়ের ক্ষেত্রে কাউকে অনুকরণ বা অনুসরণ করা উচিত নয়। তা না হলে অভিনয়ে নিজের সত্ত্বাটার প্রকাশ ঘটবে না’।

বর্তমানে আফজাল শরীফ মেন্টাল, লাভ ২০১৫, বেপোরোয়া প্রেমিক, এক পৃথিবীর প্রেম ছবিতে অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এছাড়া আরও বেশ কিছু ছবিতে অভিনয়ের কথাবার্তা চলছে। তিনি কয়েকটি খন্ড নাটকেও অভিনয় করছেন।

কমেডি অভিনেতা আফজাল শরীফ মঞ্চ থেকে টেলিভিশন এরপর চলচ্চিত্রে আসেন। ১৯৮৪/৮৫ সালে তার অভিনয় জীবন শুরু হয়। ১৯৯২ সালে গৌতম ঘোষের পরিচালনায় ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আগমন আফজাল শরীফের। কমেডি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি ২০১০ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন।

এছাড়াও তিনি বাচসাস পুরস্কার (২০০৪), বিসিআরএ পুরস্কার (২০০৩, ২০০৫, ২০০৬, ২০০৭), ফকির লালন শাহ স্বর্ণপদক (২০০৫), সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন স্বর্ণপদক (২০০৫)। চলচ্চিত্র, মঞ্চ ও টেলিভিশনে বিশেষ অবদানের জন্য ৩২তম ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পুরস্কার, লায়ন্স ক্লাব পুরস্কার (২০০৫) এবং বাবিশাস পুরস্কার (২০১১ট্রাব বিজয় অ্যাওয়ার্ড, মরমী সাধক হাসন রাজা স্মৃতি স্বর্ণপদক (২০০৬)লাভ করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই