কদর বাড়ছে শীতের টুপির

শীতে নারী-পুরুষ সবারই একটি দরকারি অনুষঙ্গের নাম টুপি। টুপির ব্যবহার কখনো প্রয়োজন, কখনো ফ্যাশন, কখনো শখ আবার কখনোবা নিয়মে পরিনত হতে দেখা গেছে। প্রখর দাবদাহে মাথা ও মুখমণ্ডলকে সরাসরি রোদের উত্তাপ থেকে রক্ষা করতেও কিন্তু ক্যাপের ব্যাবহার চলে। তেমনি কনকনে ঠাণ্ডায় আজকাল নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবারই টুপি ব্যবহার করা দেখা যায়। ফ্যাশন, রুচি ও প্রয়োজন অনুসারে একেকজন একেক রকম টুপি বেছে নেন। বাহারি এসব ফ্যাশনেবল রঙ-বেরঙের টুপি মানুষকে শীতের হাত থেকে রক্ষা করা ছাড়াও চেহারায় আনে আভিজাত্য ও বৈচিত্র্যের ছোঁয়া।

শীতের ফ্যাশনে বড় একটি ভূমিকা রাখে এই টুপি। সুতি, উল, পশমি, নেট কাপড়ে বিভিন্ন রঙের এসব কানটুপির চাহিদা এখন বেশি। শিশু থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণী বা বড়দের মধ্যে দেখা যাচ্ছে টুপির চাহিদা। ঢাকার এলিফ্যান্ট রোড, ইসলামপুর বাজার, সিটি প্লাজা সুপার মার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, বঙ্গবাজার, গাউসিয়া, ইস্টার্নপ্লাজা, গুলিস্থান, নিউমার্কেটে রয়েছে শীতের টুপির বিশাল সমাহার। কাপড়, ডিজাইন ও স্টাইলের উপর নির্ভর করে এর দর-দাম। শীত বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে ধুলাবালি আর ঠাণ্ডা থেকে মাথাকে রক্ষা করতে দিন দিনই বাড়ছে টুপির কদর।

টুপির চাহিদা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে নিউমার্কেটের টোকিও ফ্যাশনের মালিক মো. শাহেদ বাংলামেইলকে বলেন, বছরের অন্য সময় আমরা বেল্ট বিক্রি করি। শীতে চাহিদার কথা বিবেচেনায় এনে দোকানে রেখেছি কানটুপি, মাফলার এবং মোজা। এখানে নারী-পুরুষের জন্য বিভিন্ন নামের, বিভিন্ন দামের টুপি রয়েছে। বিক্রি হচ্ছে ভালোই। টুপির মধ্যে আছে জনটুপি, বেনী টুপি, প্লেইন টুপি, মাফলার টুপি, ক্যাপ টুপি, কান টুপি, মানকি টুপি। এ সব টুপির দাম ৮০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে। তবে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় মানকি টুপি।

তিনি বলেন, এসব টুপি নারী– পুরুষ সবাই পরে। তবে নারীদের আলাদা একটি টুপি আছে বাগরার টুপি। এ টুপির সঙ্গে আছে এটাস্ট মাপলার। দাম পড়বে ২০০ টাকা। এ টুপি নারীদের খুবই পছন্দ। শীতে বিক্রিও হয় ভালো।

নিউমার্কেটের ফুটপাতের টুপি বিক্রিতা মো. রাকিব বাংলামেইলকে বলেন, আমাদের দোকানে কসমেটিক্স আইটেম বিক্রি করি। এখন শীতের কারণে টুপি আর মোজা তুলেছি। এ দোকোনে টুপির মধ্যে পাবেন ফোল্ডিং ১০০ টাকা, মানকি ১৩০ টাকা, মাছি ১৫০ টাকা, চায়না টুপি ১৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা, খরগোশ টুপি ২০০ টাকা, মেকি ১৫০ টাকা, ক্যাপসিস্টেম কানটুপি ১৮০ টাকা।

রাকিব জানায়, মাছি টুপির চাহিদাই এখানে সবচেয়ে বেশি। এখন প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার টুপি বিক্রি করি। শীত বাড়লে এ বিক্রি বেড়ে হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। ঠাণ্ডা বাড়লে দামও বেড়ে যায়। আমরা বঙ্গবাজার, সিটি প্লাজা, ইসলামপুরের যেসব মোকাম থেকে হোলসেলে টুপি কিনি সেখানেও দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়। শীত পড়লে একদর থাকে। আর অন্য সময় দামাদামি করে যার কাছ থেকে যা রাখতে পারি।

এ দোকানে ছোটদের ভালুক, কার্টুন কানটুপি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা দামে। এছাড়া নারীদের বউ টুপির দাম ১৫০ টাকা।

শীতের এসময় কানটুপি ক্রেতা মো. জসিমউদ্দিন বাংলামেইলকে বলেন, শীত আসলে প্রতিবছরই টুপি কিনতে হয়। কারণ শীত শেষে শীতের টুপির খবর আর রাখা হয় না। কখন, কিভাবে হারিয়ে ফেলি টেরও পাই না।

এদিকে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩য় বর্ষের ছাত্র মো. সোহরাব বলেন, শীত আসলে আমাদের ভার্সিটির বন্ধুদের মধ্যে টুপি কেনার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। কার টুপি কদো ফ্যাশনেবল, চেহারার সঙ্গে মানানসই কিংবা বেমানান এ নিয়েও বন্ধুদের মধ্যে মজার আড্ডা জমে ওঠে।

শীতের টুপি কেনার ক্ষেত্রে কোন বাধাধরা নিয়ম নেই। তবে মুখের গড়ন, ত্বকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে কিনতে পারেন আপনার পছন্দের যে কোনো টুপি।



মন্তব্য চালু নেই