ঐতিহাসিক সফরে ঢাকায় চীনা প্রেসিডেন্ট

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এখন ঢাকায়। দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে তিনি আজ বেলা ১১ টা ৪৫ মিনিটে এয়ার চায়নার একটি বিশেষ বিমানে শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।

এ সময় চীনের প্রেসিডেন্টকে বিমানবন্দরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

এর আগে সংবর্ধনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের আকাশসীমায় প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর দুটি জেট চীনের প্রেসিডেন্টের বিমানকে এসকর্ট করে নিয়ে আসে।

বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর একুশবার তোপধ্বনির পর সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত একটি চৌকস দল সফররত প্রেসিডেন্টকে গার্ড অব অনার, পুষ্পার্ঘ্য প্রদান এবং লালগালিচা সংবর্ধনা দিয়ে বরণ করে নেয়।

প্রায় তিন দশক পর চীনের প্রেসিডেন্টের এটি প্রথম বাংলাদেশ সফর। সফরকালে দু’দেশের মধ্যে বেশ কিছু চুক্তি সই হবে। তার এই সফর ঘিরে দুই দেশে উচ্চাশা সৃষ্টি হয়েছে। এই সফর বাংলাদেশের সাথে কেবল অর্থনৈতিক নয়, বৈশ্বিক রাজনীতিতে ভারতসহ অন্যান্য দেশের সাথে ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ।

সফরকালে চীনের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন। তিনি দু’দেশের মধ্যকার চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করবেন। এছাড়াও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানাগেছে।

এরপর চীনা প্রেসিডেন্ট বিমানবন্দর থেকে যান হোটেল লা মেরিডিয়ানে। সেখানে কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর বেলা তিনটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন জিনপিং। এরপর দুই দেশের মধ্যে ২৫টির বেশি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হবে।

শেখ হাসিনা ও জিনপিং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর নদীর তলদেশে টানেল এবং আনোয়ারায় চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইপিজেড) উদ্বোধন করবেন।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জিনপিং যাবেন বঙ্গভবনে। সেখানে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সাথে সাক্ষাৎ করবেন। এরপর চীনা প্রেসিডেন্টের সম্মানে রাষ্ট্রীয় ভোজ অনুষ্ঠিত হবে।

পরদিন সকালে চীনা রাষ্ট্রপতি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাবেন ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি সম্মান জানাবেন। এরপর ভারতের গোয়ার ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকা ত্যাগ করবেন তিনি।

এদিকে সফরের ওপর আলোকপাত করে বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে চীনের প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ২৫টির বেশি চুক্তি এবং এমওইউ সই হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ চুক্তিগুলো স্বাক্ষরের ফলে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ভৌত অবকাঠামো সড়ক-সেতু, রেল যোগাযোগ ও জলপথে যোগাযোগ, কৃষিসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরো গভীর হবে। একই সাথে দুই দেশের মধ্যে সমুদ্রসম্পদ আহরণসহ দুর্যোগ মোকাবেলা, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র সংযোজিত হবে।

তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সই হতে যাওয়া চুক্তি ও এমওইউ এবং প্রকল্প অর্থায়নের পরিমাণ সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এগুলো নিয়ে শেষমুহূর্ত পর্যন্ত কাজ চলবে।



মন্তব্য চালু নেই