এসপিপত্নী হত্যায় গ্রেপ্তার তিনজনই সাকার ক্যাডার

পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তারকৃতদের প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘এসপিপত্নী হত্যার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ওয়াসিম, আনোয়ার ও রাশেদ নামে যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে তারা প্রত্যেকেই যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর দুর্ধর্ষ ক্যাডার। বিএনপির এই তিন সন্ত্রাসী ২০১২ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদ মিয়া হত্যাকাণ্ডেরও চার্জশিটভুক্ত আসামি।’

মঙ্গলবার (২৮ জুন) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু একাডেমি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাছান মাহমুদ এ অভিযোগ করেন।

বিএনপির চেয়ারপারসনকে জঙ্গি নেত্রী আখ্যা দিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) জঙ্গিদের পাশে বসিয়ে জঙ্গিবিরোধী বক্তব্য দেন। খালেদা জিয়ার প্রচ্ছন্ন ছায়ায় এবং বিএনপি নেতাদের অর্থায়নে এসব হত্যাকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। জামায়াত-শিবিরের যেসব ক্যাডার আগে মানুষের হাত-পায়ের রগ কাটতো তারাই এখন বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর নামে গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে। যেসব জঙ্গিগোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে তাদেরকে খালেদা জিয়া তার আঁচলের তলে আশ্রয় দিয়েছেন।’

‘সরকারের উচিত হবে বৃটেনের উদাহরণ অনুসরণ করা’- খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি যেভাবে নিরীহ মানুষ হত্যা করেছিল, বৃটেন বা অন্যকোনো উন্নত দেশ হলে তিনি এতোদিনে রাজনীতি করার অধিকার হারাতেন।’

‘প্রতিদিন ইফতারের পূর্বে খালেদা জিয়া মিথ্যাচার করে রমজানের পবিত্রতা নষ্ট করছেন। মিথ্যা বলায় বিএনপি নেত্রী অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছেন’- বক্তব্যে যোগ করেন হাছান।

আওয়ামী লীগের এই প্রচার সম্পাদক বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম বিএনপি নেত্রী নাকি দলের নেতাদের উপরে বিরক্ত। প্রকৃতপক্ষে বিএনপি নেতারা খালেদা জিয়ার উপরে আনো বেশি বিরক্ত। চার মাস হয়ে গেছে, সম্মেলনের পরে বিএনপি এখনো কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি। যে নেত্রীর উপরে তার দলের নেতারা আস্থা রাখতে পারছে না, তার উপর জনগণ কীভাবে আস্থা রাখবে? সে দল কীভাবে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করবে?’

সংগঠনের উপদেষ্টা এমদাদুল হক সেলিমের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন- মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা জিএম আতিক, হারুন চৌধুরি ও অরুণ সরকার রানা প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন নগরীর জিইসি’র মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত ও গুলিতে খুন হন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনার পরদিন পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তার বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটক করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের তরফ থেকে বলা হচ্ছে এই হত্যা মিশনের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব ছিল পুলিশের হাতে আটক আবু মুছার ওপরই। তার নির্দেশনা মতে টাকার বিনিময়ে মোট সাতজন এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। তারা হলেন- আবু মুছা, ওয়াসিম, রাশেদ, নবী, কালু, শাহজাহান ও আনোয়ার। এছাড়া অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে এহতেশামুল হক ভোলার নাম জানায় তারা।তবে পুলিশ কিংবা রাষ্ট্র কোনো পক্ষ থেকেই এ ঘটনার মোটিভ সম্পর্কে ‘খোলাসা করে’ কিছুই জানানো হচ্ছে না।



মন্তব্য চালু নেই