এশিয়া কাপ: শ্রীলঙ্কা-আমিরাত ম্যাচে যে বার্তা পেল বাংলাদেশ

বাংলাদেশ দল নিশ্চয়ই শ্রীলঙ্কা-সংযুক্ত আরব আমিরাতের ম্যাচটা দেখেছে। এশিয়া কাপে শুক্রবার আমিরাতের সাথে খেলবে টাইগাররা। তো কেমন করলো আমিরাত? শ্রীলঙ্কাকে তাদের পেসাররা কাঁপিয়ে দিয়েছিল বল হাতে। কিন্তু ব্যাটিংয়ে অভিজ্ঞতা আর সাহসে মার খেয়ে গেলো। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে লঙ্কানদের তারা ৮ উইকেটে মাত্র ১২৯ রানেই বেধে ফেলেছিল। তবে লঙ্কান বোলারদের সামনে ব্যর্থ আমিরাতের ব্যাটসম্যানরা। তবু তারা ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১১৫ রান করলো। হারলো বটে ১৪ রানে। বোঝা গেলো, আমিরাতের পেসাররা বাংলাদেশের জন্যও হুমকি হতে পারে। ব্যাটিংয়ে তারা একটু সাহসী হলে সেখানেও চিন্তার বিষয় আছে। এই বার্তাই স্বাগতিকদের দিয়ে গেলো আমিরাত।

বোলাররা দারুণ প্ল্যাটফর্ম দিয়েছিল। কিন্তু ব্যাটিং আমিরাতকে ডোবালো। প্রথম ওভারে দুই উইকেট তুলে নিয়ে লাসিথ মালিঙ্গা তো শুরুতেই কোণঠাসা করে দিলেন প্রতিপক্ষকে। চতুর্থ ওভারে তার মতো জোড়া আঘাত হানেন নুয়ান কুলাসেকারা। ১৬ রানে ৪ উইকেট নেই আমিরাতের। বাছাইয়ের সফল ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শাহজাদও ১ রানে আউট।

শীর্ষ চার ব্যাটসম্যানকে এভাবে হারানোর পর আমিরাতকে আরো সতর্ক হতে হয়। অন্তত ২০ ওভার তো খেলতে হবে! কিন্তু ১০ ওভারের মধ্যেই তাদের ৬ উইকেট নেই! একমাত্র শাইমান আনোয়ার (১৩) দুই অঙ্কের রান করতে পারলেন। বছর খানেক পর টি-টোয়েন্টিতে ফেরা বাঁ হাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ নিয়েছেন পরের দুটি উইকেট।

৪৭ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর স্বপ্নিল পাতিল ও অধিনায়ক আমজাদ জাভেদের ব্যাটে পাল্টা আক্রমণ চালায় আমিরাত। সপ্তম উইকেটে আসে ৩৮ রান। স্বপ্নিল বেশ আগ্রাসী ছিলেন। এমন সময়ে ২৪ বলে ৪৭ রান দরকার ছিল। স্বপ্নিল ও আমজাদ ছিলেন উইকেটে। অভিজ্ঞ দল হলে বলে দেয়া যেতো, এটা সম্ভব। মালিঙ্গা আবার এলেন ১৭তম ওভারে। আমিরাতের সর্বোচ্চ স্কোরার স্বপ্নিলের (৩৬ বলে ৩৭, ৩টি চার, ২টি ছক্কা) দেয়া ফিরতি ক্যাচ নিলেন। পরের ওভারে আরো একটি উইকেট মালিঙ্গার। ৩ মাসেরও বেশি সময় পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেই ম্যাচের সেরা মালিঙ্গা। লঙ্কান অধিনায়ক ৪ ওভারে ২৬ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। কুলাসেকারা ৪ ওভারে মাত্র ১০ রানে শিকার করেছেন ৩ উইকেট।

এর আগের গল্পটা আমিরাতের পেসারদের। সবচেয়ে ছোটো সংস্করণের এই ক্রিকেটে ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কা দুর্দান্ত। কিন্তু এই দলটি গোছানো না। সেই সুযোগ নিতে টস জিতে তাদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে দিলেন আমিরাত অধিনায়ক আমজাদ জাভেদ। এই দলটির কোচ আকিব জাভেদ। পাকিস্তানের সাবেক ফাস্ট বোলার। অধিনায়ক আমজাদ মিডিয়াম পেসার। মোহাম্মদ নাভিদও ভালো পেসার। এই পেসাররাই লঙ্কানদের পোড়ালেন।

শ্রীলঙ্কার ইনিংসকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। ওপেনিং জুটির ৯.১ ওভার। এবং এরপর বাকি ব্যাটসম্যানদের ইনিংস। তিলকারত্নে দিলশান হালে ফর্মে নেই। শেষ ৫ ম্যাচে রান ৬৪। ওপেনিংয়ে তার সঙ্গী বারবার বদলাচ্ছে। এবার আসলেন দিনেশ চান্দিমাল। খুব বিস্ফোরক কিছু হলো না। কিন্তু রান আসলো। ৬৮ রান তারা এনে দিলেন। ২৮ বলে ২৭ রানে আউট দিলশান।

দিলশানকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন আমজাদ। এই ডান হাতি পেসার পরপর তিন ওভারে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে শ্রীলঙ্কার ইনিংসটাকে টেনে ধরেন। মিলিন্তা সিরিওয়ার্দানের (৬) পর চান্দিমালও আমজাদের শিকার। ৩৯ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৫০ রান করেছেন চান্দিমাল।

এরপর খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলেছে লঙ্কানরা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে। বেসিক ধরে রেখে বল করে গেছেন আমিরাতের বোলাররা। তাতেই কাজ হয়েছে। এক সময় মরীয়া হয়েও ব্যাট চালিয়েছেন ব্যাটসম্যানরা। তাতে কাজ হয়েছে আমিরাতের। মাঝের দুই উইকেট নিয়েছেন বাছাই পর্বের সফল বোলার নাভিদ। আরেক পেসার মোহাম্মদ শাহজাদেরও শিকার ২ উইকেট। ৮ উইকেটের ৭টি পেসারদের। লঙ্কানদের পরের দিকে দুই ব্যাটসম্যান কেবল ১০ রান করতে পেরেছেন। অন্যরা তো তাও করতে পারেননি। আমিরাতের জন্য দারুণ ব্যাপারই বটে।



মন্তব্য চালু নেই