এলাহীকান্ডে মন্ত্রীর বৌভাতে

এলাহীকান্ডে শুক্রবার রাতে সম্পন্ন হলো রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক ও হনুফা আক্তার রিক্তার বিবাহোত্তর সংবর্ধনা ও বৌভাত।

এ উপলক্ষে সংসদ ভবনের এলডি হল এলাকায় বিশাল প্যান্ডেলের আয়োজন করা হয়। মনিপুরীপাড়া ফটক থেকে এলডি হল পর্যন্ত করা হয়েছে আলোকসজ্জা।

গেটে গেটে দেহ তল্লাশি আর ঠেলা ধাক্কা খেয়ে অতিথিদের ভেতরে প্রবেশ করতে হয়েছে। অনুষ্ঠানের পুরো প্যান্ডেল ছিল সম্পূর্ণ ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায় সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে।

মন্ত্রীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত অতিথির তালিকায় ছিলেন তিন সহস্রাধিক। তবে উপস্থিত হয়েছে তার দ্বিগুণের বেশি। তারপরেও বারবার মাইকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে-পর্যাপ্ত খাবার আছে। আনন্দঘন এ পরিবেশে সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকেও নিমন্ত্রণ করা হয়েছে।

অতিথিদের অভ্যর্থনা জানাতে কালো রঙয়ের স্যুট পরিহিত ৬৭ বছর বয়সী মন্ত্রীকে সন্ধ্যায় মূল ফটকের পাশেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের ফটক থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন অতিথিরা। সারি ধরে একের পর এক ভেতরে প্রবেশ করছেন তারা।

তবে নিমন্ত্রণ পত্র ছাড়া কাউকে ঢুকতে না দেয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে এসে বিপত্তিতে পড়তে হয়েছে অনেককে। আবার অনেককে ফিরে যেতেও দেখা গেছে।

এদিকে, বহিরাগত ও ছিঁচকে ছিনতাইকারী এবং পকেটমারদের উৎপাত থেকে রক্ষা পেতে অনুষ্ঠানস্থলে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার অনুষ্ঠানের দিন পুরো অনুষ্ঠানস্থল সার্বিকভাবে সিসিটিভিসহ নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রয়েছে।

ঘিয়ে রঙয়ের সোনালী জরির শাড়ি, সীতাহার, কণ্ঠহার, টিকলি পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন নববধূ হনুফা আক্তার রিক্তা। মঞ্চে ওঠার পর তাকে ঘিরে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন আগ্রহীরা।

ভিআইপিদের জন্য এলডি হলের ভেতরে দুটি স্থানে ২০টি টেবিল রাখা হয়। প্রথম থেকেই পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালসহ আরো কয়েকজন সেখানে হাজির হয়েছেন।

খাবার মেন্যুতে ছিল কাচ্চি বিরিয়ানি, মুরগীর রোস্ট ও কোমল পানীয়। সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু হয় খাওয়া-দাওয়া।

খাবারের মধ্যেও ছিল তিন ধরনের ব্যবস্থা: সাধারণ, ভিআইপি ও ভিভিআইপি শ্রেণিতে অতিথিদের ভাগ করে রয়েছে খাবারের আয়োজন।

বিবাহোত্তর সংবর্ধনায় উপহার গ্রহণ করতে অনুষ্ঠানস্থলের পাশে প্যান্ডেল করে ৬টি কাউন্টার বসানো হয়েছে। তবে রাত ৮টা পর্যন্ত কাউন্টারগুলোতে তেমন উপহারসামগ্রী জমা হয়নি, কয়েকটি মাত্র উপহারের বাক্স দেখা গেছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ অক্টোবর খামারবাড়ী কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন কমিউনিটি হলে অনুষ্ঠিত রেলপথ মন্ত্রীর গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে বহিরাগত ও ছিঁচকে ছিনতাইকারী এবং পকেটমারদের কারণে অর্ধ শতাধিক আমন্ত্রিত অতিথিদের মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ, ভ্যানিটিব্যাগ, পার্সসহ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান বস্তু খোয়া যায়।

এছাড়া গত ৩১ অক্টোবর কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মিরাখলা গ্রামে বিয়ে অনুষ্ঠানে শতাধিক গণ্যমান্য ব্যক্তির মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ, ভ্যানিটিব্যাগ পার্সসহ প্রয়োজনীয় ও মূল্যবান বস্তু খোয়া যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট সবার কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী।

শুক্রবার বৌভাত অনুষ্ঠানটি নিবিঘ্ন রাখতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারসহ পুরো অনুষ্ঠানস্থল সম্পূর্ণ ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই এ বিষয়ে সর্তক রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই