এরশাদের সামনেই শামীম ওসমানকে গ্রেপ্তারের স্লোগান

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনার মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের সঙ্গে ফোনালাপের অডিও প্রকাশের একদিন পরেই শামীম ওসমানের গ্রেপ্তার দাবি করে স্লোগান দেয়া হয়েছে।

স্লোগানে শামীম ওসমান ও নূর হোসেনকে ‘গডফাদার’ উল্লেখ করে ফাঁসি দাবি করা হয়। ওই সময়ে অদূরেই ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

শনিবার রাত ৮টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজিতে নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের ‘বুকস গার্ডেন’ ভবনে যান এরশাদ। সেখানে নিহতের পরিবারের লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এভাবে স্লোগান দিতে থাকে। তারা শামীম ওসমান আর নূর হোসেনের ফাঁসি দাবি করেন।

এরশাদের সঙ্গে তখন উপস্থিত ছিলেন- নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম, ভাই আবদুস সালাম ও নিহত মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলমের পরিবারের লোকজন।

এরশাদ এসব পরিবারের সদস্যকে আধাঘণ্টা সময় দেন ও তাদের সান্ত্বনা দেন। তাদের আর্থিকভাবে সহায়তা করতে সরকারের কাছে সুপারিশ করবেন বলেও আশ্বাস দেন।

নিহত পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়লে এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে স্লোগন দিতে থাকে। এরশাদের উপস্থিতিতেই স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে গ্রেপ্তারের দাবিতে নানা স্লোগান দেয় নজরুল ইসলামের সমর্থকরা।

ওই সময় তারা বলতে থাকেন বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসীরা গ্রেপ্তার হলেও নারায়ণগঞ্জে কেন সন্ত্রাসীরা গ্রেপ্তার হচ্ছেনা। শামীম ওসমানই খুনীদের গ্রেপ্তারে বাধা দিচ্ছেন। তাকে করলেই খুনীরা গ্রেপ্তার হবে। তারা স্লোগান ধরে ‘শামীম ওসমানের ফাঁসি চাই, দিতে হবে, গডফাদার নূর হোসেনের ফাঁসি চাই, দিতে হবে। নারায়ণগঞ্জের মাটিতে গডফাদারদের ঠাঁই নাই।’

এর আগে বিকেল ৫টার দিকে শহরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের স্মরণ সভায় এরশাদ বক্তব্য দেন। পরে রাত ৮টায় সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজিতে নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের ‘বুকস গার্ডেন’ ভবনে যান।

উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে একসঙ্গে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার এবং তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক ইব্রাহিম অপহৃত হন। পরদিন ২৮ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন নজরুল ইসলামের স্ত্রী। কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান করে মামলায় আসামি করা হয় মোট ১২ জনকে।

এরপর ৩০ এপ্রিল বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ৬ জন এবং ১ মে সকালে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত সবারই হাত-পা বাঁধা ছিল। পেটে ছিল আঘাতের চিহ্ন। প্রতিটি লাশ ইটভর্তি দুটি করে বস্তা বেঁধে ডুবিয়ে দেয়া হয়।



মন্তব্য চালু নেই