এমপি লিটন হত্যায় কাদেরের দোষ স্বীকার

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যাকাণ্ডে দোষ স্বীকার করেছেন জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি আবদুল কাদের খান। আজ শনিবার রাতে গাইবান্ধার বিচারিক হাকিম মো. জয়নাল আবেদীনের খাসকামরায় তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

এই নিয়ে এমপি লিটন হত্যা মামলায় পাঁচজন দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিলেন।

১০ দিনের রিমান্ডে থাকাবস্থায় ডা. কর্নেল (অব.) আবদুল কাদের খানকে শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করা হয়। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে রাত পৌনে ১০টার দিকে তাঁকে আদালত থেকে বের করা হয়। এরপর আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

পুলিশের রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক বশির আহমেদ এসব তথ্য জানিয়ে সাংবাদিকদের জানান, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে। তিনি জানান, প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে ও ক্ষমতার লোভে এমপি লিটনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সাবেক এমপি আবদুল কাদের খান। এ ছাড়া তিনি অর্থ জোগানসহ তাঁর গ্রামের বাড়িতে নিজের গাড়ির চালকসহ অন্যদের নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে আসছিলেন।

গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নে শাহবাজ (মাস্টারপাড়া) এলাকায় নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। এ ঘটনায় লিটনের বোন তাহমিদা বুলবুল বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় চার-পাঁচজনকে আসামি করে ১ জানুয়ারি সুন্দরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।

ওই হত্যা মামলায় আবদুল হান্নান, মেহেদী হাসান ও শাহীন মিয়া নামের তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে তাঁরা এমপি লিটনকে হত্যার কথা স্বীকার করে গাইবান্ধার বিচারিক হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তাঁদের দেওয়া তথ্যমতে, ২১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বগুড়ার বাসা থেকে আবদুল কাদের খানকে গ্রেপ্তার করে গাইবান্ধার পুলিশ। পরদিন তাঁকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। একই দিন আনোয়ারুল ইসলাম রানা নামের একজনকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ২৩ ফেব্রুয়ারি তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

কাদের খানকে গ্রেপ্তারের পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারি সকালে গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) খন্দকার গোলাম ফারুক। ডিআইজি দাবি করেন, ক্ষমতার উচ্চাভিলাষী লোভ এবং আবার সংসদ সদস্য (এমপি) হওয়ার জন্য এমপি লিটনকে হত্যা করা হয়। এক বছর ধরে হত্যার পরিকল্পনা করেন সাবেক এমপি আবদুল কাদের খান। তাঁর অর্থায়নে এমপি লিটনকে হত্যা করা হয়। এমনকি খুনিদের নানা ধরনের আর্থিক সহযোগিতা করে তাঁদের অস্ত্রের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন কাদের খান।

ডিআইজি জানান, এমপি লিটন হত্যাকাণ্ডে আবদুল হান্নান, মেহেদী হাসান, শাহীন ও রানা অংশ নেয়। এঁদের তিনজন সরাসরি হত্যা করেন।

এদিকে সাবেক এমপি কাদেরের দেওয়া তথ্য অনুসারে বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপরহাটি ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপরহাটি (খানবাড়ী) গ্রামের বাড়ির আঙিনার উত্তর পাশের দেয়াল ঘেঁষে মাটির নিচ থেকে ছয়টি গুলিসহ একটি পিস্তল ও দুটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করে পুলিশ।



মন্তব্য চালু নেই