এমপি লিটনের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত গাইবান্ধা-১ এর সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে। সোমবার সকালে জাতীয় সংসন ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় নামাজে জানাজা শেষে এই শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন হুমম্মদ এরশাদ এবং সংসদে লিটনের সহকর্মী সংসদ সদস্যরা এবং লিটনের বেশ কয়েকজন স্বজন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে একাধিক সংসদ সদস্য বলেন, জামায়াত-শিবিরের সহিংসতাপ্রবণ এলাকায় লিটন তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে উগ্রবাদীরা কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সব সংসদ সদস্যকেই সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তারা।

শনিবার সুন্দরগঞ্জের নিজ বাসায় গুলিতে নিহত হন সংসদ সদস্য লিটন। পাঁচজন দুর্বৃত্ত ঘরে ঢুকে আলোচনার কথা বলে তাকে গুলি করে। সঙ্গে সঙ্গে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

রবিবার রংপুর মেডিকেল থেকে লিটনের মরদেহ নেয়া হয় রংপুর পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে। সেখানে নামাজে জানাজা শেষে মরদেহ আনা হয় ঢাকায়। রাতে বারডেম হাসপাতালের মর্গে রাখা হয় মরদেহ।

সকাল সোয়া নয়টার দিকে লিটনের মরদেহ এই হাসপাতাল থেকে নেয়া হয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়। সকাল ১০টার দিকে জানাজায় যোগ দেন সংসদ সদস্যরা।

জানাজা শেষে চলে শ্রদ্ধা নিবেদনের পালা। প্রথমে লিটনের কফিনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পন করা হয়। রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মো. সারোয়ার হোসেন ফুল দেন এই কফিনে।

এরপর সংসদ সদস্য লিটনের কফিনে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এ সময় কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।

এরপর সংসদ সদস্য লিটনের কফিনে ফুল দেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমীন চৌধুরী। এরপর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, আবদুর রাজ্জাকও এ সময় শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন।

এরপর লিটনের প্রতি শ্রদ্ধা জানান ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া। সবশেষে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া করা হয়।

জাতীয় সংসদে জানাজা শেষে লিটনের মরদেহ দেয়া হবে সুন্দরগঞ্জে নিজ এলাকায়। সেখানে আরেক দফা জানাজা শেষে তাকে সমাহিত করা হবে।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ ও বামনডাঙ্গা) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন লিটন। জামায়াত-শিবিরের সহিংস আন্দোলনের মধ্যেও এই ভোট নেয়া হয় সেখানে। নির্বাচনের পরও জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা সন্ত্রাস অব্যাহত রাখে। পরে এলাকায় শান্তি ফেরাতে লিটন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

লিটনকে হত্যার জন্য আওয়ামী লীগ জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করেছে। তবে জামায়াত এক বিবৃতিতে এই ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে। এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, হামলাকারীদের জঙ্গি সম্পৃক্ততাও খতিয়ে দেখছে তারা।



মন্তব্য চালু নেই