এবার মৃত সন্তানের লাশ কাঁধে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন দরিদ্র দিনমজুর

ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী যেদিন গরুর জন্য অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করলেন, সেদিনই অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে মৃত সন্তানের লাশ কাঁধে নিয়ে বাড়ি ফিরতে হল এক দরিদ্র দিনমজুরকে।

রাজ্যের এটাওয়ার সরকারি হাসপাতালে ১৫ বছরের গুরুতর অসুস্থ ছেলে পুষ্পেন্দ্রকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন উদয়বীর সিং।

জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে জানান, তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসার প্রয়োজন নেই।

অথচ সে দিনই ‘গো-বংশ চিকিৎসা মোবাইল ভ্যান’ নামে পরিসেবা চালু করে সে অনুষ্ঠানের ছবি নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী দিনেশ শর্মা।

এই পরিসেবার আওতায় আহত ও অসুস্থ গরুকে গোশালা বা পশু চিকিৎসা কেন্দ্রে পৌঁছে দেবে। সঙ্গে একজন পশু চিকিৎসক এবং একজন সহকারীও থাকবেন। চালু হবে গো-সেবা বিনা শুল্কের টেলিফোন নম্বরও।

কয়েকজন স্থানীয় সাংবাদিককে উদয়বীর সিং জানিয়েছেন, ডাক্তার মাত্র ৫ মিনিট দেখেই বলে দিল যে ছেলে মারা গেছে, ওকে নিয়ে যাও।

লাশ নিয়ে যাওয়ার জন্য হাসপাতাল থেকে কোনো অ্যাম্বুলেন্স বা কোনো গাড়ির ব্যবস্থা করে দেয়নি। গাড়ি ভাড়া করার ক্ষমতা ছিল না দরিদ্র ওই দিনমজুরের, তাই বাধ্য হয়েই ছেলের লাশ কাঁধে করে বাড়ি ফিরলেন বাবা।

তবে হাসপাতালটির পরিচালক রাজীব যাদব গণমাধ্যমকে বলেন, সে সময়েই একটা সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

সম্ভবত চিকিৎসকরা তাদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়াতেই ওই কিশোরের জন্য লাশ বহনকারী গাড়ির ব্যবস্থা করা যায়নি। নিঃসন্দেহে এটা লজ্জাজনক ঘটনা। কর্তব্যরত ডাক্তারদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে, তদন্তও শুরু হয়েছে।

এটাওয়ার সরকারি হাসপাতালটিকে রাজ্যের সেরা হাসপাতাল বলে মনে করা হয়। হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধার পাশাপাশি মৃতদেহ বহনকারী গাড়িও রয়েছে বলে দাবি করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সত্যটা এ ঘটনায় প্রকাশ পেল।

উদয়বীর সিং যখন কাঁদতে কাঁদতে ছেলের লাশ কাঁধে বহন করে হাসপাতাল থেকে বের হচ্ছিলেন, তখন কেউ একজন ছবিটা মোবাইলে তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিলে তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পড়ে।

এর আগে উড়িষ্যা রাজ্যে দানা মাঝি নামে এক দরিদ্র ব্যক্তি স্ত্রীর মরদেহ নিয়ে হাসপাতাল থেকে হেঁটে ১২ কিলোমিটার দূরের বাড়িতে ফিরতে বাধ্য হয়েছিলেন লাশবাহী গাড়ি না পেয়ে।

পাশে তার কিশোরী কন্যা কাঁদতে কাঁদতে ফিরেছিল। ওই ছবি সেসময় ভাইরাল হয়ে পড়লে সমালোচনার মুখে রাজ্য সরকার। একই ধরণের ঘটনার খবর অন্য রাজ্য থেকেও পাওয়া গেছে।



মন্তব্য চালু নেই