এবার ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা মহারণ

বিশ্বকাপ শুরুর অনেক আগে অস্ট্রেলিয়া গেছে ভারত। স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে চার টেস্টের সিরিজ খেলার পর অংশ নিয়েছে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টেও। কিন্তু টিম ইন্ডিয়া’র পারফরম্যান্স যারপনারই হতাশ করেছে ভক্ত সমর্থকদের। যেই না বিশ্বকাপ শুরু হলো আর অমনি বদলে গেল মহেন্দ্র সিং ধোনির ভারত। অ্যাডিলেড ওভালে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তানকে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের পরাজয়ের স্বাদ উপহার দিয়ে নিশ্চয়ই আত্মবিশ্বাস দ্বিগুণ হয়েছে কোহিল-রায়নাদের। এই আত্মবিশ্বাস নিয়েই রোববার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে ভারত। হাইভোল্টেজ এই ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল ৯.৩০ মিনিটে।
দক্ষিণ আফ্রিকা এবার বিশ্বকাপে এসেছে ‘চোকার্স’ অপবাদ মুছতে। সেই ১৯৯২ সাল থেকে বিশ্বকাপ শুধু কষ্টই দিয়ে আসছে প্রোটিয়াদের। এবি ডি ভিলিয়ার্সের নেতৃত্বে প্রোটিয়ারা সেই দুঃখ ভুলতে চায়। বিশ্বকাপ শুরুটা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রত্যাশিত জয় দিয়েই হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার। প্রতিবারের মত ক্রিকেট বোদ্ধাদের চোখে এবারও অন্যতম ফেভারিট দক্ষিণ আফ্রিকা। সেটা বাস্তবেও প্রমাণ করতে চায় ভিলিয়ার্সের দল। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ক্রিকেটাররাও বড় আশা করে আছেন এবারই হয়তো আমলা-ফ্যাফ ডু প্লেসিসরা দীর্ঘ আক্ষেপের পাট চুকিয়ে দেবেন। ভারতের সঙ্গে গ্রুপ পর্বের ম্যাচ হলেও এখানকার আত্মবিশ্বাস পরবর্তীতে কাজে লাগবে। একই কথা প্রযোজ্য ভারতের বেলায়ও। টিম ইন্ডিয়া’র ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী যেমনটা বলছিলেন, ‘যত ম্যাচ জেতা যাবে তত জয়ের ক্ষুধা বাড়বে। জয়ই আসলে সবাইকে চনমনে করে তোলে।’ শাস্ত্রীর মতে, ভারতের বোলিং ঠিকঠাক হলে আরও বেশি ম্যাচ জেতা সম্ভব। তিনি বলেন, ‘কম্বিনেশনটা কাজে দিচ্ছে। প্ল্যানগুলো লেগে যাওয়ায় মনে হচ্ছে সব সহজ হয়ে গেছে। এটাই হলো জাদু। আসল জাদু। বোলিং বিভাগ জমে গেলে আশা করি আরও ম্যাচ জিতব।’
সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা দু’দলই খেলেছে এমসিজিতে। গত মাসে এই মাঠেই ১৩৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ঠাণ্ডা মাথার খুনি রোহিত শর্মা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচেও তার ব্যাট থেকে এসেছিল ১৫০। যদিও পাকিস্তানের বিপক্ষে রোহিত সুবিধা করতে পারেননি। কিন্তু জ্বলে উঠতে কতক্ষণ? অন্যদিকে ভিলিয়ার্স তো বটেই, দুরন্ত ফর্মে আছেন ডেভিড মিলার-জেপি ডুমিনিরা। দু’জনই জিম্বাবুয়ের সঙ্গে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। গত বছরের নভেম্বরে এই মাঠেই ৮৮ বলে ৯১ করেছিলেন ভিলিয়ার্স। বল হাতে ডেল স্টেইন, মরনে মরকেল, ভারনন ফিল্যান্ডাররা আগুন ঝরালে তাদের সামলানো কঠিন হয়ে পড়বে ধোনির দলের জন্য। পরিসংখ্যান বলছে, এ পর্যন্ত ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয়েছে তিনবার। সবগুলো ম্যাচই হেরেছে ভারত। যদিও তারা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সবগুলো ম্যাচেই আবার দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে। বিরাট কোহলির চোখে দক্ষিণ আফ্রিকা দলে ব্যাটিং-বোলিংয়ের দারুণ সমন্বয় রয়েছে, ‘ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বের সেরা দলগুলোর একটি। ব্যাটিং এবং বোলিংয়ে দারুণ ব্যালান্সড একটি দল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাদের ফিল্ডিং অনেক উপরে।’
দক্ষিণ আফ্রিকা (সম্ভাব্য): কুইন্টন ডি কক, হাশিম আমলা, ফ্যাফ ডু প্লেসিস, এবিডি ভিলিয়ার্স, ডেভিড মিলার, জেপি ডুমিনি, ফারহান বিহারডিয়েন, ভারনন ফিল্যান্ডার, ডেল স্টেইন, মরনে মরকেল এবং ইমরান তাহির।
ভারত (সম্ভাব্য): শিখর ধাওয়ান, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, আজিঙ্কা রাহানে, মহেন্দ্র সিং ধোনি (অধিনায়ক), সুরেশ রায়না, রবিন্দ্র জাদেজা, মোহিত শর্মা, মোহাম্মদ শামি, উমেশ যাদব এবং রবিচন্দ্র অশ্বিণ।



মন্তব্য চালু নেই