এত মিল!

অভিষেকটা ছিল হতাশার। ওয়ানডে অভিষেকেই ডাক মেরেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে সে ম্যাচে রান আউটে কাটা পড়েছিলেন ভারতের এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান।

অভিষেকটা হতাশার হলেও নিজের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি পেতে বেশি ম্যাচ অপেক্ষা করতে হয়নি ধোনিকে। পরের বছরের এপ্রিলে ঘরের মাঠে নিজের পঞ্চম ওয়ানডেতেই প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ পেয়ে যান। পাকিস্তানের বিপক্ষে সে ম্যাচে চার-ছক্কার বৃষ্টি নামিয়েছিলেন ধোনি।

৮৮ বলে ছুঁয়েছিলেন সেঞ্চুরি, খেলেছিলেন ১২৩ বলে ১৪৮ রানের বিস্ফোরক এক ইনিংস। তার ইনিংসে ছিল ১৫টি চার ও ৪টি ছক্কার মার। আগে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ৩৫৬ রান করা ভারত ম্যাচটি জিতেছিল ৫৮ রানে। ক্যারিয়ারের পঞ্চম আর পাকিস্তানের বিপক্ষে ওটা ছিল ধোনির দ্বিতীয় ওয়ানডে।

ওয়ানডের মতো ধোনির টেস্ট অভিষেকটাও খুব একটা সুখকর হয়নি। ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে চেন্নাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষেক ইনিংসে ৩০ রানের বেশি করতে পারেননি। তবে ওয়ানডের মতো তিনি তার প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিটাও পেয়ে গিয়েছিলেন পঞ্চম ম্যাচেই। আর সেটাও পাকিস্তানের বিপক্ষেই। মজার বিষয়, ওয়ানডের মতো প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির ইনিংসেও ১৪৮ রানই করেছিলেন! এখানেই শেষ নয়। পাকিস্তানের বিপক্ষে এটাও ছিল তার দ্বিতীয় টেস্ট!

তাহলে কী দাঁড়াচ্ছে? ওয়ানডে ও টেস্ট- দুটিতেই ধোনির প্রথম সেঞ্চুরির ইনিংসটি ১৪৮। দুটিই পাকিস্তানের বিপক্ষে। দুটিই ক্যারিয়ারের পঞ্চম ম্যাচ। দুটিই পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ। কত মিল তাই না? ক্রিকেট ইতিহাসে ধোনি ছাড়া আর কোনো ক্রিকেটারের ক্ষেত্রে এমনটা হয়েছে কি না সন্দেহ!

ওয়ানডে ও টেস্টে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিতে এত মিলের অধিকারী ধোনি পরবর্তীতে নিজের ক্যারিয়ার করেছেন আরো সমৃদ্ধ, হয়েছেন ভারতের অন্যতম সফল অধিনায়ক। গত ২৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধোনি ১১ বছর পূর্ণ করেছেন। গত বছরের ডিসেম্বরে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানালেও এখনো টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডেতে খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ধোনি ৯০ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ৩৮.৯ গড়ে সংগ্রহ করেছেন ৪৮৭৬ রান। ছয় সেঞ্চুরির পাশে ফিফটি আছে ৩৩টি। টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ে ভারত প্রথমবারের মতো শীর্ষে ওঠে ধোনির নেতৃত্বেই (২০০৯ সালে)। তার নেতৃত্বেই (২০১১ সালে) দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ ড্র করে ভারত। ভারতকে সবচেয়ে বেশি (২৭টি) টেস্টও জিতিয়েছেন তিনিই।

কম যাননি ওয়ানডেতে কিংবা টি-টোয়েন্টিতেও। ২০০৭ সালে অধিনায়কের দায়িত্ব নিয়েই ভারতকে জিতিয়েছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তার নেতৃত্বেই ২৮ বছর পর (২০১১ সালে) বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত। ধোনি এ পর্যন্ত ২৭০ ওয়ানডেতে ৫২.২৬ গড়ে রান করেছেন ৮৮৩২। ৯টি সেঞ্চুরির পাশে শোভা পাচ্ছে ৬০টি ফিফটি।



মন্তব্য চালু নেই