এটিএম কার্ড জালিয়াতিতে রাঘববোয়ালরা জড়িত

এটিএম কার্ড জালিয়াতির ঘটনায় রাঘববোয়ালদের নাম বেরিয়ে এসেছে। এরা বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তা, আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ী, মানি চেঞ্জিং প্রতিষ্ঠান ও ট্র্যাভেল এজেন্সির মালিক। শুধু এটিএম কার্ড ব্যবহার করে নয়, এরা অন্য উপায়েও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টাকা লুটপাট করেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সিটি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তা ও একজন বিদেশিকে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে রাঘববোয়ালদের নাম বেরিয়ে এসেছে। অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্যও বেরিয়ে এসেছে।

মনিরুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতারকৃতরা রিমান্ডে বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নাম ছাড়াও আবাসিক হোটেল, ট্রাভেল এজেন্সি ও মানি চেঞ্জিং প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সংশ্লিষ্টতার কথা বলেছেন। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়ায় মনে হয়েছে, এটিএম কার্ড জালিয়াতি শুধু একটি খন্ডিত অংশ। এরা ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নানা কৌশলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। গ্রেফতারকৃত পোলান্ডের পিটার জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তিনি চারটি দেশে এ ধরনের কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বাংলাদেশেও অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তবে কোটি টাকা পর্যন্ত হিসাব বলতে পারেন। এরপর আর হিসাব মেলাতে পারেননি।

কীভাবে এসব টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, এককভাবে কেউ টাকা হাতিয়ে নিতে পারে না। এটা ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাউকে ছাড়াও সম্ভব নয়। এখানে ব্যাংকের কর্মকর্তা জড়িত থাকে। এর সঙ্গে মার্চেন্ডাইজার জড়িত থাকে, এরপর ওই ব্যক্তি। এই তিনজন মিলেই মূলত ব্যাংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। তিনটি ব্যাংকের বাইরেও অন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টাকা জালিয়াতি করেছেন তারা। তবে এগুলো এটিএম কার্ড দিয়ে করেননি। এক্ষেত্রে অনেক গোপন তথ্য পাওয়া গেছে। কৌশলগত কারণে এখনই বলা সম্ভব নয়।

মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর ব্যাংকগুলোর বিপুল পরিমাণ আর্থিক ঘাটতি হয়ে থাকে। ঘাটতি কীভাবে হয়? হয়তো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো চুপ থাকে। কিন্তু সারা বিশ্বে প্রতিবছর ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার। এসব টাকা বিভিন্ন চক্র কার্ড ও অন্যান্য জালিয়াতির মাধ্যমে লুট করে থাকেন। বাংলাদেশেও এ রকম হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ব্যাপারটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তারাও টের পান না।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, বাংলাদেশের কার্ড জালিয়াতিতে রুমানিয়া, ইতালি, বুলগেরিয়া, ইউক্রেন ও লন্ডনের নাগরিক ছিলেন। যারা পলাতক রয়েছেন, তাদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশেষ করে রুমানিয়া ও ইউক্রেনের দুই নাগরিককে।



মন্তব্য চালু নেই