এখন শান্তিতে মরতে পারব : মমতা

যে সিঙ্গুর বিক্ষোভের দাবানলে পুড়ে ছারখার হয় পশ্চিমবঙ্গের বাম রাজনীতি, সিঙ্গুরের সিঁড়ি বেয়ে ক্ষমতায় আসেন মমতা ব্যানার্জি, সেই সিঙ্গুর ইস্যুতে শেষ হাসিও হাসলেন তিনি।

সিঙ্গুরে কৃষকের ক্ষতি করে টাটা কোম্পানির ন্যানো গাড়ি তৈরির জন্য তৎকালীন বুদ্ধদেব সরকার জমি অধিগ্রহণ করে। এর বিরুদ্ধে ‘বজ্রপাত আন্দোলন’ গড়ে তোলেন মমতা। তখন তিনি রাজ্যের বিধানসভায় বিরোধীনেতা ছিলেন। এ নিয়ে বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে তাকে। বহুবার রাস্তায় পুলিশের হাতে হেনস্তা হতে হয়েছে।

সিঙ্গুরে সরকারের মাধ্যমে টাটা কোম্পানির জন্য জমি অধিগ্রহণ শুরু হয় প্রায় ১০ বছর আগে। এক দশক পর বুধবার ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছেন জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে। ফলে মমতার রাজনীতির এক অধ্যায়ের পূর্ণতা এলো বলে অনেকে মনে করছেন।

সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণ ‘অবৈধ’ দাবি করে আদালতের শরণাপন্ন হন মমতা ও ভুক্তভোগী মানুষ। রায় তাদের পক্ষেই হয়। কিন্তু সরকার বাদী হয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আপিল করেন। সেখানেও নিষ্পত্তি হয়নি। মামলা শেষ পর্যন্ত গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালতের রায়ে জয়ী হয়েছেন মমতা-ই।

রায়ের পর মমতা বলেন, আবাদি জমি নষ্ট করে, কৃষকদের মেরে সরকার টাটা গ্রুপকে জমি অধিগ্রহণ করে দিচ্ছিল। কিন্তু আমি এর বিরোধিতা করি। তাই বলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখন শিল্পবিরুদ্ধ নয়।

তিনি আরো বলেন, ‘এই রায়ের জন্য আমি দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছি। আমি সিঙ্গুরের মানুষের হয়ে অপেক্ষা করেছি। এখন পেয়েছি। আমি এখন শান্তিতে মরতে পারি।’

২০০৬ সালে বুদ্ধদেবের সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সরকারি হস্তক্ষেপে টাটা গ্রুপকে ১ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করে দেওয়া উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু মমতার তুমুল বিক্ষোভের মুখে তা বাধাগ্রস্ত হয়। ইস্যুটি আদালতে গড়ায় এবং সেখান থেকে শেষ পর্যন্ত নিষ্পত্তি হলো সুপ্রিম কোর্টে।

আগামী ১০ সপ্তাহের মধ্যে যাদের ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, তাদেরকে তা বুঝেিয় দিতে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন। আর যারা জমিবাবদ অগ্রিম টাকা নিয়েছেন, তারাও জমির টাকা ফেরত দেবেন না। কারণ টাকা নেওয়ার ১০ বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে। আদালতের ভাষ্য, যে ১০ বছর কৃষক জমিতে যেতে পারেননি, ক্ষতিপূরণ হিসেবে ওই ১০ বছরের সমান অর্থ দিতে হবে। যা আগেই মীমাংস করা হয়ে গেছে।



মন্তব্য চালু নেই