এখনও বেকার: প্রধানমন্ত্রীকে শিক্ষা জীবনের সব সনদ ফিরিয়ে দিলেন এক যুবক

চাকরি না পেয়ে, কোটা পূরণ না হওয়ার অভিযোগে নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদপত্র ফিরিয়ে দিয়েছেন মাহফুজার রহমান নামে লালমনিরহাটের এক শারীরিক প্রতিবন্ধী।

বুধবার দুপুরে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত একটি আবেদনসহ তার সনদপত্র ফেরত দেন মাহফুজার। জেলা প্রশাসকের অনুপস্থিতিতে অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রেজাউল আলম সরকার সনদগুলো গ্রহণ করেন। মাহাফুজার লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের রতিপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. সৈয়দ আলীর ছেলে।

জানা গেছে, জন্ম থেকেই ডান হাত সম্পূর্ণভাবে অক্ষম মাহফুজারের। উত্তরাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কারমাইকেল কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি। ২০১২ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে প্রতিবন্ধী কোটায় নিয়োগ পরীক্ষা দেন তিনি। লিখিত পরীক্ষায় জেলার ৫টি উপজেলার ৪৫ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হন। উত্তীর্ণদের মধ্যে একমাত্র প্রতিবন্ধী হিসেবে মাহাফুজার উত্তীর্ণ হন। পরে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েও তিনি নিয়োগ পাননি। এরপর সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় এবং বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের লিখিত পরীক্ষায় পাস করার পরও তাঁকে চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর লেখা আবেদনপত্রে মাহফুজার উল্লেখ করেছেন, ওই নিয়োগে প্রতিবন্ধী ছাড়া অন্যান্য সব কোটা পূরণ করে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৪৫ জনের মধ্যে ১৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিবন্ধী কোটা পূরণ করা হয়নি। সে সময় তার বয়স ছিল ৩৩ বছর, বর্তমানে ৩৬ বছর। আবেদনে তিনি আরো জানান, তার ডান হাত অক্ষম হওয়ার কারণে বর্তমানে সরকারি এমনকি বেসরকারি চাকরি পাওয়া সম্ভব নয়। ফলে জীবিকা নির্বাহে তার অন্য কোনো উপায় নেই।

জানা যায়, মাহফুজারের স্ত্রী নাছরিন নাহার লাকিও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী শিক্ষিত বেকার। তাদের দুই বছর বয়সী লামীম নামে এক ছেলে রয়েছে। মাহফুজার রহমান জানান, প্রতিবন্ধী কোটা পূরণ সাংবিধানিকভাবে বাধ্যতামূলক হলেও তার বেলায় সেই আইন মানা হয়নি। এর প্রতিবাদে এবং দেশে যে লাখ লাখ প্রতিবন্ধী রয়েছেন তা‍রা যেন ভবিষ্যতে এই বঞ্চনার শিকার না হন তাই তিনি নিজের সব সনদ ফিরিয়ে দিয়েছেন।



মন্তব্য চালু নেই