এক জায়গায় এগিয়ে বিএনপি….

সরকার পতনের আন্দোলনে দৃ্শ্যত ব্যর্থ হয়ে সিটি করপোরেশন নির্বাচনী লড়াইয়ে নামা বিএনপি একটি দিক থেকে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আইনি বাধায় নির্বাচনী প্রচারে নামতে না পারলেও খালেদা জিয়ার সামনে সে বাধা নেই।

আর এই সুযোগে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৮ এপ্রিলের ভোটের দলের সমর্থিত তিন প্রার্থীদের পক্ষেই ভোট চাওয়া শুরু করেছেন।

অচিরেই তিনি মাঠ পর্যায়ে প্রচারে নামবেন বলেও জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।

বাংলাদেশে শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত। তারা কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে নামলে নির্বাচনী ফল পাল্টে যাওয়াই স্বাভাবিক।

এই অবস্থায় খালেদা জিয়া প্রচারে নামলে বিএনপির জন্য সুবিধা হবে বলে আশা করছেন দলের নেতারা।

ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে বিএনপি তাদের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার জন্য দল সমর্থিত বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীদের মোর্চাকে সামনে রেখেছে। আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের ব্যানারে তাদের প্রচার অবশ্য কতটা প্রভাব ফেলবে সে নিয়ে সংশয় আছে বিএনপিতেই।বিষয়টি কাভার দেয়ার জন্য সর্বশেষ দলের নেতাদেরকে সামনে আনার চেষ্টা চলছে।

এরই মধ্যে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে মওদুদ আহমদ ও হান্নান শাহকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। খুব দ্রুতই মাঠে নামছেন খালেদা জিয়া।

নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী বা সরকারের কাছ থেকে সুযোগ সুবিধা নেন যারা তারা নামনে পারেন না নির্বাচনী প্রচারে। তবে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করায় খালেদা জিয়ার এখন সরকারি কোনো পদপদবী না থাকায় আইনি কোনো বাধা নেই।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবং তার দলের শীর্ষ নেতারাও নির্বাচনে প্রচারণায় অংশ নিতে পারছেন না সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হওয়ায়। এমনকি নির্বাচন প্রসঙ্গে বক্তব্য দিতেও আছে বিধি নিষেধ।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ বলেন, “সরকারি পদপদবী না থাকায় প্রচারণার ক্ষেত্রে আমরা যেমন এগিয়ে আছি, প্রশাসনের হয়রানির কারণে তার চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছি। কারণ এখনো অনেক কাজ নির্বাচন কমিশন নয়, প্রশাসনের নিয়ন্ত্রনে।”

জাতীয় পার্টিও আছে একই ধরনের বিধি নিষেধে। দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। দলের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা যারা মন্ত্রিসভায় আছেন তাদেরও প্রচারণায় অংশ নিতে নিষেধাজ্ঞা আছে।

২৮ এপ্রিলের ভোটকে ঘিরে গত ৭ এপ্রিল থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেন।

বেশ কিছুদিন ধরে গুঞ্জন চলছিল ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চাইতে মাঠে নামছেন খালেদা জিয়া। কিন্তু প্রার্থীদের জামিন না পাওয়া, কাউন্সিলর প্রার্থীরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে এখনো আত্মগোপনে। সে কারণে তিনি (খালেদা)মাঠ গুছিয়ে প্রচারণায় নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে খালেদা জিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণায় নামতে পারেন। সেক্ষেত্রে তিনি ঢাকাতে প্রার্থীদের পক্ষে পথসভায় অংশ নিবেন। আরেক মেয়র প্রার্থী এম মনজুর আলমের পক্ষে ভোট চাইতে চট্টগ্রামেও যেতে পারেন খালেদা জিয়া।

শুক্রবার থেকে বিএনপির শীর্ষ নেতারা টিম করে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে দল সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা নামতে পারেন। এছাড়া ঢাকার দুইভাগের নির্বাচন সমন্বয় করার জন্য দলের দুজন শীর্ষ নেতাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।

খালেদা জিয়ার মাঠে নামার চিন্তাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন ঢাকা উত্তরের আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হক।

জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, গণতন্ত্রের সৌন্দর্যই হলো ক্ষমতাহীনদের বিশেষ সুবিধা। বিএনপি ক্ষমতায় নেই বলে নির্বাচনে অনৈতিক প্রভাব বিস্তারের মতো অবস্থায় নেই। এই অবস্থায় খালেদা জিয়া প্রচারে নামলে সেটা তাদের জন্য সুবিধা।



মন্তব্য চালু নেই