এই ৫টি বাজে অভ্যাস, অবশ্যই ত্যাগ করতে হবে গৃহিণীদের

অনেক নারী বিয়ের পর তাদের ক্যারিয়ারের বদলে মনোযোগ দেন সংসারে। প্রচলিত ধারণায় প্রায়ই এই কথাটা শোনা যায় যে, গৃহিণীরা তেমন কোন কাজ করেন না।

আমরা নিজেরাও নিজের পরিচয়ে বলি, “আমি তো কিছু করি না”! অথচ খেয়াল করে দেখুন, সংসার গুছিয়ে রাখা, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো, খাবার তৈরি, পরিবারের বয়স্কদের খেয়াল রাখা সহ আরো অনেক কাজের চাপে নিজের জন্যই হয়ত ১ মিনিট সময় হয় না আপনার।

পরিবারের কর্মজীবী সদস্যটি হয়ত ৯টা-৫টা ডিউটি করে ফিরে এসে টিভি দেখছেন বা অন্যভাবে নিজেকে সময় দিতে পারছেন। কিন্তু আপনি ঘুম থেকে উঠে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কাজ করেই চলেছেন।

নিজেকে নিজেরই খুঁজে নিতে হবে। আপনার অভ্যাসই হয়ত আপনার ব্যক্তিত্বকে অন্যের সামনে ছোট করছে, আবার ডেকে আনছে কিছু স্বাস্থ্যঝুকিও। নিজেকে ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নারী হিসেবে দাঁড় করাতে আজই ত্যাগ করুন এই বদভ্যাস গুলো।

১। বাসি খাবার খাওয়া-
অনেক যত্ন করে রোজ রান্না করেন আপনি। তাজা খাবারগুলো তুলে দেন স্বামী-সন্তানের খাবারের প্লেটে। কিন্তু নিজের জন্য রোজই বেছে নেন আগের দিনের ফ্রীজে থাকা মাছের তরকারি বা সবজি।

তাজা খাবার যেমন পরিবারের অন্যদের প্রয়োজন, তেমনি আপনারও প্রয়োজন। আপনি হয়ত ভাবছেন, “রোজই তো মাছ মাংস খাই, শাকসবজি খাই, তবু কেন শরীর খারাপ হয়?

আসলে আগের দিনের বাসি খাবার যখন গরম করা হয় তখন অধিকাংশ পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। এটি দীর্ঘসময়ে আপনাকে রক্তশুন্যতা, অপুষ্টিসহ নানা শারিরিক সমস্যায় ফেলতে পারে।

২। সবার সব কাজ করে দেওয়া-
পরিবারের সকল সদস্যের উচিৎ নিজের কাজ নিজে করা। বিয়ে করে এই পরিবারে আসার আগে আপনার স্বামী কিন্তু নিজেই তৈরি হয়ে অফিস যেতেন।

আপনার শ্বাশুড়ি নিজের ওষুধ নিজেই মনে করে খেতেন। তাদের সে অভ্যাস বদলাবেন না। আপনি যদি কোন একসময় আবার নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহলে আপনার উপর সকলের এই নির্ভরতাই হয়ে উঠবে প্রধাণ বাঁধা।

আপনার শিশুদের ছোটবেলা থেকে নিজের ঘর নিজে গোছাতে শেখান। এতে আপনার একটি আলাদা ব্যাক্তিত্ব তৈরি হবে।

৩। ঘরের পোশাকে বেড়িয়ে পড়া-
বাচ্চাকে স্কুল থেকে আনতে বা ছোটখাট কোন কাজে আপনি হয়ত ঘরের পোশাকেই বেড়িয়ে পড়ছেন। ভাবছেন, “যাব আর আসব, কি হবে!”

এটি অন্যদের সামনে আপনার ব্যাক্তিত্বকে খাটো করছে। আপনার বাচ্চারাও পছন্দ করবে না তাদের বন্ধুদের সামনে বা বন্ধুদের মায়েদের সামনে আপনাকে এলোমেলো অবস্থায় দেখতে।

আর যদি স্কুলের শিক্ষকের সাথে হঠাৎ দেখা হয়ে যায়? মনে রাখবেন, পোশাক দিয়েই হয় প্রথম পরিচয়!

৪। আশপাশের খবর না রাখা-

ঘরের কাজ করতে করতে আপনি হয়ত সময়ই পান না খবরের কাগজ পড়ার বা টিভিতে নিয়মিত সংবাদ দেখার। এটি একটি মারাত্মক ভুল।

দেশে বিদেশে কি হচ্ছে তার খোঁজ রাখা খুবই জরুরি। আপনি যত জানবেন তত আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। আর অফিসফেরত আপনার জীবন সঙ্গীর সাথে চাল, ডাল, বাজার সদাই এর বাইরে কথা বলার বিষয়ও বাড়বে।

বন্ধুদের মাঝে আপনার বিচরণ হবে আরো উজ্জ্বল। তাই প্রতিদিন অন্তত আধ ঘন্টা সময় বের করে নিন। খবরের কাগজ পড়ুন, দেখে নিন টিভী সংবাদ।

গল্পের বই, ভ্রমণ কাহিনী, আত্মজীবনীও হতে পারে আপনার অবসরের সঙ্গী।

৫। উপার্জন করুন-
আপনি হয়ত রাঁধতে ভালোবাসেন। দৈনন্দিন রান্নার সাথে এমন কিছু রান্না করে ফেলুন যা বিক্রয়যোগ্য। যেমন: আচার, ড্রাই ফুড, পেস্ট্রি।

আবার হয়ত টুকটাক হাতের কাজ জানেন আপনি। পোশাকে নকশা করুন, ঘর সাজানোর জিনিস তৈরি করুন। এখন অনলাইনেই বিভিন্নরকম ব্যাবসার সুযোগ রয়েছে ঘরে বসে।

নিজের হাতখরচটা অন্তত নিজে আয় করুন। সবার চোখে বেড়ে যাবে আপনার সম্মান। আত্মবিশ্বাসও বাড়বে বহুগুণে।

নিজেকে গৃহিণী নয়, গৃহকর্ত্রী ভাবুন। সবার মাঝে তুলে ধরুণ আপনার অনন্য বৈশিষ্ট্য। আপনার আত্মবিশাসই আপনাকে দেবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা, অন্যরা দেবে সম্মান, মতামতের গুরুত্ব।



মন্তব্য চালু নেই