এই লেখাটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মেয়েদের জন্য…

অনলাইনে নিজেরা নিরাপদে থাকতে, পরিবার এবং কাছের মানুষদের নিরাপদে রাখতে লিখাটি পড়ুন একইসাথে সবাইকে সচেতন করুন।

বাস্তব ক্ষেত্রে যেখানে মেয়েরা প্রায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাধা এবং ঝুঁকি নিয়ে চলে, অনলাইনে তার থেকেও বড় ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হয়।
বাস্তব ক্ষেত্রে অনেকটাই সামাল দেওয়া সম্ভব হয়, কিন্তু অনলাইনে যে ধরণের হ্যারাজমেন্টের মুখোমুখি মেয়েরা হচ্ছে, সেগুলো সামাল দেওয়া অনেক কঠিন। কারন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আইডেন্টিটি পাওয়া যায়না।

কিছুদিন আগে লিস্টের এক ছোট বোনের ছবি নিয়ে নোংরা ছবির সাথে এ্যাড করে ইন্টারনেটে ছড়ানো হয়েছে। শুধু ও নয়, এরকম ভিক্টিম আরো অনেক মেয়েই আছে। ভয়ানক ব্যাপার হলো, সেই মেয়েগুলো এমন কি জানেও না যে তার ছবিটা নোংরা পেজের নোংরা ছবির সাথে জুড়ে দেওয়া হয়েছে! তাই নিজে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হবার আগেই সতর্ক হোন। পোস্ট টিতে অনলাইনে নিরাপদ থাকার জন্য কিছু আইডিয়া শেয়ার করেছি। ফলো করলে ঝুঁকির মাত্রা অনেকটাই কমাতে পারবেন এবং নিরাপদে থাকতে পারবেন এতে সন্দেহ নেই।

ডিএসএলআর এর ঝকঝকে ছবি দিয়ে “আপু খুব কিউট লাগতেছে, হট লাগতেছে, জোস লাগতেছে” টাইপ কমেন্ট পেতে অনেকের ই খুব ভাল লাগে।
লাইক-কমেন্টের চেয়ে নিজের সম্মান এবং নিরাপত্তাকে আগে প্রাধাণ্য দিন। নয়তো নিজের নির্বুদ্ধিতার জন্য পরে হাজার কেদেও লাভ হবেনা।

#সতর্কতা_একঃ
অনলাইনে ছবি আপলোড দেবার সময় ছবির কোয়ালিটি এবং রেজ্যুলিশন যতটা সম্ভব কমিয়ে দিন। মূলত ভাল রেজ্যুলিশন এবং ভাল কোয়ালিটির ছবিগুলো এডিট করা সহজ, কিন্তু ছবির কোয়ালিটি খারাপ হলে সেটাকে এডিট করে নোংরা ছবির সাথে জুড়ে দেওয়া অনেক কষ্টসাধ্য এবং কঠিন। ছবির কোয়ালিটি এবং রেজ্যুলিশন কমানোর জন্য অনেক স্মার্টফোনেই এডিটের অপশন থাকে, পিসির জন্য Riot নামের ছোট্ট সফটওয়্যার টি ব্যবহার করতে পারেন।

#সতর্কতা_দুইঃ
ছবি আপলোডের সময় সম্ভব হলে প্রাইভেসি সেটিংস অনলি মি অথবা ফ্রেন্ডস দিয়ে রাখুন। এতে ফ্রেন্ডলিস্টের বাইরের কেউ আপনার ছবি ওপেন করতে পারবেনা, ফলে সেটা মিসইউজ হবার সম্ভাবনা কমে যাবে। যারা নোংরা পেজ চালায়, এরা দেখতে সুন্দর এমন মেয়েদের প্রোফাইলে গিয়ে পাব্লিক করে রাখা ছবিগুলো ডাউনলোড করে ব্যবহার করে। সো প্রাইভেসি সেটিংস ইউজ করুন, নিরাপদ থাকার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলুন।

#সতর্কতা_তিনঃ
লাইক-কমেন্ট বেশি পাবার জন্য গণহারে সবাইকে এ্যাড করবেন না। কারন কে যে বন্ধুবেশে আপনার প্রোফাইলে ঘাপটি মেরে থাকবে এবং আপনার যাবতীয় ছবি এবং তথগুলো নিয়ে মিসইউজ করবে সেটা আপনি জানতে পারছেন না। তাই বন্ধু নির্বাচনে খুব সতর্ক থাকুন।

#সতর্কতা_চারঃ
ইনবক্সে কখনো কাউকে লুতুপুতু মার্কা ব্যক্তিগত ছবি দিবেন না, সে যতই বিশ্বাসযোগ্য হোকনা কেন। তার সাথে আজ সম্পর্ক ভাল আছে, কাল তো নাও থাকতে পারে। যখন সম্পর্ক ভাল থাকবেনা তখন সে আপনার ছবিগুলো নিয়ে মিসইউজ যে করবেনা তার গ্যারান্টি কি?

#সতর্কতা_পাচ
স্কাইপ এবং ভাইবার এ ভিডিও চ্যাটের সময় শালীনতা বজায় রাখুন। কারন ভিডিও চ্যাট অডিও সহ রেকর্ডের জন্য সফটওয়্যার আছে। কেউ আপনার অসতর্ক কোনো মূহুর্ত ভিডিও সহ রেকর্ড করছে কিনা সেটা তো আপনি জানতে পারছেন না, সো বি কেয়ারফুল।

#সতর্কতা_ছয়ঃ
হোয়াটসএ্যাপ/উইচ্যাট এ ব্যক্তিগত ছবি আদান-প্রদান থেকে বিরত থাকুন। বয়ফ্রেন্ডের বা মনের মানুষ টির সাথে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে যদি ব্যক্তিগত ছবি দিতে হয়, সে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। ওরকম বয়ফ্রেন্ড থাকার চেয়ে না থাকাই ভাল।

#সতর্কতা_সাতঃ
নিজের ছবি গুলো নিয়ে এক এক করে গুগল ইমেজ সার্চ করে দেখুন। আপনার ছবি যদি কোনো নোংরা পেজ বা সাইটে শেয়ার করা হয়ে থাকে, তাহলে সেটা গুগলের রেজাল্ট দেখেই জানতে পারবেন।

অনলাইনে নিরাপদে থাকতে হলে সচেতন এবং সতর্ক হবার কোনো বিকল্প নেই। তাই বিপদের মুখোমুখি হবার আগেই সতর্ক হোন এবং সচেতন থাকুন।
শুভ কামনা রইলো সকল বোনের জন্য।

ভাবনা- মাহাবুব হাসান



মন্তব্য চালু নেই