এই মুহূর্তে হলিউডের সবচেয়ে ক্ষমতাবান ২০ তারকা

বক্সঅফিসে সিনেমা তারকাদের নির্ভরযোগ্যতা সাম্প্রতীক বছরগুলোতে কমে এসেছে। আর ঐতিহ্যগত ট্যাগ সিস্টেম এখন আর তারক্যাখ্যাতি অর্জনে কার্যকর নেই।

বিজনেস ইনসাইডার দ্বিতীয়বারের মতো এবছরও বিশ্বের শীর্ষ বিনোদন জগত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হলিউডের সবচেয়ে ক্ষমতাবান তারকাদের তালিকা করেছে। এরা শুধু উপার্জনের দিক থেকেই এই মুহূর্তের সবচেয়ে ক্ষমতাবান তারকা নন বরং সবচেয়ে দৃশ্যমান, সবচেয়ে আলোচিত এবং সবচেয় চাহিদাপূর্ণও বটে।
এবারের তালিকায়ও নোয়েল বিয়ন্সে প্রথম স্থানটি দখল করেছেন। আর তিনি জনগনকে শুধু তার প্রতিটি পদক্ষেপের প্রতিই আগ্রহী রাখতে সক্ষম নন বরং তার চেয়েও বেশি কিছু করার ক্ষমতা ধারন করেন। হোক তা রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত কোনো “ভিজ্যুয়াল অ্যালবাম” বা নিজেকে তিনি যেরকম সাবধানে সংকলিত উপায়ে অনলাইনে হাজির করেন সেটা। ২০১৬ সালে তার মতো আর কোনো তারকাই এতো বেশি মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেননি।
২০১৬ সালের সবচেয়ে ক্ষমতাবান হলিউড তারকারা হলেন:
২০. মারগোট রবি
২০১৬ সালে রবির বক্স অফিস সাফল্য ছিল অতুলনীয়। ডিসি কমিকস এর হার্লি কুইন চরিত্রটি “সুইসাইড স্কোয়াড” সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় নিয়ে আসার মাধ্যমে তিনি সকলের প্রিয়ভাজন হয়ে ওঠেন।
১৯. অ্যাডাম ড্রাইভার
গত বছর “দ্য ফোর্স এওয়েকেনস” এ কাইলো রেন চরিত্রে অভিনয় করে চমৎকৃত করেছেন। আর এ বছর তিনটি ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে নিজের বৈচিত্র প্রদর্শন করেছেন।
“মিডনাইট স্পেশাল” এ উত্তর অুনসন্ধানী বিজ্ঞানী, “প্যাটারসন” এ কবিতা লেখতে পছ্ন্দকারী বাস ড্রাইভার এবং “সিক্সটিন হানড্রেডস জাপান” এ খ্রিস্টান ধর্ম প্রচারকারী এক পাদ্রী হিসেবে তিনি অনবদ্য অভিনয় করেছেন। ঘরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তার কবিতাপ্রেমি বাস ড্রাইভারের চরিত্রটি।
১৮. মিলি ববি ব্রাউন
১২ বছরের অচেনা অভিনেতা ২০১৬ সালের সবচেয়ে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন নিটফ্লিক্স হিট “স্ট্র্যাঞ্জার থিংস”-এ তার অনবদ্য অভিনয়ের মধ্য দিয়ে।
১৭. চান্স দ্য র্যাপার
পপ সংস্কৃতির জগতে আর কেহই এবছর চান্স দ্য র‌্যাপারের মতো করে ছাপ ফেলতে পারেননি। তিনি প্রমাণ করেছেন প্রচলিত বিতরণ পদ্ধতি ছাড়াই তিনি প্রচুর সংখ্যক শ্রোতা আকর্ষণ করতে সক্ষম। এখন তিনি কেনি ওয়েস্ট এবং ম্যাডোনার মতো নাইকির সঙ্গে অংশীদারি ভিত্তিতে কাজ করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এমনকি তার নতুন অ্যালবাম “দ্য কালারিং বুক” যেন মনোনীত হতে পারে সেজন্য তিনি গ্র্যামির নিয়মও বদলে দিয়েছেন।
১৬. কেট ম্যাককিনন
“স্যাটারডে নাইট লাইভ” এর অনুসারিরা এই স্কেচ কমেডি শো তারকাকে ভালোবাসেন অনেক আগে থেকেই। কিন্তু তিনি আরো বেশি খ্যাতি অর্জন করেছেন, তার সর্বনারী চরিত্রের সিনেমা “ঘোস্টবাস্টারস” এবং “এসএনএল” এর হিলারি ক্লিনটনের চরিত্রটি দিয়ে।
১৫. ডোনাল্ড গ্লোভার
বহুল প্রশংসিত টিভি শো “আটলান্টা” এর স্রষ্টা এবং তারকা হিসেবে গ্লোভারের প্রতিভার বিশাল বিবর্তন ঘটেছে। আর আসন্ন হ্যান সলো সিনেমায় ল্যান্ডো ক্যালরিসিয়ান নাম ভুমিকায় তার কাস্টিংয়ের মধ্য দিয়ে তিনি আরো প্রচুর সংখ্যক নতুন ভক্ত জুটিয়েছেন।
১৪. লিন-ম্যানুয়েল মিরান্ডা
২০০৮ সালে মিউজিক্যাল “ইন দ্য হেইটস” এর জন্য টনি জয় করে জনপ্রিয় হন মিরান্ডা। আর এবার “হ্যামিল্টন”-এ অনবদ্য অভিনয় করে তিনি বিনোদন জগতের সবচেয়ে আকাঙ্খিত প্রতিভায় পরিণত হয়েছেন। এবার এই শো ১১টি টনি পুরস্কার জিতেছে। যা তাকে নতুন ধরনের তারকাখ্যাতি এনে দিয়েছে। তিনি হোয়াইট হাউসে র‌্যাপ করা থেকে শুরু করে ডিজনির “মোয়ানা” হিট করানোর জন্য গান লেখার মতো কাজও করেছেন।
১৩. এলেন ডিজেনারস
এলেন সবসময়ই আমেরিকানদেরকে হাঁসিয়ে আসছিলেন। এরপর তিনি দিনের বেলার টিভির রানীতে পরিণত হন। তার বাৎসরিক বেতন ধরা হয় ২০ মিলিয়ন ডলার। হিলারি ক্লিনটন, কেনি ওয়েস্ট বা জাস্টিন বিবারের মতো এ তালিকার অতিথিদের নিয়ে নড়া-চড়া করেছেন তিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার তাকে প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম দিয়ে জাতীয় সম্পদের রুপান্তরিত করেছে।
১২. “দ্য গেম অফ থ্রোনস” তারকারা
“দ্য গেম অফ থ্রোনস” তারকারা “বিগ ব্যাং থিওরি” থেকে কিছু একটা শিখেছেন বলেই মনে হয়। এই মহাকাব্যিক টিভি শোর তারকাদের প্রত্যেকে- পিটার ডিঙ্কলেজ, লেনা হেডি, কিট হ্যারিংটন, এমিলিয়া ক্লার্ক এবং নিকোলাজ কস্টার-ওয়ালদু- প্রতি এপিসোডে পাঁচ লাখ মিলিয়ন ডলার করে পেয়েছেন।
১১. “দ্য বিগ ব্যাং থিওরি” তারকারা
টিভির সবচেয়ে জনপ্রিয় সিচুয়েশন কমেডিয়ান হওয়ার সুবাদে আপনি অনেক সুবিধা পাবেন। সিবিএস এর “বিগ ব্যাং” এর তারকারা- জিম পারসনস, জনি গ্যালেকি এবং ক্যালেই কিউকো- প্রতি এপিসোডের জন্য ১০ লাখ ডলার করে নিয়েছেন। টিভিতে যা সর্বোচ্চ মজুরি।

১০. রায়ান রেনল্ডস
শো বিজনেসে টেকসই ক্ষমতা অর্জনে যে স্বপ্নবাজ হতে হয় তা তিনি প্রমাণ করেছেন ব্লকবাস্টার হিট “ডেডপুলে” অনবদ্য অভিনয়ের মাধ্যমে।
৯. কেনি ওয়েস্ট
“দ্য লাইফ অফ পাবলো” অ্যালবামের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী অপ্রত্যাশিত এবং বিপুল সাঁড়া পেয়েছেন। এর ফলে অ্যাডিডাস এর পোশাক ব্যবসাকে পরের ধাপে উন্নীত করছে। হলিউডের বেশিরভাগ শুধু যা স্বপ্ন হিসেবে দেখতে পারেন কেনির তা উপার্জনের সক্ষমতা রয়েছে।
৮. টেইলর সুইফট
গত এক বছরে নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এখনো পপ সংস্কৃতির কেন্দ্রে আছেন টেইলর সুইফট। ইন্টারনেটে বিতর্ক উঠেছে তার ব্যক্তিগত জীবনের সিদ্ধান্তগুলোই তার এক মহা মিউজিক-ভিডিও পরিকল্পনার অংশ কিনা। আসলে আমাদেরকে তিনি নিজের সম্পর্কে যতবেশি অনুমানে ব্যস্ত রাখবেন ততই তিনি জয়ী হতে থাকবেন।
৭. জাস্টিন বিবার
কোনো গায়কই একক শিল্পী হিসেবে এবছর বিবারের চেয়ে বেশি শক্তিমত্তার পরিচয় দিতে পারেননি। “পারপোজ” অ্যালবামের নানা গান দিয়ে তিনি বারবার শীর্ষ ১০০ চার্টে স্থান করে নিয়েছেন। যার মাধ্যমে তার শ্রোতাদের ব্যাপ্তি চিৎকারকারী কিশোরীদের ছাড়িয়ে আরো বিস্তৃত হয়। আর এর প্রমাণ হলো, সফরে গিয়ে যে গাদা গাদা নগদ অর্থ উপার্জন করছেন তিনি সেসব।
৬. অ্যাডেলে
এখনো গত বছর প্রকাশিত অ্যালবামের সাফল্যে ভাসছেন অ্যাডেলে। যা এখনো বিলবোর্ডের বছর শেষের চার্টে শীর্ষে রয়েছে। আর ২০১৭ সালে তিনি নৌকাভর্তি গ্র্যামি ঘরে আনবেন যদিনা বিয়ন্সে তার সব বজ্রধ্বনি হাসিল করে নেন।

৫. ক্রিস প্র্যাট
“জুরাসিক ওয়ার্ল্ড” এর পর “গার্ডিয়ান অফ দ্য গ্যালাক্সি” দিয়ে ২০১৫ সালে প্র্যাট নিজেকে খাঁটি জিনিস হিসেবে প্রমাণিত করেছেন। এবং এরপর থেকে তিনি আমেরিকার সুইটহার্টে পরিণত হয়েছেন। এই অভিনেতা যিনি কমেডি বা ড্রামা সবকিছুতেই খুব সহজে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেন। ৯০-র দশকে জুলিয়া রবার্টস যে অবস্থানে ছিলেন পুরুষ হিসেবে তিনিও এখন তেমনই এক অবস্থানে আছেন। নির্মাতারা এখন তাদের পরবর্তী প্রকল্পে তাকে যুক্ত কারার জন্য মুখিয়ে আছেন।
৪. জেনিফার লরেন্স
হলিউড এখনো তাকে নিয়ে আগের মতোই স্বপ্নবিলাসী। তার নিজের প্রজন্মের সবচেয়ে বিখ্যাত সিনেমা তারকা তিনি। যার বয়স মাত্র ২৬। তিনি হয়ত সম্প্রতি খুব বেশি সিনেমাতে অভিনয় করেননি। কিন্তু ক্রিস প্যাটের সঙ্গে একটি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীমূলক রোমান্সই তার জন্য যথেষ্ট। এছাড়া তিনি মজুরির ক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্য এবং অন্যান্য ইস্যুতেও আলাপ শুরুতে ভুমিকা পালন করেও বিখ্যাত হয়েছেন।
৩. ড্রেক
হিপ-হপের রাজা কে তা নিয়ে আর দীর্ঘমেয়াদি কোনো বিতর্কের অবকাশ নেই। একমাত্র অ্যাডেলে এবছর বেশি রেকর্ড বিক্রি করেছেন। কিন্তু ড্রেক তার নতুন অ্যালবামের গানগুলোর সকলকে টপ চার্টে স্থান পাইয়ে দিয়েছেন। আর তিনি যে গানে আছেন সেটি অনলাইন স্ট্রিমিংয়ের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। পরের দশকে গান সঙ্গীত কোথায় যাবে তার এজেন্ডা স্থাপন করে দিচ্ছেন। আর তিনি রিহান্নাকে বছরের সবচেয়ে বড় গানগুলোর একটিতে সহায়তা করেছেন। আপনি যদি ২০১৬০-তে তার গান না শুনে থাকেন তাহলে আপনি নতুন সঙ্গীত কাল শুনেননি।
২. ডোয়েন “দ্য রক” জনসন
একসময়ের রেসলিং তারকাই এখন বিশ্বের শীর্ষ উপার্জনকারী অভিনেতা। হলিউডে এর চেয়ে বেশি সাফল্যের কোনো গল্প দ্বিতীয়টি খুঁজে পাওয়া মুশকিল হবে। তিনি তার প্রতিটি প্রকল্প প্রযোজনা এবং এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি অভিনয় করার জন্যও আরো বেশি বেশি মুখিয়ে থাকেন। এখন তার হাতে থাকা প্রকল্পগুলো হলো- “মোয়ানা”, “ব্যালার্স” এবং “ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস” এর সিক্যুয়েল। অসাধারণ মুচকি হাসি সহ তিনি সব এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
১. বিয়োন্সে
তিনি ২০১৬ সালে শুধু সাফল্যই অর্জন করেননি। বরং ইতিহাসে নিজের ছাপ রেখে গিয়েছেন। একাধিক উপায়ে। “লোমোনেড” শুধু একটি মহা অ্যালবাম, মহা সিনেমা হিসেবে নয় বরং সঙ্গীতের ভবিষ্যত পথপ্রদর্শক জিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এতে কৃষ্ণাঙ্গ ও বর্ণবাদ ইস্যুকে তুলে ধরেছেন সুচারু রুপে।
তার “ফরমেশন” ভিডিও এবং এতে তার অভুতপূর্ব পারফর্মেন্স তার লাখ লাখ ভক্তকে শিহরিত করেছে। যারা তার সঙ্গীত তৎপরতাকে পুলিশ-বিরোধী তকমা দিয়েছেন তার এতে বেশ পীড়া বোধ করেছেন হয়তো।
২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো তার ব্যাপারেও সকলেই একটি মত দিয়েছেন। আর এর রয়েছে এক অনস্বীকার্য নিজস্ব ক্ষমতা।

সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার



মন্তব্য চালু নেই