এই প্রথম তারবিহীন সিসি ক্যামেরার আওতায় আসছে ঠাকুরগাঁও

শরিফুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : দেশে জেলা শহর হিসেবে ঠাকুরগাঁও এই প্রথম নিয়ন্ত্রণে আসছে একশো ভাগ তারবিহীন সিসি ক্যামেরার। আইন- শৃঙ্খলা বাহিনীর এ উদ্যেগকে এরই মধ্যে সাধুবাদ জানিয়েছে জেলার সর্বস্তরের মানুষ।

জানা গেছে, দৃশ্য, সুস্পষ্ট নাইট ভিশন ও সুবিশাল মেমরি স্টোরেজসহ ৫৬টি আইপি ক্যামেরার সমন্বয়ে তারবিহীন এ নেটওয়ার্ক এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়।

শহরের চৌরাস্তার এক দোকানি জানান, সম্প্রতি জুয়েলার্সের দোকানে বোমা ফাটিয়ে ডাকাতি করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার সোনা দুর্বৃত্তরা লুট করে নিয়ে যায়। কিন্তু পুলিশ এখনো পর্যন্ত তাদের ধরতে পারেনি। শহর যদি সিসি ক্যামেরার আওতায় আসে, তবে যে কোনো ঘটনা এ ক্যামেরায় ধরা পড়বে। ফুটেজ দেখে দোষীদের শনাক্ত করাও সম্ভব হবে।

শিক্ষাবিদ মনতোষ কুমার দে বলেন, “সময় যত যাচ্ছে, দেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে তত এগিয়ে যাচ্ছে। এ শহরই প্রথম সম্পূর্ণ সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে। এ কারণে যে কেউ অপরাধমূলক কাজ করতে ভয় পাবে। যদি কোথাও তা ঘটে, তবে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারবে। সরকার পুরোদেশেই যদি এ পদক্ষেপ নিতে পারে,তবে দেশে অপরাধ কমে আসবে।” শহরের ব্যবসায়ী সামশুল হক বলেন, “ঠাকুরগাঁওয়ে প্রচুর মোটরসাইকেল চুরি হয়। কিন্তু পুলিশ কাউকে সরাসরি ধরতে পারেনি। এখন সিসি ক্যামেরার কারণে মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের অপরাধ কমে যাবে।”

স্থানীয় সিরাজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, “সম্প্রতি এ জেলায় সংঘাত বেড়ে গেছে। কোথাও মিছিল মিটিং হলেই সংর্ঘষ বাধে। কিন্তু পুলিশ তাদের চিনতে না পারায় আইনের আওতায় আনতে পারে না। শহর এখন সিসি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে, তাই সংর্ঘষসহ যেকোনো অপরাধমূলক কাজ কমে যাবে। ফলে শান্তিতে চলাফেরা করতে পারব সাধারণ মানুষ।” জেলা পুলিশ সুপার ফারহাত আহম্মেদ বলেন, “আইন- শৃঙ্খলা বাহিনীকে ত্বরান্বিত করতে সরকার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আশা করি, আগের থেকে সব অপরাধ কমে আসবে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ আসামিদের সহজেই শনাক্ত করতে পারবে।”

তিনি আরো বলেন, “অপরাধী ও সাধারণ মানুষ যখন জানবে শহর সিসি ক্যামেরার আওতায়, তখন এমনিতেই অনেক অপরাধ কমে আসবে। এছাড়াও বড় বড় সভা, সেমিনার ও অনুষ্ঠানগুলো অস্থায়ী সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে আমরা সফল হয়েছি। এর মধ্যে ২১ ফেব্রুয়ারি শহিদ মিনারে ফুল দেয়া ও গড়েয়া ইস্কন মন্দিরের অনুষ্ঠান অস্থায়ী সিসি ক্যামেরার আওতায় এনে সাফল্যর সাথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি।”

পুলিশ সুপার ফারহাত আহম্মেদ বলেন, “এখন থেকে যেসব অনুষ্ঠান বা সভা-সেমিনার ঝুকিপূর্ণ মনে হবে, আমরা সেগুলো সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসবো।” জেলা প্রশাসক মুকেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “সময়ের সাথেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য এরই মধ্যে অনেকটা সফল। তাই দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য বিভিন্ন স্থান তারবিহীন সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।” তিনি আরো বলেন, “দশ বছরে প্রযুক্তির দিক থেকে ঠাকুরগাঁও অনেকটা এগিয়ে রয়েছে। তাই এ উদ্যোগের জন্য সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।



মন্তব্য চালু নেই