এই না হলে জেলা প্রশাসক

ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মো. শফিকুল ইসলাম। এখনো প্রতিদিন যান স্কুলে। নিজের দাপ্তরিক কাজ শেষে সকালে অথবা বিকেলে, শহরে অথবা প্রত্যন্ত পল্লীর স্কুলে যান তিনি।

শুধু নিজেই যান না সঙ্গে নেন তার স্ত্রীকেও। তবে ক্লাস করার জন্য নয়, স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে শৃঙ্খলা ফেরাতে, শিক্ষকদের নিয়মিত পাঠদান করানোর মানসিকতা সৃষ্টির লক্ষ্যেই তিনি স্কুলে যান। স্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন। নানা সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। তবে কঠোর হন শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস ও জুতা পরে আসার। তার কড়া নির্দেশ প্রতিটি শিক্ষার্থী স্কুলের ড্রেস ও জুতা পড়ে আসতে হবে। ক্লাস শুরু হওয়ার আগে নিয়মিত পিটি-প্যারেড করতে হবে।
স্কুলের শিক্ষকরা ভয়ে ভয়ে থাকেন। কখন যেন জেলা প্রশাসক চলে আসেন।

জেলা প্রশাসকের এ কাজে যেমন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফিরেছে শৃঙ্খলা তেমনি শিক্ষকদেরও নিয়মমাফিক স্কুলের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। কোনো শিক্ষক যদি কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত থাকেন তার বিরুদ্ধের ব্যবস্থা নেন জেলা প্রশাসক। প্রাইভেট ও কোচিং বাণিজ্য বন্ধে জেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে মিটিং করেছেন তিনি।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাটগোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউসুফ আলী জানান, জেলা প্রশাসক প্রতিদিন জেলার কোনো না কোনো স্কুল পরিদর্শন করেন। সেখানে যদি কোনো অনিয়ম হয় তাহলে তার জবাবদিহিতা করতে হয়। তার এ কাজে জেলার শিক্ষার মান উন্নত হচ্ছে।

শৈলকুপা উপজেলার বেনীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অ্যাড. সালাহ উদ্দিন জোয়ার্দ্দার মামুন জানান, জেলা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আমাদের এ বিদ্যালয়ে জেলা প্রশাসক হঠাৎই পরিদর্শন করেন। কোনো প্রকার যোগাযোগ না করেই তিনি পরিদর্শনে চলে আসেন। এতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন আর প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেন স্কুলের পূর্ণ শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে। তার এ উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই।Jhenidah-dc-photo-28-3-15-(2)

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, প্রতিটি শিক্ষার্থীর স্কুল ড্রেস পড়া বাধ্যতামূলক। তদারকি না করায় এ নিয়ম অনেক সময় মানা হতো না। তাই স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক বিভেদ শুরু হচ্ছিল। কে বড়লোক বা কে গরীব তা তার পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। স্কুলে সবাই সমান। এর কোনো ব্যতিক্রম ঘটলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কোচিং ও প্রাইভেট বাণিজ্য বন্ধে প্রশাসন কঠোর ভূমিকায় রয়েছে। কোনো বিদ্যালয়ের শিক্ষক যদি এর সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর জেলার শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকদের সঙ্গে সঙ্গে জেলা প্রশাসন সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। সকলের সহযোগিতা পেলেই সারা বাংলাদেশের মধ্যে ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি মডেল জেলা হিসেবে পরিণত হবে।



মন্তব্য চালু নেই