উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় নকলও উন্মুক্ত!

পিরোজপুরের নাজিরপুরে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষকদের সহায়তায় প্রকাশ্যে চলছে নকলের মহোৎসব। শিক্ষার্থীদের নকলের সুবিধা দিতে শিক্ষকরা প্রতিজনের কাছ থেকে বিষয় প্রতি আদায় করেছেন পাঁচশ টাকা।

ওই কলেজের সমাজকল্যাণ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বালী, ইংরেজি বিভাগের ইব্রাহীম শেখ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাধবচন্দ্র মণ্ডল ও অফিস সহকারী মো. এনামুল করিম মিলনের নেতৃত্বে এ টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে শিক্ষার্থীরা জানান।

তবে দুই শিক্ষক টাকা আদায়ের কথা অস্বীকার করলেও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মাধবচন্দ্র মণ্ডল জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বকেয়া টাকা আদায় করা হচ্ছে।

উপজেলা সদরের নাজিরপুর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের এইচএসসিতে ১৩০ ও ডিগ্রিতে ১৬০ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রতি পরীক্ষায় প্রায় দেড় লাখ টাকা করে আদায় হচ্ছে।

শুক্রবার সকালে অনুষ্ঠিত স্নাতক শ্রেণীর ইসলামিক স্টাডিস প্রথম বিষয়ের পরীক্ষার্থী উপজেলার আব্দুল্লাহ জানান, তিনি আজকের পরীক্ষার জন্য পাঁচশ টাকা দিয়েছেন।

এইচএসসির পৌরনীতি বিষয়ের পরীক্ষার্থী লাবণী আক্তার জানান, তিনিও পাঁচশ টাকা দিয়েছেন।

‘টাকা না দিয়ে কোনো উপায় নেই। টাকা না দিলে পরীক্ষার হলে সুবিধা পাওয়া যায় না।’ বলেন ওই পরীক্ষার্থী।

একই ধরনের তথ্য জানান ওই দিন বিকেলের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ডিগ্রি ষষ্ঠ সেমিস্টারের মিনারা আক্তার ও এইচএসসি’র সীমা রাণী। সরেজমিনে এদিন কলেজ কেন্দ্রের পুরাতন টিনশেড ভবনে অনুষ্ঠিত ডিগ্রি পরীক্ষার কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষকদের উপস্থিতিতে পরীক্ষার্থীরা নকল করছেন।

এ সময় কেন্দ্রে অধ্যক্ষ আফজাল হোসেন খানের কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বসে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. এনায়েতুল্লাহ নাস্তা খাচ্ছেন।

নকল করার খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে নকলমুক্ত পরীক্ষার নির্দেশ দিলে অধ্যক্ষ আফজাল হোসেন খান সাংবাদিকদের সামনেই নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলেন, ‘একেবারেই নকলমুক্ত পরীক্ষা সম্ভব না। কিছু নকল তো হবেই।’

এ সময় নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘সামনের পরীক্ষাগুলোতে অনিয়ম সহ্য করা হবে না।’ এরপর পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে চলে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।



মন্তব্য চালু নেই