ঈদে বেনারসির প্রেমে নারীরা

পবিত্র ঈদকে সামনে রেখে নারীদের চাহিদা অনুযায়ী শাড়ি বিক্রেতারা বাজারে এনেছে বিভিন্ন ধরনের বেনারসি শাড়ি। বাঙালি নারীরা শাড়ি ছাড়া ঈদ ভাবতেই পারে না। তার ওপর বেনারসি শাড়ি ছাড়া যেন নারীদের ঈদই জমে না। এবারের ঈদে যেন তাদের বেনারসি চা-ই চাই। তাইতো বেনারসি শাড়ি কিনতে মিরপুর ১১ নম্বর বেনারসি পল্লিতে ভিড় জমেছে নারীদের। তারা যেন এবার বেনারসির প্রেমে পড়েছে, এমনটিই বলছিলেন বেনারসি শাড়ি বিক্রেতারা।

ঈদকে সামনে রেখে মিরপুর ১১ নম্বর বেনারসি পল্লি সেজেছে রঙিন সাজে। উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত সব শ্রেণি-পেশার মানুষেরা আসেন এখানে কেনাকাটা করতে। ঈদকে সামনে রেখে বেনারসি পল্লিতে চলছে এখন কেনাকাটা।

কথা হয় মিরপুর ১১ নম্বর বেনারসি পল্লিতে ‘আরিফ বেনারসি কুটির’ নামের শাড়ির দোকানের বিক্রেতাদের সঙ্গে। এই দোকানের বিক্রেতারা জানান, কাঞ্জিবরণ, অপেরা, মিনাবুটি, মার্সলেস, মিরপুর জামদানি, খাড্ডিকাতান, জুটনেট, রানবুলি, তাঞ্চিকাতানসহ আরো অনেক ধরনের বেনারসি রয়েছে দোকানটিতে। লাল, নীল, বেগুনি, গোল্ডেন, পেস্ট, ব্লু, ফিরোজা, কালো ও মেরুনসহ বিভিন্ন রঙের বেনারসি রয়েছে। তবে এর মধ্যে লাল, গোল্ডেন এবং মেরুন কালারটা নারীদের বেশি পছন্দ।

তারা আরো জানান, এসব বেনারসির মধ্যে কাঞ্জিবরণ ও মিনাবুটি নারীদের মন কেড়েছে। তবে খাড্ডিকাতানটির প্রেমে নারীরা একটু বেশি পড়েছেন। খাড্ডিকাতান বেনারসি শাড়ি এবারের ঈদে বেশি চলছে। তারা শাড়িগুলো ১ হাজার ৮০০ টাকা থেকে শুরু করে ২২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন।

‘মানসী শাড়িজ’ নামের আরেক দোকানের বিক্রেতা রাকিবুল হাসান রিপন জানান, চুঞ্জিকাতান, শার্টিন বেনারসি, ওয়ালক্লাম, ঢাকার জামদানি, টসর সিল্ক ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের বেনারসি শাড়ি। এ ছাড়াও তার দোকানে ইন্ডিয়ান দুপিয়া, জর্জেট ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের শাড়ি রয়েছে। এখানে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শাড়ি।

বেনারসি পল্লিতে রয়েছে গত দুই দশক ধরে দেশীয় তাঁতবস্ত্র হস্তশিল্পের সার্বিক উন্নয়নে শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান ‘হানিফ সিল্ক’। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯০ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত প্রতি বছর জাতীয়ভাবে শ্রেষ্ঠ। এই প্রতিষ্ঠানটি ২০০২ সালে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পায়। এখানে রয়েছে বেনারসি কাতান, রুপসী বাংলা, সানন্দা, খাড্ডিকাতান, পারছাড়া, মনিপুরি, চেন্নাই সিল্কসহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ি। বিয়ের শাড়ির মধ্যে সূর্যমুখী ও জুয়েলারিস্টম শাড়ি দুটি বেশি চলছে বলে জানালেন এ দোকানের বিক্রেতারা।

‘হানিফ সিল্ক’ তাদের নিজস্ব তৈরি স্বর্ণতূল্য সুতার কারুকাজ সমৃদ্ধ বৌবরণীয় বেনারসি কাতান লেহেঙ্গাসহ কনে সাজের জমকালো আয়োজন দৃষ্টিনন্দন বাহারি ডিজাইন মন-মাতানো রংয়ের পোশাক নিয়ে এসেছে। বেনারসি কাতান ছাড়াও এখানে রয়েছে টাঙ্গাইল সিল্ক, ফুল সিল্ক, রাজশাহী সিল্ক, পাবনার তাঁত কটন শাড়ি ইত্যাদি।

এসব দোকানে বাংলাদেশের পাশাপাশি রয়েছে ইন্ডিয়ান শাড়ি। বাংলাদেশের শাড়ির প্রতি সবার আকর্ষণ বেশি এবং বাংলাদেশের শাড়িগুলো বেশি চলছে বলে জানান বিক্রেতারা। তবে গত বছরের তুলনায় এবারের ঈদে বেচাকেনা কম হচ্ছে বলেও জানালেন কোনো কোনো বিক্রেতা। তারা বলছেন, গত বছর দোকানে লোকজনের উপস্থিতি ছিল ভরপুর। ক্রেতারা দোকানে এসে বসার জায়গা পেতেন না। এবার হয়েছে তার ব্যতিক্রম। ক্রেতাদের উপস্থিতি খুবই কম। তবে ক্রেতা কম হলেও যারা আসছেন তাদের আকর্ষণটা বেনারসি শাড়ির দিকে থাকছে বলেও জানালেন বিক্রেতারা।



মন্তব্য চালু নেই