ঈদের জন্য জমানো টাকায় লাশ গেল সুলেমানের

টঙ্গীর কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর নিহত ব্যক্তিদের লাশ নিজ নিজ এলাকায় নিতে হিমশিম খাচ্ছেন স্বজনরা। নিম্ন আয়ের এসব ব্যক্তি কেউ কেউ টাকা ধার করে লাশ নিয়ে যাচ্ছেন। ঘটনাস্থলেই নিহত সুলেমানের (৩০) লাশ তার দেশের বাড়ি কিশোরগঞ্জে নেওয়া হয়েছে ঈদ করার জন্য জমানো টাকা দিয়ে।

স্বজনদের অভিযোগ, স্থানীয় এমপি নিহতদের জন্য ২০ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিলে তা পাওয়া যায়নি। আর সরকার ঘোষিত দুই লাখ টাকা তারা কবে কীভাবে পাবেন তা কেউ জানে না। মালিক সিলেটের বিয়ানীবাজারের বিএনপিদলীয় সাবেক সংসদ সদস্য ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন লিচু মিয়া রয়েছেন সিঙ্গাপুরে। কারখানায় কর্মরত অনেকেই বলেন, মালিক বেশির ভাগ সময়ই দেশের বাইরে থাকেন। আর দেশে থাকলে রাজধানী ধানমন্ডির নিজ বাসায় থাকেন।

রোববার নিহত সুলেমানের বাসা টঙ্গীর জামাইবাজার এলাকার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এরপর তার লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। ঈদের জন্য সুলেমানের জমানো ১২ হাজার টাকায় রোববার সকালে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে তার লাশ নেয়া হয়।

সুলেমানের স্ত্রী লাশের সঙ্গে বাড়ি গেছেন। তিনি মোবাইলে বলেন, বিস্ফোরণের পর তিনি আল্লার কাছে দোয়া করে স্বামীর হাত-পা শুধু জীবনটা চেয়েছিলেন। কিন্তু তা হয়নি। তাই সংসারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে তিনি এখন দিশেহারা।

তিনি আরো জানান, তাদের দুই ছেলে মেয়ে। নাসির নামের ছেলের বয়স ৬, আর মেয়ে লামিয়ার বয়স ৩। এ অবস্থায় স্বামী হারিয়ে তিনি অকুল পাথারে পড়েছেন।

সুলেমানের বোন জানান, অনেক কষ্ট করে আগুনের তাপে কাজ করতো সে। শুধুমাত্র সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে। এখন তাদের কি হবে!

প্রসঙ্গত, গাজীপুরের টঙ্গীতে ট্যাম্পাকো নামে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল প্যাকেজিং কারখানাটিতে শনিবার সকালে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর আগুন লাগে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো অন্তত ৫০ জন। বিস্ফোরণে পাঁচতলা কারখানা ভবন ও পাশের দুটি তিনতলা ভবন ধসে পড়েছে। আরেকটি ছয়তলা ভবন মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই