ইরাক থেকে নিজ উদ্যোগে ফিরলেন ২৭ বাংলাদেশি

ইরাক থেকে দেশে ফিরেছেন ২৭ বাংলাদেশি। মঙ্গলবার সকালে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তারা বাগদাদ থেকে ঢাকায় ফেরেন। তবে সরকারের কোনো সহযোগিতা নয়, নিজেদের উদ্যোগেই তারা দেশে ফিরেছেন।
ফেরত আসা এই বাংলাদেশিরা বাগদাদে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। বিসমিয়া নিউ সিটি প্রকল্পের নির্মাণকাজের সঙ্গে তারা যুক্ত ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি সেখানে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হওয়ায় এই বাংলাদেশিরা ফিরে আসেন।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় বলছে, এই বাংলাদেশিরা নিজেদের উদ্যোগেই ফেরত আসায় তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা নেই।

ফেরত আসা ব্যক্তিদের একজন চাঁদপুরের মনিরুল ইসলাম জানান, তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কোম্পানিতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ছিলেন। ওই কোম্পানিতে অন্তত চার হাজার বাংলাদেশি চাকরি করেন, যাদের বেশিরভাগই নির্মাণকাজে যুক্ত। ইরাকের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে ক্যাম্পের অধিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। তাই তারা ২৭ জন দেশে ফিরেছেন।

এদিকে ইরাকে আটকে পড়া প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিককে ফিরিয়ে আনার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাগদাদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ সম্পন্ন হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘ইরাকে চলমান শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে যুদ্ধে আটকা পড়া বাংলাদেশিরা কোনো পক্ষেরই টার্গেট নয়।’

গত এক সপ্তাহ ধরে দূতাবাসের হেল্প লাইনে অনেকেই ফোন করে ফেরত আসার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। বিষয়টি ইরাকে বাংলাদেশ ‍দূতাবাস থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়। এরপরেই পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ।
এছাড়া ইরাকে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রেজানুর রহমান খানও মন্ত্রীকে ফোন করে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন। মোশাররফ বলেন, ‘আমরা আটকে পড়া বাংলাদেশিদের শুকনো খাবার ও গ্যালন ভর্তি পানি নিয়ে নিরাপদ স্থানে অবস্থানের জন্য নির্দেশ দিয়েছি। সে অনুযায়ী তারা কাজও করছে। তবে দূতাবাস থেকে তিকরিতে আটকে পড়া প্রায় ৪ হাজার বাংলাদেশির কাছে খাবার পৌঁছে দেয়ার কাজটি করতে পারছে না। খাবার ফুরিয়ে আসছে, তাই সঙ্কটময় পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে তাদের পক্ষ থেকে ফোন করে দেশে আসার কথা জানিয়েছে।’

লিবিয়া ও তিউনিশিয়া থেকে প্রায় ৪০ হাজার বাংলাদেশিকে ফেরত আনার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো হচ্ছে বলেও জানান মোশাররফ। তবে জাতিসংঘের শ্রমিক অভিবাসন সংস্থার মাধ্যমে তাদের জন্য ক্ষতিপূরণ আদায়ের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এটি সম্পন্ন হলেই অনেকটা নীরবে বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে চায় সরকার।

সংবাদমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ রেখে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘আটকে পড়া বাংলাদেশিরা এখনো পর্যন্ত নিরাপদে রয়েছেন।’ দেশে অবস্থানরত তাদের আত্মীয়স্বজনরা যেন কোনোভাবেই আতঙ্কিত হয়ে না পড়েন এ বিষয়টি খেয়াল রেখে সংবাদ পরিবেশন করার আহ্বান জানান তিনি।



মন্তব্য চালু নেই