সিএসইর প্রতিক্রিয়া

ইতি ও নেতিবাচকের মাঝামাঝি বাজেট

২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে চট্টগ্রাম স্টক এক্সঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান ড.আব্দুল মজিদ বলেছেন, ‘একদিকে বাজেট যেমন পুঁজিবাজারবান্ধব, অন্যদিকে বেশ কিছু কারণে বান্ধব নাও বলা যেতে পারে। তবে ২৯ জুন পর্যন্ত সময় আছে। যেসব বিষয়ে সমস্যা মনে হচ্ছে তা ঠিক করে পুঁজিবাজারবান্ধব করার জন্য আমরা আবেদন জানাবো।’

শনিবার সিএসইর বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ড.আব্দুল মজিদ বলেন, ‘পুঁজিবাজার অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাজার জনের ক্ষুদ্র সঞ্চয় একত্র করে বিরাট শিল্প প্রতিষ্ঠা করা যায়। পুঁজিবাজার সেটি করতে পারে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হলে আস্থা সঙ্কটের সৃষ্টি হয়। এতে সঞ্চয় ও বিনিয়োগে ছন্দপতন হয়।’

তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে তিনটি নতুন কর দেয়া হয়েছে। এটি পুঁজিবাজারের জন্য নেতিবাচক হতে পারে। বাজেট পাশের আগে আলোচনা পর্যালোচনার মাধ্যমে বাজারকে ইতিবাচক ধারায় আনার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

ডিমিউচুয়্যালাইজেশনের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে গতিশীলতা এসেছে উল্লেখ করে সিএসই চেয়ারম্যান বলেন,‘এই গতিশীলতাকে স্থায়ী করতে হবে। সবাই আস্থাশীল হলে বাজার সমৃদ্ধ হবে। এ জন্য এমন কোনো উদ্যোগ নেয়া উচিৎ নয় যাতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট হয়।’

তিনি বলেন, ‘করমুক্ত আয়সীমা ১৫ হাজার করা হয়েছে। আমরা বলেছিলাম ৫০ হাজার করা হোক। আশা করবো এটি বাড়ানো হবে। এর ফলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা বাজারে বেশি আসবে। পুঁজিবাজারকে কর অবকাশ দেয়া আর অন্য শিল্পকে দেয়া এক নয়। মিউচ্যুয়ালাইজড পরবর্তী স্টক এক্সচেঞ্জকে ক্রমহ্রাসমান হারে ৫ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। ক্যাপিটাল গেইনের উৎসে ১৫ শতাংশ কর দিতে হবে ট্রেক হোল্ডারদের। এটি পুনর্বিবেচনা করা উচিৎ। তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির করপোরেট কর কমানো হয়েছে। এটা পুঁজিবাজারের জন্য নিরুৎসাহজনক।’ করপোরেট কর কমানোর পাশাপাশি তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্যও কিছু সুবিধা দেওয়া উচিৎ ছিল বলে মন্তব্য করেন ড.আব্দুল মজিদ

এর আগে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) বাজেট-পূর্ব আলোচনায় এনবিআরের কাছে বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছিল। এর মধ্যে ছিল: করপোরেট কর হার কমানো, লভ্যাংশের ওপর উৎসে কর প্রত্যাহার, দ্বৈতকরের অবসান, মূলধনী মুনাফা করকে কয়েকটি ধাপে পুনর্বিন্যাস, স্টক এক্সচেঞ্জের আয়কে করমুক্ত করা ইত্যাদি।

কর রেয়াতের পরিমাণ ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি দিয়ে সিএসই বলেছিল, পুঁজিবাজারে মন্দার কারণে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকের আয় করযোগ্য সীমার নিচে থাকার পরও উৎসে কর কাটা হচ্ছে। তাই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে কর রেয়াত সুবিধা বাড়ানো প্রয়োজন।

প্রস্তাবে করপোরেট আয়ে রেয়াত সুবিধা পুনর্বিন্যাসের কথাও বলা হয়। বর্তমানে ২০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি তার আয়ের ওপর ১০ শতাংশ কর রেয়াত পায়। ডিএসই প্রস্তাব দিয়েছিল ২০ শতাংশের বেশি, কিন্তু ২৫ শতাংশের কম লভ্যাংশের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ এবং ২৫ শতাংশের বেশি লভ্যাংশের ক্ষেত্র ১৫ শতাংশ কর রেয়াত দেয়ার।

বর্তমানে মূলধনী মুনাফার ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদেরকে ১০ শতাংশ হারে কর দিতে হয়। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ প্রস্তাব দেয়, এটিকে বিভিন্ন মেয়াদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে কর হার নির্ধারণের। এক থেকে দুই বছর পর্যন্ত শেয়ার ধারণ করলে সাড়ে ৭ শতাংশ হারে, ২ থেকে ৩ বছর পর্যন্ত ধারণ করলে ৫ শতাংশ এবং ৩ বছরের বেশি ধারণ করলে শূন্য শতাংশ কর আরোপের প্রস্তাব দেয় সিএসই।



মন্তব্য চালু নেই