ইউপি চেয়ারম্যানকে মুক্তি না দেয়ায় সব সদস্যের পদত্যাগ

তিন কৃষি কর্মকর্তাকে মারধরের মামলায় কারাগারে আটক নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা কাঁঠালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন তুহিনকে মুক্তি না দেয়ায় স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছে ইউনিয়নের ১২ সদস্য। এতে করে ঈদ উপলক্ষে ওই ইউনিয়নের ভিজিএফ চাল বিতরণ অনিশ্চিয়তার মুখে পড়েছে।

বুধবার দুপুরে একযোগে পদত্যাগ করে জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে পদত্যাগপত্র পেশ করেন তারা। যার অনুলিপি জেলা প্রশাসক বরাবর দেয়া হয়।

কাঁঠালী ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য আবুল কাশেমসহ ১২ জন সদস্য স্বেচ্ছায় পদত্যাগ পত্রে উল্লেখ্য করেন, জলঢাকা উপজেলার আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক সোহরাব হোসেন তুহিন জনগণের ভোটে পর পর ৩ বার কাঁঠালী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান।

চলতি বছরের ১৪ জুন একটি মিথ্যা মামলায় থানা পুলিশ ইউপি চেয়ারম্যানকে বাড়িতে থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তাকে কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে।

আটকের পরের দিন থেকে চেয়ারম্যানের জামিনের জন্য কয়েকবার আইনজীবীদের মাধ্যমে আদালতে আবেদন করা হলেও আদালত তা মঞ্জুর করেনি। এতে ইউনিয়ন পরিষদের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা যেমন বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে, তেমনি ইউনিয়নের নাগরিকগণও তার সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

তাই অবিলম্বে কারাগারে বন্দী চেয়ারম্যানকে আদালত কর্তৃক জামিনের মাধ্যমে মুক্তি না দেয়া এবং তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে আমরা ইউনিয়ন পরিষদের ৯টি ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য এবং তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য স্বেচ্ছায় এক যোগে পদত্যাগ পত্র জমা দেন।

তবে জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অফিসের কাজে ঢাকায় থাকায় প্রত্যাহার পত্র গ্রহণ করেন দফতরের সহকারী।

এ বিষয়ে জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান হাবিবের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জাগোনিউজকে জানান, আমি দফতরের কাজে ঢাকায় অবস্থান করছি। ইউপি সদস্যদের পদত্যাগের খবরটি আমার জানা নেই, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ১২ জুন দুপুরে কাঁঠালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন তুহিন ১৫ থেকে ২০ জন লোক নিয়ে জলঢাকা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার দফতরে হামলা চালিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সাদ্দেকুজ্জামান ও দুই উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে মারপিট করে।

এ ঘটনায় পরের দিন সোমবার (১৩ জুন) কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. সাদেকুজ্জামান বাদী হয়ে জলঢাকা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ ১৪ জুন রাতে চেয়ারম্যান তুহিনকে নিজ বাগি থেকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারের পর থেকে তিনি জেলা কারাগারে আছেন। জামিনের জন্য তিন দফায় আবেদন করা হলেও আদালত তা খারিজ করে দেয়।



মন্তব্য চালু নেই