ইউপিতে আর্থিক লেনদেনের তদন্ত চাইলেন নেতারা

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলের মধ্যে আর্থিক লেনদেনের যে অভিযোগ উঠেছে সেই বিষয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।

সোমবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে স্থায়ী কমিটি সদস্যদের বৈঠকে নেতারা এ বিষয়ে দাবি তুলেছেন। বিএনপি নেত্রীও এ বিষয়ে তার ইতিবাচক মনোভব তুলে ধরেছেন।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপির নেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাত সাড়ে ৯টায় বৈঠকটি শুরু হয়ে চলে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, আ স ম হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগ উঠেছে, ২০১৫ সালের ৫ এপ্রিল থেকে চলতি বছরের ৫ এপ্রিল পর্যন্ত তাইফুলের মালিকানাধীন কম্পানি ‘মেসার্স টি এন্টারপ্রাইজ’-এর নামে মোট চার কোটি ৩৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৭৩ টাকা জমা হয়েছে। এই সময়ে ব্যাংক থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে চার কোটি ৩৭ লাখ ৫২ হাজার ৩৭২ টাকা। এতে দেখা যায়, পাবনা, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনলাইনে ওই হিসাব নম্বরে টাকা জমা হয়েছে। লেনদেনের হিসাবে দেখা যায়, বেশির ভাগ টাকাই নগদ জমা ও তোলা হয়েছে।

এই লেনদেনে পৌরসভা নির্বাচন ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনগুলোর মনোনয়ন বাণিজ্যের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বলা হচ্ছে, মনোনয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তাইফুলকে ‘কোষাধ্যক্ষ’ হিসেবে ব্যবহার করে থাকতে পারেন। অর্থাৎ তার হিসাবে টাকা জমা হয়েছে, যা পরে মনোনয়ন নিশ্চিত করেছেন এমন নেতা বা ব্যক্তিদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, বৈঠকের শুরুতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলের মধ্যে আর্থিক লেনেদেনের যে অভিযোগ উঠেছে সে বিষয়ে উস্মা প্রকাশ করেন শীর্ষ নেতারা। তারা বলেন, গণমাধ্যমে প্রমাণস্বরূপ যেভাবে অভিযোগ প্রকাশিত হয়েছে তাতে এটি তদন্ত করে দেখা দরকার। অন্তত দলের মধ্যে যে কানাঘুষা চলছে, তা বন্ধ করার জন্য তদন্ত প্রয়োজন।

বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, মুল এজেন্ডার বাইরে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের আড়াই হাজার কোটি টাকা ‘সন্দেহজনক’ লেনেদেনের বিষয়ে মার্কিন আদালতের বেশ কিছু তথ্য উপাত্ত স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সরবরাহ করা হয়েছে। জয়ের ‘দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে আরো জোরালো বক্তব্য রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন খালেদা জিয়া।

বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের কেউ কেউ পঞ্চম ও ষষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচন বর্জনের দাবি তুললেও এ বিষয়ে বিএনপি নেত্রী নেতিবাচক মনোভব দেখিয়েছেন। অন্য স্থায়ী কমিটির সদস্যরাও মনে করেন, শেষ দুই ভাগের নির্বাচন বর্জন করার কোনো কারণ নেই।

বৈঠকে সাংবাদিক শফিক রেহমান ও মাহমুমুদর রহমানকে মিথ্যা মামলা আটক রাখা হয়েছে-এই প্রচারণা আরো বাড়ানোর তাগিদ দেওয়া হয়।



মন্তব্য চালু নেই