‘আয়করে করপোরেট কর হবে নাম্বার ওয়ান’

রাজস্ব আদায়ে সবচেয়ে বড় খাত আয়করে করপোরেট কর নাম্বার ওয়ান হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

সোমবার রাজধানীতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কনফারেন্স রুমে প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাজেট পরবর্তী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

অর্থমন্ত্রী বলেন, এই বাজেটে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন হতে যাচ্ছে। আয়করে কর্পোরেট কর নাম্বার ওয়ান হতে যাচ্ছে। আমি যখন ১৯৮২ সালে প্রথম অর্থমন্ত্রী ছিলাম তখন ওই করের পরিমাণ ছিল ১০ শতাংশের কম। এখন তা বেড়ে এবার ৩৬ থেকে ৩৮ শতাংশ হবে। এরপরই মূসক খাত থেকে রাজস্ব আদায় হবে।

তিনি বলেন, আমরা এবার আয়কর সবচেয়ে বেশি আশা করেছি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আয়করে লক্ষ্যমাত্রা ৬৫ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা। যেখানে চলতি অর্থ বছরে আদায় হওয়ার কথা ৫০ হাজার কোটি টাকা। তাই ৫০ হাজার থেকে এক লাফে ৬৫ হাজার কোটি টাকা। এটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।

করের আওতা বৃদ্ধির বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায় একটা সার্ভে করা হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, যে করদাতা রয়েছে তা ডাবল করা সম্ভব। বর্তমানে মাত্র ১১ লাখের কিছু বেশী করদাতা কর দেয়। তাই ঢাকা থেকে শুরু করে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে করের পরিধি বাড়ানো হবে।

মূসকের বিষয়ে তিনি বলেন, মূসক আমাদের দ্বিতীয় রাজস্ব আদায়ের খাত। যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৩ হাজার ৯০২ কোটি টাকা। এরপরই রয়েছে সম্পূরক শুল্ক ও আমদানী শুল্ক। ভবিষ্যতে শুল্ক থেকে রাজস্ব আদায় কমতে থাকবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, অনেক সাহস ও আশা নিয়ে বাজেট পেশ করেছি। আর আমাকে যারা আয়কর দিবেন সেই মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছি।

বাজেটের আওতা হিসেবে লক্ষ্যমাত্রা একটি চ্যালেঞ্জ এমন কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজ এনবিআরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসা হয়েছে বছরের শুরুতেই যাতে তারা অধিক ক্রিয়াশীল হয়। কাদেরকে করের আওতায় আনা দরকার এবং কাদের কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া হবে তা তাদেরই ঠিক করতে হবে। বাজেটের আওতা যে হারে বেড়েছে সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বড় চ্যালেঞ্জ ।

তিনি বলেন, আগামী অর্থ-বছরে এনবিআরকে যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে তা আদায় করতে এনবিআরে যথেষ্ট লোকবল রয়েছে। গত অর্থবছরে তাদের লোকবল ১৩ হাজার থেকে বেড়ে ২২ হাজার হয়েছে। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে আরো লোকবল বাড়ানো হবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, নুন্যতম করের স্তরের বিষয়ে তেমন কোন পরিবর্তন হবে না। সংসদে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে ঢাকা ও চট্টগ্রামের জন্য একটি স্তর, অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনের ক্ষেত্রে এক স্তর এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ে আলাদা স্তর নির্ধারণ করতে যাচ্ছি।

এনবিআরের কর কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও হয়রানির বিষয়ে তিনি বলেন, দুর্নীতি জাতীয় ব্যাধি এটা এখানে নেই সেটা বলবো না। তবে রাজস্ব প্রশাসন পূর্বের তুলনায় অনেক কর বান্ধব ও আধুনিক হয়েছে।

এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই