একাধিক সরকার দলীয় প্রার্থী ও জামায়াত-বিএনপি বিহীন

আসন্ন কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচন হয়ে উঠতে পারে সংঘাতময়

সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার আসন্ন নির্বাচনে অংশ গ্রহনের জন্য কোমর বেধে মাঠে নেমে পড়েছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। রং বে রংয়ের ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে ফেলেছেন পৌর বিভিন্ন গাছ পালা।

জামায়াত/বি,এন,পি বিহীন এ নির্বাচন প্রতিদন্দ্বিতা পূর্ণ হবে না বলে এলাকার অধিকাংশ মানুষের অভিমত। তবে সরকার সমর্থিত একাধিক প্রার্থীর কারনে নির্বাচনটি সংঘাতময় এবং প্রতিদন্দ্বিতা পূর্ন হয়ে উঠতে পারে। আসন্ন পৌর নির্বাচনে এবারের দলীয় সমার্থন নিয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন কলারোয়া আওয়ামীলীগের সাবেক আহবায়ক সাজেদুর রহমান খান চৌধুরী (মজনু)। বিষয়টি নিয়ে কলারোয়া উপজেলা আওয়ালীগের সভাপতি ও কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ স্বপন সাহেবের কাছে জানতে চাইলে তিনি আওয়ার নিউজ বিডি কে জানান, উপজেলা আওয়ামীলিগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের সম্মতিতে নীতিগত ভাবে তাকে সমর্থন জানানো হয়েছে।

সাজেদুর রহমান খান চৌধুরী (মজনু) নির্বাচনে প্রচারনার অংশ হিসাবে এলাকার বিভিন্ন গাছে গাছে দৃষ্টি নন্দন ডিজিটাল ব্যানার টাঙ্গিয়েছেন। দোয়া চেয়েছেন মেয়র পদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান কলারোয়া পৌর সভার দ্বিতীয় মেয়র নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে তিনি এক‘শ ভাগ আশাবাদি। এলাকার ভোটারগন তাকে অবশ্যই নির্বাচিত করবেন। অপর দিকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে এলাকায় ব্যাপকভাবে কাজ করছেন উপজেলা যুব লীগের সাবেক আহবায়ক,গত পৌর নির্বাচনের দলীয় আর্শিবাদ পুষ্ট মেয়র প্রার্থী আলহাজ্জ্ব শেখ আমজাদ হোসেন। তিনি ও নির্বাচন প্রচারনার অংশ হিসেবে এলাকায় ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে ফেলেছেন, বিশেষ করে পূজা মন্ডপ গুলোতে ব্যানার সেটে দিয়েছেন।শুধু তাই নয়, দোয়া চেয়ে স্থানীয় বেশ কয়টি খবরের কাগজে নিয়মিত বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন।

মেয়র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করার জন্য আট সাট বেধে মাঠে নেমেছেন কলারোয়ার বহুল আলোচিত আওয়ামীলীগের তুখোড় নেতা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী,গত উপজেলা আওয়ালীগের কাউন্সিলে সামান্য ভোটের ব্যাবধানে সাধারন সম্পাদক পদ বঞ্চিত নেতা, কলারোয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আরাফাত হোসেন। আরাফাত হোসেন গত পৌর নির্বাচনে ও প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু দলীয় কোন্দলের কারনে এলাকায় ব্যাপক প্রচার প্রচারনা চালাতে পারেন নি। সে কারনে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যায় বলে তিনি এ প্রতিবেদক কে জানান। তিনি আরো জানান, এটি একটি স্থানীয় সরকার পরিষদের নির্বাচন। এখানে দলীয় ভাবে সর্মথন নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করার কোন সুযোগ নেই। যদি কেউ বলে থাকেন দলীয় সর্মথন নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবেন। সেটা হবে ভুল । তিনি পৌর এলাকার ৯টি ওয়র্ডে কমিটি গঠন করে নির্বাচনের প্রচারনার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ন ভোট গ্রহন এবং এলাকার সকল জনগন যদি নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তাহলে অবশ্যই তিনি মেয়র পদে নির্বাচিত হবেন বলে দৃঢ় আশাবাদী।

অন্য দিকে পৌরসভার মুরারীকাটি ওয়ার্ড আওয়ামীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মেয়র প্রার্থী হিসাবে দোয়া চেয়ে এলাকায় প্রচারনা চালাচ্ছেন। এলাকার গাছে গাছে রঙ্গিন ব্যানার,ফেস্টুন টাঙ্গিয়েছেন।তিনি ও নির্বাচনে জয়ী হওয়ার ব্যপারে আশাবাদী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জনিয়েছেন, কলারোয়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লাল্টুর সাথে শহীদুল ইসলাম একটি দন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। সূত্রটি আরো জানিয়েছেন, শহীদুল ইসলাম যাতে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করতে না পারেন বা অংশ গ্রহন করলেও পাশ করতে না পারেন সে ব্যাপারে যা করার দরকার তাই করবেন বর্তমান ভাইস চেয়াম্যান সাহেব। আবার অনেকে বলছেন পৌর সভার বর্তামান প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম ও এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হবেন।

বর্তমান ১৪ দলীয় সরকারের অন্যতম শরীক ওর্য়কার্স পাটি থেকে মেয়র পদে কোন প্রার্থী দিবেন না বলে সংগঠনটি উপজেলা সাধারন সম্পাদক বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ সাহেব জানিয়েছেন।

২০১৩ সালের নাশকতা,আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের হত্যা সহ বিভিন্ন মামলায় কলারোয়া জামায়াত নেতা কর্মীরা জেল খাটছেন,অনেকে এলাকা ছেড়েছেন। প্রধান মন্ত্রীর গাড়ি বহরে হামলা মামলার কারনে সাবেক এম পি হাবিবুল ইসলাম হাবিব সহ উপজেলা বি,এনপির প্রথম সারির ৫০ জন নেতার নামে আদালতে চার্জ গঠন করা হয়েছে। ফলে কলারোয়ার রাজনৈতিক মাঠ এখন জামায়াত / বি,এন,পি শূন্য। আর এর ফলে দলীয় ভাবে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবেন না বলে ঐ দুটি দলের কর্মীরা জানিয়েছেন।

১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত পৌর সভার প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত ২০১১ সালের জানুয়ারী মাসে। নির্বাচনে বি,এন,পি ও আওয়ামীলিগের একাধিক প্রার্থী থাকার কারনে বি,এন,পি বিদ্রোহী প্রার্থী গাজী আক্তারুল ইসলাম বিপুল ভোটের ব্যবধানে মেয়র নির্বাচিত হন। তার নামে একাধিক মামলা হওয়ার কারনে বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন। তিনি ছিলেন দেশের সর্ব কনিষ্ট এবং কলারোয়া পৌরসভার প্রথম সরাসরি জনগনের ভোটে নির্বাচিত মেয়র।

কলারোয়ার দায়িত্বশীল একটি সূত্র মতে আসন্ন পৌর নির্বাচনে সরকার দলীয় একাধিক প্রার্র্থী যদি মেয়র পদে অংশ গ্রহন করেন তাহলে নির্বাচনটি সংঘাতময় হয়ে উঠতে পারে। এবারের পৌর নির্বাচনটি অবাধ,নিরপেক্ষ শান্তিপূর্ন,ও সকল ভোটারের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হবে । এই আশায় বুক বাঁধছেন কলারোয়া পৌর সভার হাজারো ভোটার। তারা এ ব্যাপারে সরকারের সংস্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন। উল্লেখ্য প্রায় ১৩ হাজার ভোটার আসন্ন পৌর সভার নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।



মন্তব্য চালু নেই