আলোচনার শীর্ষে ছিলেন এমপি বদি

দেশ জুড়ে ২০১৪ সালে আলোচনার শীর্ষে ছিলেন কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দ্বিতীয় বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তার অবৈধ সম্পদের বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় আলোচনা। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইয়াবা ব্যবসায়ীর তালিকায় তার এবং তার নিকট আত্মীয়-স্বজনদের নাম থাকা, সাগর পথে মালয়েশিয়ায় মানবপাচারে তার আত্মীয়-স্বজনদের নাম থাকা, রোহিঙ্গাদের পৃষ্ঠপোষকতা, ইয়াবাসহ তার আত্মীয় স্বজনের গ্রেফতার হওয়ার ঘটনা নিয়ে কেটেছে এমপি বদির একটি বছর। আর বছর জুড়েই ঘুরেফিরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন তিনি।

এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা ছিল বদির অবৈধ সম্পদ অর্জন নিয়ে দুদকের তদন্ত, মামলা, কারাভোগ, জামিন লাভ এবং দুদক নিয়ে নানা কথাবার্তা বলা নিয়ে।

বিভিন্ন তথ্যে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির প্রার্থী তাহা ইয়াহিয়াকে পরাজিত করে দ্বিতীয় বারের মত এমপি নির্বাচিত হন তিনি। যদিও অনিয়মের অভিযোগ এনে তাহা ইয়াহিয়া নির্বাচন বর্জন করেন।

নির্বাচিত হওয়ার পর ১৩ জানুয়ারি এমপি বদির অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের ঘোষণা দেয় দুদক। ২৮ জানুয়ারি প্রথমবারের মত কক্সবাজারে এসে দুদক তদন্ত দল অনুসন্ধান শুরু করে। ৫ ফেব্রুয়ারি তাকে তলব করা হয় দুদক কার্যালয়ে। ২০ ফেব্রুয়ারি তার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ মিলেছে বলে দুদক জানায়।

১২ আগস্ট কক্সবাজার এসে এক সভায় দুদক চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বলেন, ‘এমপি বদির আরো অবৈধ সম্পদ রয়েছে বলে তারা ধারণা করছেন।’

২১ আগস্ট দুদক বদির বিরুদ্ধে মামলা করে। ওই মামলায় ১১ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নেন বদি। ১২ অক্টোবর নি¤œ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ৩০ অক্টোবর তিনি ওই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন। ৫ নভেম্বর তিনি বিমানযোগে কক্সবাজার এসে উখিয়া- টেকনাফে গাড়িবহর নিয়ে শোডাউন করেন।

এই ঘটনাপ্রবাহ দেশের টেলিভিশন ও পত্রিকায় ব্যাপক প্রচার পায়। এ নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন এমপি বদি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের তালিকায় এমপি বদির নাম গডফাদার হিসেবে লিপিবদ্ধ রয়েছে। এতে তার ভাই ও নিকট আত্মীয়-স্বজনদের নামও রয়েছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে নানা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এসব প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে বদি মামলাও করেছেন।

এমনকি ১ অক্টোবর কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে স্বরাষ্ট্র সচিবের উপস্থিতিতে ইয়াবাবিরোধী এক সভায় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের তালিকা সংশোধনের দাবি জানান বদি। এরপরই গত ২৪ নভেম্বর তার ভাগিনাসহ ৪ নিকটাত্মীয় কক্সবাজার বিমান বন্দরে ইয়াবাসহ আটক হয়।

২ ডিসেম্বর বদির তালতো ভাই তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী সৈয়দ হোসেনকে আটক করা হয়। ১৩ ডিসেম্বর আটক করা হয় বদির খালাতো ভাই তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী মং মং সেনকে।

এর মধ্যে রোহিঙ্গাদের পৃষ্ঠাপোষকতার অভিযোগ উঠে এমপি বদির বিরুদ্ধে। গত ১৪ ডিসেম্বর বদির ভাই ও তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ীর বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় ওই বাড়িতে পাওয়া যায় রোহিঙ্গা। আর রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ এনে পুলিশ মামলা দায়ের করে।

এ ছাড়াও মানবপাচারের ঘটনায় বদির নিকটাত্মীয় জড়িত বলে গণমাধ্যমে অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। আর এসব নিয়ে ২০১৪ সালে দেশব্যাপী আলোচনার শীর্ষে ছিলেন এমপি বদি।



মন্তব্য চালু নেই