জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সাথে খালেদার সৌজন্য সাক্ষাত

আলোচনার ওপরই গুরুত্ব দিলেন আবে

সব দলের অংশগ্রহণে সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বড় দলগুলোর মধ্যে আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে মনে করেন জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।

তিনি বলেছেন, ‘গত ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশে যে নির্বাচন হয়েছে তাতে বাংলাদেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেনি, এ বিষয়ে জাপান সরকার অবগত আছে। বড় দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধান খুঁজে বের করতে পারবে যা বাংলাদেশের মানুষের গ্রহণযোগ্য হবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মেনে নেবে।’

শনিবার সন্ধ্যায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে শিনজো আবের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী।

শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘দীর্ঘ ১৪ বছর পর জাপানের কোনো প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করলেন। এ বৈঠকের ব্যাপারে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আনন্দ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ ও জাপানের সম্পর্ক গভীর ও বহুমুখি এ বিষয়ে খালেদা এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী সহমত পোষণ করেন।’

শমসের মবিন আরো বলেন, ‘সৌজন্য সাক্ষাতে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দু’দেশের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক বিষয়ে বিশেষ ভূমিকা রাখায় জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান খালেদা জিয়া।’

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশের অস্থায়ী সদস্য পদ প্রত্যাহার প্রসঙ্গে শমসের মবিন বলেন, ‘বাংলাদেশের সরকার এ ব্যাপারে আমাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করেনি। ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ প্রথম জাতিসংঘে এ অস্থায়ী পদ পায়। এ পর্যন্ত মোট ৩ বার অস্থায়ী সদস্য পেদ পেলেও এবারই প্রথম প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা হয়েছে।’

এদিকে জাপানি প্রধানমন্ত্রীর দুই দিনের ঢাকা সফরকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপি। দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘তাদের (জাপানের) বিনিয়োগে এদেশের উন্নতি হবে।’ তাছাড়া এ সফরের মধ্য দিয়ে দু’দেশের বাণিজ্য ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো সম্প্রসারিত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এর আগে দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে জাপান এয়ারওয়েজের একটি বিশেষ বিমানে করে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়ে তাকে স্বাগত জানান। এরপর সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে তাকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। এসময় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা গওহর রিজভী ও তিন বাহিনীর প্রধানসহ জাপান দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরে মহান মুক্তিযুদ্ধের নিহত শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিমানবন্দর থেকে হেলকপ্টারযোগে সরাসরি সাভার স্মৃতিসৌধের উদ্দেশে যাত্রা করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। সেখান থেকে হোটেল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠক শেষ করে বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে আলাদা আলাদা ভাবে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে হোটেল সোনারগাঁওয়ে যান তিনি।



মন্তব্য চালু নেই