আজ রাতে সেমিফাইনালে মুখোমুখি আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ড

ব্রাজিল বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিতে আজ মাঠে নামছে বিশ্বকাপের হট ফেভারিট মেসির আর্জেন্টিনা। দলটির প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস। দল দুটি নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই সেমিফাইনালে উঠেছে। তবে ফাইনালে টিকে থাকতে হলে আজও সেরা প্রমাণ করতে হবে যে কোন একটি দলকে। লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা নাকি এ্যারিয়েন রোবেনের হল্যান্ড শিরোপা জয়ে শেষ ধাপে টিকে থাকতে পারবে এটাই প্রমাণ হবে এই ম্যাচে।

বিশ্বকাপের এই হাই ভোল্টেজ ম্যাচটি সাও পাওলোতে বাংলাদেশ সময় রাত দুইটায় শুরু হবে। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন, গাজী টিভি ও মাছরাঙা টেলিভিশন। বিশ্বকাপে দুইবার শিরোপা জয় করেছে আর্জেন্টিনা। কিন্তু এখনো শিরোপা ঘরে তুলতে পারেনি হল্যান্ড। যদিও দলটি তিনবার ফাইনাল খেলেও শিরোপার দেখা পায়নি। তিনবারই হয়েছে রানার্সআপ। বিশ্বকাপের শিরোপা যেন ডাচদের কাছে অধরাই থেকে যাচ্ছে। এবার শিরোপা জয়ের জন্য সবকিছু করতে প্রস্তুত দলটি।

তবে এর আগে দলটিকে আজ আর্জেন্টিনা বাধা পার করতে হবে। অপরদিকে দুইবার শিরোপা জয় করলেও দীর্ঘদিন ধরে ফাইনালে উঠতে পারছে না আর্জেন্টিনা। এবার ফাইনালে যেতে মরিয়া মেসির দল। আর যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই এগিয়ে চলছে মেসিরা। ফলে আজ ডাচ বাধা অতিক্রম করাটাই দলটির কাছে প্রধান লক্ষ্য। অপরদিকে গ্রুপ পর্বের মতো দাপুটে লাড়াই করে ১৯৭৪, ১৯৭৮ ও ২০১০ সালের ফাইনালে ব্যর্থতার পর এবার ফুটবলের সেরা পুরস্কারটি ঘরে তুলতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত হল্যান্ড। বিশ্বকাপে এবার এই দল দুটি নিজেদের সেরা প্রমাণ করেই এগিয়ে চলছে।

তবে আজ একটি দলকে বিদায় নিতে হচ্ছে। হতে পারে হল্যান্ড অথবা আর্জেন্টিনা। কারণ এর আগে দুটি দলই দুটি দলের বিপক্ষে জয় পেয়েছে আবার হেরেছেও। এ পর্যন্ত হল্যান্ড আর্জেন্টিনার কাছে হার মেনেছে দুইবার। শেষ পরাজয়টি বরণ করেছে বুয়েন্স আয়ার্সের মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে। যেখানে আর্জেন্টিনা ৩-১ গোলে ডাচদের পরাজিত করেছিল। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ডাচদের স্মরণীয় জয়টি আসে ১৯৯৮ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে। তবে শিরোপার খুব কাছে এলেও ডাচদের স্বপ্ন পূরণে প্রধান দুই বাধা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে আর্জেন্টিনা অথবা স্পেন। আজ আরেকটি আর্জেন্টাইন বাধার মুখে পড়ছে দলটি। আগের দুই বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর এবারের শিরোপা জয়কে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন লিওনেল মেসি। তার খেলার ধরনেই বলে দিচ্ছে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিটি তিনি এবারের বিশ্বমঞ্চ থেকেই আদায় করে নিতে চান।

মেসির মতো দারুণ ফর্ম ধরে আছেন ডাচ তারকা এ্যারিয়েন রোবেনও। দুই তারকার লড়াইটাও আজ বেশ গুরুত্ব পাবে এই ম্যাচে। আর্জেন্টিনাও গ্রুপ পর্বে সব কটি ম্যাচ জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। দ্বিতীয় রাউন্ডে দলটি হারিয়েছে সুইজারল্যান্ডকে। আর কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা হারায় বেলজিয়ামকে। ফাইনালে উঠতে আজ দলটির সামনে হল্যান্ড। অবশ্য খেলোয়াড় হারানোর বেদনায় আছে আর্জেন্টাইন কোচ সাবেলা। বেলজিয়ামের বিপক্ষে ম্যাচে ইনজুরিতে পড়েছেন এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। তবে ম্যাচে ফিরছেন দলের আরেক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় মার্কোস রোহো। আর্জেন্টিনা দলের আরেক স্বস্তির বিষয় মেসির ওপর শতভাগ নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসা। বেলজিয়ামের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে জয়সূচক একমাত্র গোলটি করেছেন গঞ্জালো হিগুয়েন। এতে প্রমাণিত হয়েছে আর্জেন্টিনা শতভাগ মেসি নির্ভরতার মধ্যে নেই। এবারের বিশ্বকাপের শুরুতেই চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত করে ডাচরা যে যাত্রা শুরু করেছিল শেষ দিকে এসে সেই ধারা রাখতে পারেনি। গ্রুপ পর্বে সব ম্যাচে জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হল্যান্ড দ্বিতীয় রাউন্ডে মেক্সিকোকে হারায় ২-১ গোলে।

আর কোয়ার্টার ফাইনালে কোস্টারিকার বিপক্ষে জয় পায় টাইব্রেকারে। ম্যাচ শেষ হবার আগ মুহূর্তে যদি তিনি দীর্ঘদেহী গোলরক্ষক টিম ক্রুলকে মাঠে না নামাতেন তাহলে হয়তো প্রতিপক্ষের বল আটকে দেয়া সম্ভব হতো না। এই ম্যাচ নিয়ে মেসি বলেন, ‘আমাদের বুঝতে হবে আমরা এমন একটি দলের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি যে দলটি প্রতি আক্রমণে শ্রেষ্ঠ আসনে রয়েছে। তাই আমাদের এই বিষয়ে নিশ্চিত করতে হবে যে অপ্রয়োজনে যাতে বল হাতছাড়া না করি। ম্যাচে আমাদের ঠিক করা লক্ষ্য পূরণ করতে হলে সবার আগে প্রয়োজন গভীর মনোযোগ।’ অপরদিকে হল্যান্ড দলের গুরুত্বপূর্ণ তারকা ডির্ক কুয়েট ফিফা বলেন, ‘সেমিফাইনলটি হবে চমৎকার। তবে বিশ্বকাপ হারানোর অনুভূতিটি কেমন সেটি আমরা জানি। এখন আমরা সেটি জয় করতে চাই। আর্জেন্টিনা হচ্ছে বিশ্বের একটি মানসম্পন্ন দল। যোগ্য দল হিসেবেই তারা শেষ চারে উন্নীত হয়েছে। তবে তাদের বিপক্ষে আমরা সেরাটাই প্রদর্শন করতে চাই। শুধু সেরাটা প্রদর্শন করা নয়, আমরা জয়লাভ করতে চাই। এ কারণেই আমরা এখানে এসেছি।’



মন্তব্য চালু নেই