আরো ১৭ পণ্য শুল্কমুক্ত প্রবেশ সুবিধা পাবে চীনে

চীনের বাজারে আরো ১৭ পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে বাংলাদেশ।

এ ছাড়া বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে চায় চীন সরকার। এক্ষেত্রে গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পসহ বাংলাদেশের যেকোনো বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে চায় দেশটি।

সোমবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে এনএসই কক্ষে বাংলাদেশ-চীন যৌথ অর্থনীতি কমিশনের ১৪তম সভা শেষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন এ কথা জানান।

মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন বলেন, চীনের বাজারে নতুন করে আরো ১৭টি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা আমরা চেয়েছি। পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে- তামাক, গার্মেন্টস, শর্ট গুডস, লেদার, গ্লোস, সিল্ক, ফাইবার ইত্যাদি। আমরা আশা করছি, দ্রুত এই ১৭টি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পাব।

তিনি বলেন, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন তাদের সহায়তা আরো বাড়াবে। এক্ষেত্রে চার-পাঁচটি প্রকল্প খুব শিগগিরই শুরু করা যাবে।

এক প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, প্রক্রিয়াগত কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হচ্ছে। তবে এসব প্রক্রিয়া সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতি তিন মাস অন্তর চীনা রাষ্ট্রদূত ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ যৌথ বৈঠক করবে।

জ্যেষ্ঠ সচিব জানান, চীন বাংলাদেশে বিনিযোগ বাড়াতে ব্যবসায়িক পরিবেশ, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসন ও জ্বালানি প্রাপ্তির নিশ্চিয়তা চায়। একই সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগে স্পেশাল ইকোনোমিক ও অ্যাপারেল জোন নির্মাণ দ্রুতকরণের তাগিদ দিয়েছে দেশটি।

‘এসব সমস্যা সমাধানে ওয়ান স্টপ সার্ভিস (এক ভবনে সব সমস্যার সমাধান), ইকোনোমিক জোনে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস বিদ্যুৎ সরবরাহ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজীকরণের আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশ।’

মেজবাহ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরো বাড়ানোর জন্য সভায় দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়েছে। যৌথ কমিশনের মূল্য উদ্দেশ্য- দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা খোঁজ করা।

তিনি বলেন, সভায় অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্কিত ঐকমত্যের বিষয়গুলো পর্যালোচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশে চীনা সহায়তা জোরদার করার বিষয়, প্রধান প্রকল্পগুলোর সহযোগিতা বৃদ্ধি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ শিল্পাঞ্চলের উন্নয়নে সহযোগিতার বিষয় আলোচনা হয়েছে।

সিনিয়র সচিব আরো বলেন, বাংলাদেশ পক্ষ থেকে অনুদান ও সহজ শর্তের ঋণ বৃদ্ধির বিষয়ে চীনা পক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের চীনা ভিসা সহজীকরণের দাবি জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে চীনের বাজারে ইতিমধ্যে ৪ হাজার ৭০০ পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় বাংলাদেশ। নতুন করে আরো ১৭টি পণ্য যোগ হতে যাচ্ছে।

বৈঠকে চীনের সহকারী বাণিজ্যমন্ত্রী গাও ইয়ান তার দেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ইআরডির জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন।

এবারের ১৪তম জেইসি বৈঠকে সাতটি বিশেষ বিষয় গুরুত্ব পায়। এর মধ্যে বাংলাদেশ-চায়না মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থা চালুর বিষয় ছাড়াও চীনা সহায়তায় নেওয়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হয়।

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে আমদানি ও রপ্তানি, বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধি, চীনা অর্থায়নে প্রকল্পের অভ্যন্তরীণ দরপত্র প্রক্রিয়া এবং বায়ার্স ক্রেডিটসহ আরো বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।



মন্তব্য চালু নেই