আমি রাজা হলে মেসি রাজপুত্র : পেলে

কালো মানিক পেলে। তবে তাকে এক নামে বলা হয় ফুটবলের রাজা (দ্য কিং অব ফুটবল)। শত্রুরাও তাকে এই নামে চেনেন। সুতরাং, ফুটবলে রাজা যদি থাকে তাহলে তো রাজপুত্রও আছে। কে তিনি? পেলের কোন ছেলে? না, পেলে নিজেই এবার ঘোষণা দিলেন, আমি যদি ফুটবলের রাজা হই, তাহলে অবশ্যই রাজপুত্র হওয়া উচিৎ মেসি।

বুড়ো বয়সে কী তাহলে ভিমরতিতে ধরলো? মেসি এবং আর্জেন্টিনা বিরোধী ও পেলে ভক্তরা এমনটা ভাবলে দোষ দেওয়ার কিছু নেই। কারণ, প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ আর্জেন্টিনার হওয়ার কারণে মেসির কঠোর সমালোচক ছিলেন পেলে। বার্সার আর্জেন্টাইন ক্ষুদে জাদুকরকে যে তার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছিল এক সময়, তাতে বেশ বিরক্ত ছিলেন পেলে। সেই তিনি হঠাৎ কিভাবে মেসি ভক্ত হয়ে গেলেন!

আসলে মেসির এমনই এক গুণ। লাতিন আমেরিকা নয় শুধু, পুরো ফুটবল বিশ্বে চীর প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের ফুটবলাররাও ছিল প্রতিদ্বন্দ্বী। দু’দেশের ফুটবলারদের কেউ কারও বন্ধু হয়েছেন, কিংবা কেউ কাউকে পছন্দ করে এমন কথা কখনও শোনা যায়নি। তবে মেসিই শুধু ব্যাতিক্রম। দেখা গেলো আর্জেন্টাইন এই ফুটবলার ব্রাজিলেও ব্যাপক জনপ্রিয়। কিংবদন্তী রোনালদো, রোনালদিনহো, রোমারিও থেকে শুরু করে বিখ্যাত সব ফুটবলারকেই দেখা গেলো মেসি ভক্ত। মেসির নামে তারা প্রকাশ্যে প্রশংসা করছে।

পেলে এক সময় মেসির প্রবল বিরোধী হলেও কিছুদিন হলো তার সমর্থকে পরিণত হয়েছেন। এবার লা ভাঙ্গুয়ার্দিয়াকে (ইএসপিএন সকারের লাতিন সংস্করণ) দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পেলে বলেন, ‘আমি ফুটবলের রাজা হলে, মেসি হলো রাজপূত্র। গত ১৫ বছর ধরে সে রাজপূত্র।’

তবে মেসিকে কখনও ফুটবলের রাজা বলে স্বীকার করবেন না পেলে। কারণ তিনি মনে করেন, ফুটবলের রাজা থাকলে একজনই আছেন। তিনি নিজেই। পেলে বলেন, ‘আমি কখনওই তাকে রাজা ডাকবো না। কারণ, এখানে মাত্র একজনই রাজা রয়েছে। আর আমার মা-বাবা অনেক আগেই রাজা বানানোর ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দিয়েছেণ এবং মোল্ডটাও ভেঙে ফেলেছেন। সুতরাং, রাজা একজনই।’

মেসিকে রাজপুত্র বললেও পেলের চোখে আর্জেন্টিনার সেরা এবং পরিপূর্ণ ফুটবলার হলেন রিয়াল মাদ্রিদ কিংবন্তী আলফ্রেডো ডি স্টেফানো। এমনকি দিয়েগো ম্যারাডোনার চেয়েও এগিয়ে রাখলেন ডি স্টেফানোকে। আর্জেন্টিনার এই তিনজন ফুটবলারই খেলেছেন তিনটি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে। আলফ্রেডো ডি স্টেফানো এবং লিওনেল মেসি হয়তো বিশ্বকাপ জিততে পারেননি। যে কারণে, অনেকেই তাদেরকে সর্বকালের সেরার তালিকায় তুলতেও নারাজ।

তবে পেলের ক্ষেত্রে হিসাবটা ভিন্ন। যখন সেরা বিচার করতে গিয়ে বিশ্বকাপ জয়ের মানদণ্ডটা সামনে চলে আসে তখন পেলের চেয়ে কেউ এগিয়ে থাকার কথা নয়। কারণ, তিনিই একমাত্র ফুটবলার যিনি জিতেছেন তিনটি বিশ্বকাপ শিরোপা। সুতরাং, তার কথারও একটা মূল্য আছে। তার মতে, আর্জেন্টিনার তৃতীয় প্রজন্মের সেরা ফুটবলার হলেন মেসিই। প্রথম প্রজন্ম ডি স্টেফানো, দ্বিতীয় প্রজন্ম দিয়েগো ম্যারাডোনা।



মন্তব্য চালু নেই