‘নাহ কখনই না, আমি কোনদিন মুসলমান হব না।’

কট্টর নাস্তিক রুবেনের সোজা জবাব ছিলো, মুসলমানরা জঙ্গী সন্ত্রাসী, ওই ধর্মকে গ্রহণ করার কোনো প্রশ্নই আসেনা।

অস্ট্রেলিয়ার তরুণ রুবেন জানান, তার পিতামাতা তাকে শিখিয়েছেন আমরা প্রাকৃতিক নিয়মে জন্ম নিয়েছি, এই প্রাকৃতিক নিয়মগুলি প্রাকৃতিক ভাবেই ছিল আর প্রাকৃতিক ভাবেই থাকবে। প্রকৃতি নিজেকে স্রষ্টা দাবি করেনা, এমনি এমনিই নিয়মগুলি হয়েছে, এমনি এমনিই পানি থেকে জীবন এসেছে, এতে কোনো স্রষ্টা লাগেনি, তাই স্র্রষ্টা নেই। আবার একদিন আমরা এমনি এমনিই মরে যাবো, প্রকৃতির অংশ হয়ে যাবো, মরার পরে কোনো কোর্ট কাচারী নেই, এসব বাজে কথা।

বাবাকে বললাম, চাঁদে পানি থাকবেনা কিন্তু পৃথিবীর তিন চতুর্থাংশ পানি থাকবে, অথচ সবগুলিই গ্রহ উপগ্রহ। আবার বিমান দুর্ঘটনায় সবাই মরে যায়, একটা শিশু বেঁেচ থাকে, অথচ সবাই বাঁচতে চেয়েছিলো। এটা প্রকৃতি কিভাবে সিদ্ধান্ত নেয় আর কে তা ডিজাইন করে ? বাবা বললেন এমনি এমনিই হয় ।

বাবার কথায় আমি কট্টর নাস্তিক ছোটবেলা থেকে। ঈশ্বর বিহীন জগতে বাবাকে ঈশ্বরের মত ভাবতাম, কিন্তু তিনি আমার মাকে ছেড়ে চলে গেলেন, প্রথম ধাক্কা খেলাম জীবনে, এটাও কি এমনি এমনি প্রাকৃতিক নিয়ম, তাহলে আমার বন্ধুর পিতা মাতা এত সুখী কেন ?

মাত্র ১৮ বছর বয়সে আমার সেই বন্ধুটিও এমনি এমনিই মরে গেলো, কি আজব মরণ, মনে হলো বেড়ে দেয়া গরম ভাত দুই মিনিটে ঠান্ডা হয়ে গেছে, তার জীবনটা সে শুরুই করতে পারেনি, এমনি এমনি এত সহজে প্রকৃতি তাকে নিয়ে গেলো ? ফিজিক্স আর কেমিস্ট্রির ফর্মুলার মতো অক্সিজেন আর হাইড্রজেন মিলালে যদি পানি হয়, মানুষের জীবন কেন একই ধরনের প্রাকৃতিক ফর্মুলায় চলেনা ?

কেউ ধনী অথচ অসুখী আর গরীব অথচ সুখী, কিন্তু ফর্মুলা অনুযায়ী সব ধনীর সুখী থাকার কথা। পদার্থের ফর্মুলার জগত আর মানুষের ফর্মুলার জগতে পার্থক্য কেন ? এমনি এমনি ? এই প্রকৃতির মাঝে একটা কন্ট্রোল রুম না থাকলে এরকম তো হওয়ার কথা নয়।

কোনো জবাব নেই আমার কাছে-কেন আমি, কে আমি, কোথায় আমি? প্রকৃতির সব প্রাণী একরকম মানুষ শুধু অন্যরকম, এটি কি এমনি এমনি হয়েছে ? ড্রিংকস করতে শুরু করলাম, পুলিশেও ধরলো। একজন তরুণের জীবনের কঠিন হতাশা আমাকে চেপে ধরলো।

মৃত বন্ধুটির কথা প্রায়ই মনে হতো। ভাবতাম আমি যদি কাল ওর মতই মরে যাই তাহলে কি হবে ? কিছুই না! সাত বিলিয়ন লোকের পৃথিবীতে আমার পরিচিত মুষ্টিমেয় কয়েকজন মাত্র জানবে ছেলেটি মরে গেছে। কিন্তু মানব জীবন কি কুকুর বিড়ালের মৃত্যুর মতো এতই ছোট, এতই অর্থহীন, উদ্দেশ্য বিহীন হতে পারে ? আমার অস্তিত্বের মধ্যে এক আজব শূন্যতা অনুভব করতে শুরু করলাম। তখন মনে হলো বাবার শেখানো প্রাকৃতিক নিয়মের বাইরে অবশ্যই মানুষের জন্যে কিছু একটা আছে, থাকতেই হবে। তা না হলে মানুষেরা আলাদা কেন ? শুধু মানুষকে যা খুশী ভাবার বুদ্ধি আর যুক্তি বোঝার মন দেয়া হলো কেন ? আর সব প্রাণীর বুদ্ধি আছে হয়তো কিন্তু যুক্তি বোঝেনা কেন ?

মনে হলো মানুষের এই অসহায় শুন্যতা পূরণের জন্যে হয়তো ধর্মের উদ্ভব হয়েছে। আমার অসহায়ত্ব আর একাকীত্ব ঘুচানোর জন্যে ভাবলাম ধর্মকে ব্যবহার করে দেখি।

অস্ট্রলিয়ান হিসাবে সোজা খ্রিস্ট ধর্মকেই ধরলাম। ভাবলাম গাড়ির কাঁচে স্টিকার লাগাবো, ‘আই লাভ জেসাস’ তারপরে নিষিদ্ধ জায়গায় পার্কিং করে জরিমানা না খেলে ভাববো ঈশ্বর আছেন। খ্রিস্ট ধর্মের সব গ্রুপের বিশ্বাস নিয়ে পড়াশুনা করলাম,পন্ডিতদের সাথে বসলাম-আমার জবাব মিললোনা, তাদের কথাবার্তা ভালো ছিলো, কিন্তু মনে হয়নি তারা আমার শুন্যতা পূরণের উপযোগী ধর্মের কথা বলছেন।

অবাক লাগলো, ঈশ্বর তার অলৌকিক সন্তানকে দুনিয়াতে পাঠিয়ে অসহায় ভাবে তার পুত্রকে ক্রুসিফাই করালেন, তাতে বাকি সবাই পাপমুক্ত হয়ে গেলো। আবার পবিত্র আত্মার উপস্থিতি পিতা পুত্রের মাঝখানে, সবাই ঈশ্বর পার্টনার। ঈশ্বর একাই তো যথেষ্ঠ হওয়া উচিত, যদি উনি ঈশ্বর হয়ে থাকেন। ঈশ্বর কেন আমার বাবার মতো সংসার পেতে বসবেন আর আমাকে যখন ঝুলাচ্ছে তখন চুপ করে দেখবেন, যৌক্তিক লাগলোনা। মনে হলো অযৌক্তিক কথা-বার্তার কারণেই গীর্জাগামীদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।

হিন্দু ধর্ম দেখলাম। আমার কাজের জায়গায় হিন্দু সহকর্মীরা ছিলো, আমরা ধর্ম নিয়ে সারাক্ষণ কথা বলতাম, আমি ঝগড়া করতামনা কারণ ওরা ভালো বন্ধুও ছিলো। ওরা বলতো তোমার সম্পদের ব্যাপারে একজন দেবতাকে বিশ্বাস করতে হবে, আবার বিদ্যার ব্যাপারে আর একজন দেবতাকে, এভাবে সব প্রয়োজনের জন্যে আলাদা আলাদা দেবতাকে বিশ্বাস করতে হবে। আমি তখন বলতাম, কাম অন ম্যান, দেবতাদের মধ্যে যদি ডিপার্টমেন্টাল তর্ক লেগে যায়, তখন কি হবে ?

ইহুদী ধর্ম দেখলাম, নতুন কিছু পেলামনা। বুদ্ধকে ভালো লাগলো। কিন্তু গৌতম বুদ্ধ নিজের সম্মন্ধে যা বলেছেন তাতে একজন প্রেরিত পুরুষের মত কোনো কথা নেই। আমার যে মৌলিক প্রশ্ন, ‘আমি কেন পৃথিবীতে এসেছি’-তার কোনো জবাব পেলামনা এই ধর্মে, অথচ অনেক সুন্দর কথা আছে।
তখন আমার এক খ্রিস্টান বন্ধু বলল, ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে দেখো ।

নাহ ম্যান, ওরা তো সন্ত্রাসী! আমি কোনো মসজিদের ধারে কাছে যাবো না, কখনো-ই না। কিন্তু কদিন পরে আমি কেন জানিনা প্রেস্টন এলাকার মসজিদের সামনে নিজেকে আবিষ্কার করলাম। মসজিদে ঢুকে পড়লাম পায়ের জুতো না খুলেই। এ সময় এক ব্যক্তি নামাজ পড়ছিলেন ও সিজদারত অবস্থায় ছিলেন। আমি সরাসরি তার কাছে গিয়ে দাঁড়াই। আমি তার নামাজ পড়ার দৃশ্য দেখতে লাগলাম। এ অবস্থায় মসজিদের আলেম আবু হামজাহ হাসিমুখে আমাকে স্বাগত জানাতে এলেন ও তার কার্যালয়ে আমন্ত্রণ জানালেন। সেখানে আমি স্রষ্টা ও ইসলাম সম্পর্কে যখন নানা প্রশ্ন করছিলাম তখন তিনি জবাব দিচ্ছিলেন শুধু কোরানের উদ্ধৃতি দিয়ে।
এরপর যতবারই আমি যাকেই প্রশ্ন করেছি কেউ তার মন থেকে নিজস্ব কোনো জবাব দেয়নি, সবাই আমার হাতে কোরান ধরিয়ে বলত এই দেখো তোমার প্রশ্নের উত্তর আল্লাহ এভাবে দিয়েছেন। অথচ আমি যখন পাদ্রীদের কাছে যেতাম বাইবেল দেখিনি কখনো। তারা তাদের নিজস্ব যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করতেন। দু-একজন দু-একবার বাইবেল পড়ে উদ্ধৃতি দিয়েছিলেন অবশ্যই। কিন্তু প্রতিটি মসজিদে আমি যখনই প্রশ্ন নিয়ে গিয়েছি, জবাবে তারা কোরান নিয়ে এসেছেন ।

আমি পরিস্কার বুঝে গেলাম, ইসলাম ধর্মকে তার অনুসারীদের প্রশ্নবোধক কার্য্যকলাপ দেখে বোঝা যাবেনা। ইসলাম আসলে একটি গাইড বই, যে এটি অনুসরণ করছে ঠিকঠাক সে ইসলামে ঢুকে গেছে, তার নাম হয় মুসলিম। আর যে অনুসরণ করছেনা তার নাম আর পাসপোর্টে মুসলিম লেখা থাকলেও সে তা নয় প্রকৃত পক্ষে।
এই সত্য অনুধাবন করার পর আমি কোরান পড়তে শুরু করি, ৬-৭ মাস অধ্যয়ন করার পর আমার মাথায় অনেক প্রশ্ন হাজির হয়, তখন আমার বয়স ২০।

এইরকম বয়সে আমি কিভাবে মুসলমান হলাম, সে এক অদ্ভুত হাস্যকর কাহিনী।
একদিন রাতে আমার কয়েকজন অস্ট্রলিয়ান বন্ধু বড় অক্ষরে ছাপানো এক খন্ড কোরানুল করিম দিলো। আমার কাছে ছোট অক্ষরের কোরান আগেও ছিলো। সেদিন রাতে কেন জানি আমি বিছানায় বসলাম সেই কোরান খন্ড হাতে নিয়ে। পাশে জ্বালালাম একটি মোমবাতি। জানালা খুলে দিলাম। গ্রীষ্ম কালের একটি সুন্দর সোনালী সন্ধ্যা। আবহাওয়া চমৎকার, চারিদিক নির্জন। একটা পবিত্র অনুভুতি অনুভব করছিলাম, অতি সুন্দর।
কোরান পড়া শুরু করলাম অন্যান্য রাতের মতো আর ভাবনা গুলো খেলতে শুরু করলো মাথার ভেতরে। মনে হলো বইটিতে ঠিক সেই কথাগুলিই লেখা আছে যা একজন সৃষ্টি কর্তার তরফ থেকে হওয়া উচিত। আবার এক ধরনের দ্বন্দও কাজ করছিলো, কি জানি হয়ত ঈশ্বরই নেই, আমি ঠিক বোঝাতে পারবোনা, আমার কারো সহায়তা দরকার ছিল তখন ধাতস্ত হতে, আমি কোরান হাতে ধরে সোজা হয়ে বসলাম।

বললাম ও ঈশ্বর, তুমি যদি থেকেই থাকো আমাকে একটা চিহ্ন দেখাওতো, ভালো বা বড় কিছু। যেমন ধরো এই গরমে এখানে বজ্রপাত হয়না, এখন তুমি যদি আকাশ ফাটিয়ে প্রচন্ড শব্দে একটা ফেলে দাও, আমি বুঝব তুমি আছ। অথবা নিঃশ্বব্দে একটা বিদ্যুৎ চমক দেখাও আকাশের দিগন্তে আলোক ছটা নিয়ে, যদি তুমি এরকম শোনাও বা দেখাও-আমি তোমার, তোমারই গোলাম হয়ে যাবো, কথা দিলাম ।

আকাশে তারা ছাড়া আর কোনো আলো নেই, বজ্রপাত তো দুরের কথা জেট বিমানেরও কোনো শব্দও এলোনা।
ঠিক আছে অসময়ে বজ্রপাতের জন্যে হয়তো তুমি রাজি নও ঈশ্বর, তাহলে মটমট করে একটা ডাল বা কোনো কিছু ভাঙ্গার শব্দ শোনাওনা। কিছু কানে এলোনা।

ঠিক আছে ঈশ্বর, আমার সামনে যে মোমবাতিটি জ্বলছে তার শিখাতে একটা বিস্ফোরণ ঘটাও দুই ফুট উচু সিনেমায় যেমন দেখায়, আমি মুগ্ধ হয়ে তোমাকে বিশ্বাস করবো। মোমবাতি মিটমিট করেই জ্বলতে রইলো।
আমি অপেক্ষায় অথচ কিছু ঘটছেনা একটু হতাশা আর গোস্বা অনুভব করলাম। বললাম ঈশ্বর, তুমি নিজেকে সবচেয়ে শক্তিশালী দাবি করো অথচ আমাকে তোমার কোনো চিহ্ন দেখাতে পারলে না! ঠিক আছে আমি তোমাকে আর একটা সুযোগ দিচ্ছি, বজ্রপাতটি একটু বেশি চাওয়া হয়ে গেছে, সব সময় যা হয় সেরকম কিছু করাও, একটা গাড়ীকে লম্বা হর্ন দিয়ে রাস্তা দিয়ে পার করাও, আমি এত ছোট কিছু চাইছি তোমাকে বিশ্বাস করার জন্যে। ধরে নেবো এটাই আমার জন্যে তুমি আছ তার চিহ্ন ঠিক আছে ?

অবাক কান্ড, ঈশ্বর একটা ট্যাক্সিও খুজে পেলেন না যেটা হর্ন দেয় ! মনটা খারাপ হলো, চুপ মেরে আছি। মনে হলো আমি মহাশুন্যের নিস্তবদ্ধতায় বসে আছি, একটি পিপড়ার পদশব্দও শুনছি না, আমি একটু ভেঙ্গেই পড়লাম, ভেবেছিলাম আজকের এই মুহুর্তটিতে আমি কিছু একটা খুঁজে পাবো, যা ঈশ্বর থাকার নিদর্শন। না কিছু হলনা।

হতাশ হয়ে অলস ভঙ্গীতে কোরান হাতে উঠিয়ে পৃষ্ঠা উল্টাতেই চোখ আটকে গেলো একটি আয়াতের দিকে, “বিশ্বাসীদের জন্যে আকাশ ও পৃথিবীতে নিদর্শন রয়েছে। তোমাদের সৃষ্টিতে আর চারদিকে ছড়িয়ে রাখা জীব-জন্তুর সৃজনের মধ্যেও নিদর্শনাবলী রয়েছে। দিন ও রাতের পরিবর্তনে আর বৃষ্টির পরে পৃথিবীকে তার মৃত্যুর পর আবার জীবিত করা হয়, তার মধ্যে আর বায়ুর পরিবর্তনে, এসবই তো নিদর্শন’। (৪৫:৩-৫)
হটাৎ মর্মে অনুধাবন হলো ছোট বেলা বাবা বলেছিলেন, এমনি এমনি হয় প্রাকৃতিক নিয়মগুলি, আমার বোঝা হয়ে গেল এমনি এমনি কিছু হয়না তাতে একজন ডিজাইনার লাগে, তিনি আমাকে তার উপস্থিতি জানিয়েছেন। আমি মুসলিম হবো।

পরদিন সন্ধ্যায় রমজানের প্রথম রাতে আমি যখন মসজিদে অপেক্ষা করছিলাম, আর অসংখ্য মুসলমান তারাবী নামাজ পড়ছিল তখনও এক ধরনের ভয় কাজ করছিলো মনের ভেতর, কিন্তু যখন শেখ ফাহমী আমাকে সত্যই শাহাদা পড়াচ্ছিলেন, কোথায় চলে গেলো সব দ্বিধা, মনে হলো কাদেরকে ভাবতাম এতোদিন জঙ্গী সন্ত্রাসী। মনে হচ্ছিলো আমি একা কোথাও দাঁড়িয়ে, মাথার ওপর গড়িয়ে পড়ছে ঠান্ডা জল, অদ্ভূত এক পবিত্র স্নানে নির্মল হয়ে উঠছে আমরা সর্বাঙ্গ, তনু-মন। সব ভায়েরা আমাকে আলিঙ্গন করে যাচ্ছে মায়া আর ভালবাসার স্পর্শ নিয়ে। আমি প্রস্ফুটিত হয়ে উঠছি।

১৯৯৬ সনে রুবেন মাত্র ২০ বছর বয়সে আবু বকর নাম ধারণ করেন আর বলেন, পশ্চিমারা ধর্মান্তরিত হলে বলে কনভার্ট, মানুষ যখন ইসলাম ধর্মে ঢোকে সে কনভার্ট নয় সে হয় রিভার্ট, যিনি ফিরে আসেন। মুসলিম কোনো নাম নয়, মুসলিম একটি ক্রিয়াপদ, ভার্ব। আমার বাসার পেছনে যে বড় গাছটি আছে সে আল্লাহর হুকুম পালন করছে, আল্লাহ তাকে যা নির্দেশ দিয়েছেন তাই মেনে চলছে। গাছটি আমার কাছে মুসলিম। সে আল্লাহর ইচ্ছার কাছে নিজেকে সঁপে দিচ্ছে।

যখন একটি বাচ্চার জন্ম হয় তখন ক্ষুধা লাগলে কাঁদে, সব বাচ্চারাই কাঁদে, এই প্রাকৃতিক নিয়ম সে আল্লাহর ডিজাইনে করে। সে তখন মুসলিম। যখন সে বড় হয় তখন সে অন্যদের কাছ থেকে নতুন কিছু শিখে এবং অন্যের আদর্শকে অনুসরণ করে মুসলিম থেকে সরে যায়। পরবর্তী সময়ে সে যদি ফিরে আসতে চায় সে রিভার্ট করছে নিজেকে, কনভার্ট নয়। কারণ আল্লাহ বলেছেন, আমি সব শিশুকে মুসলিম হিসেবে জন্ম দেই।
আমি ফিরে এসেছি মানুষের জন্যে এক অফুরন্তজীবনের উৎসে, আমি একজন মুসলিম, বাকিরাও তাই ছিলো, তারাও আসবে একদিন ফিরে ।

‘হে মানুষ, আমি তোমাদের এক পুরুষ আর এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি, পরে তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পারো। তোমাদের মধ্যে সে-ই আল্লাহর কাছে বেশি মর্যাদাসম্পন্ন যে বেশি সাবধানী। আল্লাহ সব কিছু জানেন, সব খবর রাখেন।’ (৪৯:১৩ )
উল্লেখ্য আবু বকর একজন মনস্তত্ববিদ এবং একজন ফিল্ম-মেকার। প্রেস্টন ভিক্টোরিয়াতে তার নিবাস।



মন্তব্য চালু নেই