আবারও সেই ‘তামিম তাণ্ডবেই’ চিটাগংয়ের জয়!

ঝড় তোলার ইঙ্গিত দিয়েও পারেননি ক্রিস গেইল। তার বিদায়ের পর দুর্দান্ত ব্যাটিং করে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যান চিটাগং অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ড্যাশিং এই ব্যাটসম্যান দারুণ এক অপরাজিত হাফ সেঞ্চুরি করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। সেইসঙ্গে অর্জন করেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। দেশসেরা এই ওপেনারের দুটি ক্যাচ ছাড়ে খুলনার ফিল্ডাররা। তামিমের ক্যাচ ছাড়ার পরিণাম কী হতে পারে তা তো জানা কথাই। দুর্দান্ত বোলিংয়ে খুলনাক টাইটান্সকে কম রানে বেঁধে ফেলার পর তামিমের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৫ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল চিটাগং ভাইকিংস।

টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে তামিম-গেইলদের চিটাগং ভাইকিংসকে ১৩২ রানের টার্গেট দেয় খুলনা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে স্বভাবসুলভ আক্রমণাত্বক ক্রিকেট শুরু করেন চিটাগংয়ের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং ক্রিস গেইল। তবে জুটিতে ৩৯ রান আসতেই হোঁচট খায় চিটাগং। শুভাগত হোমের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে জুনায়েদ খানের হাতে ধরা পড়েন গেইল। আউট হওয়ার আগে ১১ বলে ৩ চার এবং ১ ছক্কায় করেন ১৯ রান। এরপর দূর্ভাগ্যজনক রানআউটের শিকার হয়ে ফিরে যান এনামুল হক বিজয় (৩)।

নতুন ব্যাটসম্যান শোয়েব মালিককে নিয়ে ইনিংস গড়ার কাজ শুরু করেন অধিনায়ক তামিম। কিন্তু এতেও বিপত্তি! আবারও রানআউটের দূর্ভাগ্য এসে ভর করে চিটাগং দুর্গে। ফিরে যান শোয়েব মালিক (১)। এরপর মোশাররফ হোসেনের ঘূর্ণিতে নিকোলাস পুরানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান জাকির হাসান (৩)। জাকিরের বিদায়ের পর জহুরুল ইসলামকে নিয়ে ৩৭ রানের কার্যকরী একটি জুটি গড়েন তামিম। ৪৯ বলে তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। জুটি জমে উঠতেই কুপারের বলে মাহমুদ উল্লাহর দারুণ এক ক্যাচে বিদায় নেন জহুরুল। তিনি ১৮ বলে ২ চার এবং ১ ছক্কায় ২২ রান করেন। তামিমের নতুন সঙ্গী হন আফগান অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবি। দুজনে মিলেই দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ৫৯ বলে ৮ চার এবং ১ ছক্কায় ৬৬ রান করে অপরাজিত থাকেন তামিম। মোহাম্মদ নবি ১৪ বলে ২ চার এবং ১ ছক্কায় ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৩ রানেই তাইবুর রহমানকে (১) বোল্ড করে খুলনার ইনিংসে ধসের শুরু করেন দুর্দান্ত পারফর্ম করা আফগান অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবি। স্কোরবোর্ড আর ৮ রান যোগ হতেই আবারও খুলনার উইকেট পতন। সাকলাইন সজীবের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান অলক কাপালী (৩)। ৩ রানের ব্যাবধানে আবারও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে শুভাশীষ রায়ের বলে শোয়েব মালিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শুভাগত হোম (২)। স্কোর বোর্ডের এই করুণ দশায় দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন অধিনায়ক মাহমুদ উল্লাহ এবং ওপেনার রিকি ওয়েসেলস।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে ২৪ রান আসার পর ইমরান খানের বলে ক্রিস গেইলের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন সাবলীল খেলতে থাকা ওয়েসেলস। তিনি ১৬ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২০ রান করেন। এই মুহূর্তে অধিনায়ক মাহমুদ উল্লাহ এবং আরিফুল হক মিলে দলের বিপদ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। দূর্ভাগ্যজন্যক রানআউটের শিকার হয়ে আরিফুল হক বিদায় নেওয়ার আগে দুজনে মিলে পঞ্চম উইকেটে ৪৪ রানের জুটি গড়েন। আরিফুল ২০ বলে ১ বাউন্ডারিতে ১৮ রান করেন। একা লড়াই করে দলীয় ৯৫ রানে ফিরে যান মাহমুদ উল্লাহ। তার ৩৯ বলে ৪ বাউন্ডারি এবং ১ ওভার বাউন্ডারিতে গড়া ৪২ রানের ইনিংসটি শেষ হয় তাসকিন আহমেদের বলে জাকির হোসেনের হাতে ধরা পড়ে।

সপ্তম উইকেট জুটিতে ৩২ রানের পার্টনারশিপ গড়েন নিকোলাস পুরান এবং কেভিন কুপার। ব্যক্তিগত ১৫ রানে ইমরান খানের বলে এনামুল হকের হাতে ধরা পড়েন কুপার। ৩ রানের ব্যবধানে তাসকিন আহমেদের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন পুরান (১৮)। এই পরিস্থিতিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩১ রান সংগ্রহ করে খুলনা।



মন্তব্য চালু নেই