আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুলশান হামলা

ঢাকার গুলশান হামলার ঘটনটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপক গুরুত্ব পেয়েছে। বিবিসি, সিএএন, রয়টার্স, আল জাজিরাসহ এ নিয়ে সংবাদ পরিবশন করেছে প্রথম শ্রেণির সংবাদ মাধ্যমগুলো।

রাত পৌনে ৯টার দিকে গুলশানের আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ১০ জন যুবক অতর্কিত হামলা চালায়। এরপর তারা ওই রেস্তোরাঁয় যারা ছিলেন তাদের জিম্মি করে। ঘটার পরপরই উদ্ধার অভিযান চালায় পুলিশ ও র‌্যাব। দু পক্ষের বন্দুকযুদ্ধে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছে। শেষ খবর পাওয়া ৪ বিদেশিসহ ১২ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ।

ঢাকার সহিংস ঘটনা নিয়ে ‘Bangladesh police storm restaurant, rescue some hostages’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রয়টার্স। স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানাচ্ছে ঢাকার রেস্তোরায় হামলাকারী বন্দুকধারীদের সঙ্গে শুক্রবার রাত থেকে পুলিশের যে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়েছিল শনিবার সকালে তা শেষ হয়েছে। আট থেকে ১০ জিম্মিকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে রেস্টুরেন্টের অভ্যন্তরে এখনো কোনো জঙ্গি ও জিম্মি রয়েছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় ঢাকার নিরাপত্তা বাহিনী।

‘Bangladesh forces storm Dhaka hostage cafe’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিবিসি জানাচ্ছে, ঢাকার গুলশানের হোলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জিম্মী উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে। রেস্টুরেন্ট ভবনটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন। রেস্টুরেন্টের ভেতর থেকে অন্তত পাঁচটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এই মৃতদেহগুলো কাদের তা এখনো নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

জঙ্গি হামলার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর অভিযানের মাধ্যমে জিম্মী সংকটের অবসান হয়। সকাল পৌনে আটটার দিকে গুলশানে হোলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জিম্মিদের উদ্ধারে কমাণ্ডো অভিযান শুরু হয়। সেনা ও নৌ কমান্ডোরা ছাড়াও অভিযানে অংশ নিয়েছে পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবি সদস্যরা।

এর আগে বিবিসি জানায়, ওই ক্যাফেতে কমপক্ষে ২০ জনকে জিম্মি করা হয়েছে। এদের মধ্যে আটজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা জানা যায়নি। জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে। বিবিসি আরো জানাচ্ছে, শুক্রবার রাতে অস্ত্রধারীদের আক্রমণের প্রায় দশ ঘণ্টা পর অভিযানটি শুরু হয়।

র‌্যাব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ভূঁইয়া রয়টার্সকে বলেছেন,‘তীব্র বন্দুকযুদ্ধ চলছে।’ পরে অবশ্য বন্ধুযুদ্ধ থেমে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার রাতের ওই ঘটনায় কমপক্ষে ২ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত এবং ৩০ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।

গুলশান হামলার কাহিনী নিয়ে আল জাজিরায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল,‘রয়টার্স যে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে তার শিরোনাম ছিল,‘Bangladesh police storm restaurant to rescue hostages। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস। ওই হামলায় ২৪ জন নিহত হয়েছে বলেও দাবি করেছে জঙ্গি গোষ্ঠীটি। তবে বাংলাদেশ পুলিশ তাদের ওই দাবি নাকচ করে দিয়েছে।

এর আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা গওহর রিজভি রয়টার্সকে বলেছেন, সঙ্কট উত্তরণে হামলাকারীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী।

এ নিয়ে ‘অভিযান শেষ, ১২ পণবন্দিকে উদ্ধার করল কম্যান্ডোরা’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে কলকাতার বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার জানাচ্ছে, গুলশানের রেস্তোরায়ঁ দখল নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শনিবার ৪৫ মিনিটের অভিযানে মোট ১২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। কূটনৈতিক জোনের উপ-কমিশনার জসিমউদ্দিন জানান, হামলাকারীদের কয়েক জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ৫ জনের দেহও উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি। আহতদের সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এ নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করেছে দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট, দ্য টেলিগ্রাফ, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ডনসহ আরো বহু আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।



মন্তব্য চালু নেই